সম্পাদকীয়

রাজনৈতিক ভণ্ডামী ও দ্বিচারিতা বন্ধ হোক

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ভারত এর জনগণের ভাগ্যে যে সব রাজনৈতিক দল শাসনে এসেছে তাদের অধিকাংশই সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থেই মসগুল৷ যেজন্য দেশের স্বাধীনতার প্রয়োজন ছিল জনগণের সেটা অদ্যাবধি তিলমাত্র পূরণ হয়নি৷ ফলে জনগণ গত ৭৪ বছরে দেশীয় শাসনে এ দেশের ধনী ব্যবসাদারদের শোষনের চরমভাবে শিকারই হয়ে চলেছে৷ আর দেশীয় সরকারগুলি সংবিধানের  মূল লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে সাম্প্রদায়িকতাকে  ও নানা ভেদ বিদ্বেষকে মূলধন করেই দেশ শাসনের নামে সেই দলীয় শাসনকে জিয়িয়ে রেখেছে৷ স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সরকারকে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্যদের সচেতন থাকতেই হয় সংযত ভাষা ও কিছুটা উদারতার দরকার হয় জনগণের স্বার্থরক্ষায় কিন্তু দেশের শাসকগণের তার বড়ই অভ

সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখে বলছেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সবার উন্নয়নই তাঁর তথা তাঁর পার্টির লক্ষ্য৷ এই শ্লোগান দিয়েই তিনি ক্ষমতায় এসেছেন৷  জনগণ তাঁর কথার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে যে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ ছিল জনগণ সেই অতীতের ঘটনাকে আমল দেননি৷

বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়ে প্রকৃত উন্নতি সম্ভব

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

মানুষের অস্তিত্ব ত্রিস্তরীয়---শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক৷ মানুষের উন্নতি মানে এই ত্রিস্তরীয় সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নতি৷ এই সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নতি যদি না থাকে তাহলে উন্নতির পরিবর্তে অবনতি হবে৷ বর্তমানে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির হাত ধরে বা আধুনিকতার ছাপ মেরে যে বিপুল উন্নতির বড়াই আমরা করি এই তথাকথিত উন্নতি যে অনেক জটিল প্রশ্ণের সম্মুখে আমাদের দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, তা আজ কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না৷

আবেগ উচ্ছ্বাস ও ভক্তিরসের প্লাবন বহিয়ে সমাপ্ত হলো মহাপ্রয়াণ দিবসের অখণ্ড কীর্ত্তন

মার্গগুরু শ্রীশ্রী আন্দমূর্ত্তিজীর পাঞ্চভৌতিক  দেহের ৩১তম মহাপ্রয়াণ দিবস উপলক্ষ্যে গত ২১শে অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ছয়দিনব্যাপী ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ মহামন্ত্রের অখণ্ডকীর্ত্তন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হল৷ ২১শে অক্টোবর মহাপ্রয়াণ দিবসে বিকেল ৩-৩০ ঘটিকায় মার্গগুরুদেবের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে আনন্দমার্গীরা কলকাতাস্থিত ‘পরম শ্রদ্ধেয় ‘ৰাৰা’র (শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর) স্মৃতিসৌধে এই অখণ্ডকীর্ত্তন শুরু করেন৷ কোভিড-১৯-এ সরকারী বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি কার্যকরী করার পরিপ্রেক্ষিতে সব জায়গা থেকে আনন্দমার্গীদের পক্ষে এই মহাপ্রয়াণ অনুষ্ঠানে যোগদান করা সম্ভব ছিল না৷ তাই অন-লাইনে এই সমগ্র অনুষ্ঠানটি

স্পর্শমণি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

‘‘পরিত্রানায় সাধূনাং বিনাশায় চ দুষৃকতাম্‌৷

ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে৷’’

মানবতা যখন এক অত্যন্ত বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে, ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা, বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতি অর্থনীতি রাষ্ট্রনীতি-সমাজ জীবনের সর্বস্তরে যখন গ্লানি দেখা দেয়, সর্বস্তরেই অধর্মের প্রার্দুভাব দেখা দেয়, সেই অধর্মের হাত থেকে গ্লানির হাত থেকে  পরিত্রাণ পাওয়া মানুষের সাধ্যের বাইরে, তখনই পরমপুরুষকে অবতীর্ণ হতে হয় ধরাধামে অধর্মের হাত থেকে অশুভ শক্তির হাত থেকে সমাজকে পরিত্রাণ করতে৷

গণতন্ত্রের নামে ধনিকতন্ত্র

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়তে চান৷ তিনি তাঁর এই সংকল্পের কথা দেশে বিদেশে সর্বত্র ব্যক্ত করেছেন ও বিদেশী কোম্পানীগুলিকে এদেশে ঢালাও অহ্বান জানিয়েছেন তাঁর এই সংকল্প পূরণ করতে৷ তিনি বলেছেন, ইন্টারনেটের সুবিধা আমজনতাকে পাইয়ে দেওয়া হবে৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরকারী পরিষেবাকে জনসাধারণের হাতের মুঠোয় আনবেন তিনি৷  ইন্টারনেটের মাধ্যমে উন্নত শিক্ষণ ও উন্নত চিকিৎসাকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেবার সুভাষিত  বাণী তিনি সবাইকে শুনিয়েছেন৷ বিদেশী ইলেক্ট্রনিক  কোম্পানীগুলি তাঁর এই মহৎ সংকল্পের ভূয়সী  প্রশংসা করেছেন৷

