সম্পাদকীয়

প্রভাত সঙ্গীত  ঙ্গ আলোয় ফেরার আকুতি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আজ সমাজের সর্বস্তরে দেখা দিয়েছে চরম অবক্ষয়ের অমানিশা৷ অর্থনৈতিক স্তরে চলছে চরম শোষণ ও দুর্নীতি৷ ঈশ্বর সৃষ্ট এই জগতের সম্পদ যা ঈশ্বরের সন্তান সমস্ত মানুষের মিলেমিশে খেয়ে পরে বাঁচার জন্যে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জীবনের চরিতার্থতার পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে, কিন্তু আজ সেই সম্পদ লুঠে পুটে খাচ্ছে সমাজের এক শ্রেণীর শোষকগোষ্ঠী৷ রাজনীতি – যা নাকি দেশ–সেবার প্রকৃষ্ট নীতি, তা হয়ে উঠেছে যেন তেন প্রকারেণ ক্ষমতা করায়ত্ত করার ও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকার কৌশল মাত্র৷ এখানে ‘নীতি’টা নিতান্তই গৌণ৷ শিক্ষার নামে চলেছে কেবলমাত্র অর্থ রোজগারের উপায় আয়ত্ত করার প্রশিক্ষণ, সেখানে নীতিশিক্ষা–ধ্যাত্মশিক্ কোনো নাম–ঠিকানা নেই৷ সং

শ্রাবণী পূণির্র্মর ঐতিহাসিক আহ্বান

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আগমী ৭ই আগষ্ট শ্রাবণী পূর্ণিমা, যাকে রাখীপূর্ণিমাও বলা হয়--- এর এক বিশেষ মহত্ত্ব আছে৷ কথিত আছে, এই শ্রাবণী পূর্ণিমা তিথিতে মানব সভ্যতার আদিগুরু সদাশিব আজ থেকে  ৭ হাজার বৎসর পূর্বেপ্রথম ধর্মপ্রচার শুরু করেছিলেন৷ তাছাড়া প্রাচীন কাল থেকে ভারতবর্ষে এদিনটি রাখী বন্ধন রূপেও পালিত হয়ে আসছে৷ এদিন বোনেরা ভাইয়ের হাতে রাখী পরিয়ে দেয়৷ ভাইয়েরাও বোনেদের সুরক্ষার দায়িত্ব উপলদ্ধি করেন৷ সে কারণে এই উৎসব সারা ভারতে ‘রক্ষা-বন্ধন’ উৎসব হিসেবেও পরিচিত৷

নীতি ও নেতৃত্বের সংকট

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন শুধু মোদি সরকারের আমলেই বা বলি কেন স্বাধীনতার পর থেকে অর্র্থৎ সেই গান্ধী নেহেরুর আমল থেকে বর্তমানে মোদির আমল পর্যন্ত এই ৭৫ বছর ধরে দেশীয় শাসনে ভারতের ২৭ কোটি মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পায় নি---এখন তারা ক্ষুধার শিকার৷ তারা প্রত্যহ রাতে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমোতে যায়--- ক্ষুধা নিয়ে জাগে৷

অথচ দেশের সিংহভাগ  মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধনকুবের দখল করে বসে আছে৷

দেশের বিশাল এক অংশ আজ চরম দারিদ্রের শিকার৷ দেশের অধিকাংশ ছাত্র-যুবা বেকারত্বের জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরছে৷ জীবনকে সুন্দর করে বিকাশের কথা ভাববার অবসর নেই তাদের৷  ---অন্নচিন্তা চমৎকারা !

শ্রাবণী পূর্ণিমা–আলোর পথে যাত্রা শুরু

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

‘আত্মমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ’–আত্মার মুক্তি ও জগতের কল্যাণ–এই মহান আদর্শকে সামনে রেখে আনন্দমার্গ প্রচারক সঙঘ তার শাখা–প্রশাখা ছড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বের দেশে–দেশে৷ ধর্ম ও কর্মের সমন্বয়ে এই সুমহান আদর্শকে রূপ দিতে আনন্দমার্গ গড়ে তুলেছে বিশ্বের সর্বত্র অসংখ্য আদর্শ স্কুল, শিশু সদন, ত্রাণ কেন্দ্র, সঙ্গীত শিক্ষাকেন্দ্র, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মাষ্টার ইয়ূনিট সহ বহু সেবা ও উন্নয়ন প্রকল্প৷ যাঁর আশীর্বাদ ও প্রেরণা নিয়ে আনন্দমার্গ অত্যল্পকালের মধ্যেই বিশ্ব সংঘটন রূপে আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছে তিনি হলেন সেই সংঘটনেরই জনক ও গুরুদেব শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী৷

একপেশে উন্নতি অবনতির কারণ

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মানুষের অস্তিত্ব ত্রিস্তরীয়---শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক৷ মানুষের উন্নতি মানে এই ত্রিস্তরীয় সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নতি৷ এই সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নতি যদি না থাকে তাহলে উন্নতির পরিবর্তে অবনতি হবে৷ বর্তমানে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির হাত ধরে বা আধুনিকতার ছাপ মেরে যে বিপুল উন্নতির বড়াই আমরা করি এই তথাকথিত উন্নতি যে অনেক জটিল প্রশ্ণের সম্মুখে আমাদের দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, তা আজ কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না৷ তার কারণ একটাই৷  বাড়ী, গাড়ী, রাস্তা-ঘাট, পোষাক-পরিচ্ছদ, নানান্‌ সুস্বাদু খাওয়া-দাওয়া এসবের জাঁকজমকের পাশাপাশি দুর্নীতি, যৌন কেলেঙ্কারী, মানবিকতার অভাব, শোষণ, খুন-জখম এসবও যে মহামারীর মত ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে

নেতা নির্বাচনে সচেতন হতে হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীকুল সমান দুই ভাগে বিভক্ত৷ এককচারী ও যূথবদ্ধ৷ অতি পরিচিতদের মধ্যে  ছাগল, মুরগী জাতীয় কয়েকটি প্রাণী এককচারী৷ আবার হাতী, ভেড়ার মত কিছু প্রাণী আছে তারা যূথবদ্ধ৷ এককচারী জীবেরা সাধারণতঃ আত্মস্বার্থ কেন্দ্রিক হয়৷ সব সময় নিজের স্বার্থ রক্ষার্থেই ব্যস্ত থাকে৷ অন্য কারোর দিকে ফিরেও চায় না৷ পাশে কেউ বিপদে পড়লেও তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ থাকে না৷ এই ধরণের জীবকে গৃহে পোষ মানাতে গেলেও তারা কখনোই পালক প্রভুর অনুগত হয় না৷ যেখানেই থাকুক যাই করুক,নিজের স্বার্থটাই  কেবল তার কাছে প্রাধান্য পায়৷

সংবিধানের অঙ্গীকার কবে প্রতিষ্ঠিত হবে!

১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী দেশ শাসনের জন্যে ভারতের নিজস্ব সংবিধান প্রবর্ত্তিত হয়৷ তারপর সত্তরটা বছর অতিবাহিত হয়েছে৷ আজ দেশের নাগরিককে নাগরিকত্বের প্রমাণের জন্যে লাইনে দাঁড়াতে হবে৷ সীমাহীন অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক বিভাজন ও রাজনৈতিক সংঘাতে প্রতিনিয়ত পদদলিত হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার৷ পরিতাপের বিষয় এই যে শাসক দলের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদতে এগুলি হয়ে চলেছে৷ অথচ শাসক দলেরই প্রধান দায়িত্ব সংবিধানের অঙ্গীকারগুলি পালন করা৷ মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা৷

পেট্রল ও ডিজেলের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি!

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই পেট্রল ও ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে৷ পেট্রল ও ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি মানে অন্যান্য সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের  মূল্যবৃদ্ধি ৷ কারণ তেলের ওপর নির্ভরশীল ট্রাক, বাস প্রভৃতি পরিবহন৷ ভোগ্যপণ্যের পরিবহন খরচ বাড়লে স্বাভাবিকভাবে তার দাম বাড়বে৷ এমনিতে করোনা সংক্রমণ ও লক্‌ডাউন বিধিনিষেধের কারণে বহু মানুষের আয়ের দরজা বন্ধ৷ তারপর পেট্রল ডিজেলের দাম দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাওয়া ও তার সঙ্গে তাল রেখে বাড়ছে শাক-সব্জি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম৷ সাধারণ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি রব৷

অর্থনৈতিক গণতন্ত্র ছাড়া  সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই অর্থনীতিতে আবার অশনী সংকেত৷ ২০১৮ সালেই বিশ্বের উন্নয়ন সূচকে ভারতের অবস্থান ছিল ১৩০তম স্থানে৷ ১৮৯ টি দেশের উন্নয়ন সূচক তুলনামূলকভাবে আলোচনা করতে গিয়ে এই চিত্র বেরিয়ে এসেছিল৷

অবাক হওয়ারকথা বটে! ভারতের মন্ত্রী মহোদয়রা তখন তো ভারতের উন্নয়নের ঢক্কানিনাদে তুলে দেশ মাতিয়ে তুলেছিলেন৷ দাবী করতেন, ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলেছে৷ কিন্তু নেতাদের দাবীর সঙ্গে অর্থনীতির চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন! আর একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালের ‘হ্যাপিনেস ইনডেক্স’-এর চিত্রে গোটা বিশ্বে সুখের মাপকাঠিতে ভারতেরস্থান ১৪০ নম্বরে৷

আনন্দপূর্ণিমা নবজাগরণের দিন হোক

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আগামী ২৬শে মে, বৈশাখী পূর্ণিমা, প্রাউট–প্রবক্তা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার, যিনি ধর্মগুরু মহাসম্ভূতি শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী নামে বিশ্ববাসীর কাছে সমধিক পরিচিত–তাঁর শুভ ১০০ তম আবির্ভাব তিথি৷ সারা বিশ্বের আনন্দমার্গীদের কাছে এই বৈশাখী পূর্ণিমা আনন্দপূর্ণিমা রূপে পরিচিত৷ এই পুণ্য তিথিতে মহাসমারোহে সর্বত্র মার্গগুরুদেবের ১০০ তম জন্ম জয়ন্তী পালন করা হবে৷ এ বছর শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের পক্ষ থেকে মার্গের দর্শন ও আদর্শের ব্যাপক প্রচার ও প্রসারের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে৷