সার্থক গণতন্ত্র আজও অ-ধরা

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

বহুদলীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বিরোধী দলকে প্রতিহত করার চেষ্টা একটা রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে৷ কিন্তু সেই কৌশলে কোন হিংসার স্থান নেই৷ গণতন্ত্র সম্পর্কে প্রচলিত প্রবাদ হলো---‘‘জনগণের জন্যে, জনগণের দ্বারা, জনগণের শাসন৷ সোজা কথায় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন৷ তাই তাদের প্রধান দায়িত্ব জনসাধারণের স্বার্থ রক্ষা করা ৷ তবে এই দায়িত্ব আজীবন নয়৷ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতান্ত্রিক শাশনব্যবস্থার ভিন্ন ভিন্ন রূপ আছে৷ তবে গণতন্ত্রের মৌলনীতি একটাই রাষ্ট্রের পরিচালকদের জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হতে হবে৷ ভারতবর্ষে প্রতি পাঁচবছর অন্তর রাষ্ট্র-প

ধন বৈষম্য সমাজের এক সর্বনাশা ব্যাধি

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

কয়েক বছর আগে বিশ্ব ব্যাঙ্কের এক সমীক্ষায় বলা হয়, পৃথিবীতে আয় বৈষম্য ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ আরও বলা হয়েছে বিশ্বে দারিদ্র্য সীমারেখার নিম্নে রয়েছে ৭৬ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ৷ আজ পৃথিবীর প্রায় এক শতাংশ মানুষের কুক্ষিগত পৃথিবীর ৫০ শতাংশের বেশী সম্পদ৷ সমাজে দারিদ্র্য সীমারেখার নিম্নে যারা বসবাস করছে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি না হলেও গত দশ বছরে ভারতে কোটিপতিদের সম্পদ বেড়েছে দশ গুণ৷ এক বছরে ভারতের শীর্ষস্থানীয় পুঁজিপতিদের সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ ৫০,৪০০ কোটি টাকা৷ আর প্রতিদিনই এক-এক জনের গড়ে সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ ১.৩৮ কোটি টাকা৷ তাই দেখা যাচ্ছে পুঁজিপতিদের সম্পদ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, অথচ কোটি কোটি মানুষ

ফাঁসি অপরাধ দমনের পথ নয়

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

আর একটি নির্ভয়া কাণ্ড ঘটে গেল মহারাষ্ট্রে মুম্বাইয়ের সাকিনাকায়৷ নির্যাতিতার মৃত্যু হয় গত ১১ই সেপ্ঢেম্বর৷ যথারীতি দাবী উঠেছে অপরাধীর ফাঁসি চাই৷ কিন্তু অপরাধীর ফাঁসি দিলেই কি সমাজ অপরাধ মুক্ত হবে? এমনটাতো নয় যে আজ পর্যন্ত কোন অপরাধীর ফাঁসি হয়নে৷ এই পশ্চিমবাঙলাতেই এমন দৃষ্টান্ত আছে অপরাধীর ফাঁসি হয়েছে৷ কিন্তু তারপরেও কি অপরাধ দমন করা সম্ভব হয়েছে৷

ফাঁসি অপরাধীকে হত্যা করে, অপরাধ দমন করে না৷ যাঁরা অপরাধীর ফাঁসির দাবীতে সরব তারা অধিকাংশই প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলে এমন দাবি করে৷ অপরাধীর শাস্তিটাই তাদের কাছে বড়, সমাজের শুচিতা রক্ষার উপায়  নিয়ে ভাবার জন্যে মানসিক স্থিরতা তাদের নেই৷

অ-শান্তিনিকেতন!

আচার্য মন্ত্রসিদ্ধানন্দ অবধূত

প্রাচীন ভারতের তপোবনের অধ্যাত্ম-ভিত্তিক শিক্ষার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষার যোগসাধনের উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতী স্থাপন করে ছিলেন৷ শুরুতে তিনি এর নাম দিয়েছিলেন ব্রহ্মচর্যাশ্রম৷ প্রাচীন ভারতের মুনীঋষিদের আদর্শকে তিনি এই শিক্ষার ভিতরূপে গ্রহণ করেছিলেন৷ শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠার দিবসেই তিনি তাঁর আদর্শ পরিষ্কার ভাবে সুপরিস্ফুট করেছিলেন৷ তিনি প্রাচীন ভারতের ঋষিদের আদর্শের মূল কথাকে তুলে ধরে বলেছিলেন,‘‘তাদের বেশভূষা বিলাসিতা কিছুই ছিল না৷ অথচ বড়ো বড়ো রাজারা এসে তাঁদের কাছে মাথা নত করতেন৷...