২১শে ফেব্রুয়ারি ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ,ঝাড়খণ্ড, ত্রিপুরা, অসম সহ বাঙালীস্তানের বিভিন্ন স্থানে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ তথা ‘বাংলা ভাষা শহীদ দিবস’ পালন করা হয়৷ পশ্চিমবঙ্গের কলিকাতা, উত্তর চবিবশ পরগনা, হুগলী, হাওড়া, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার প্রভৃতি জেলার বিভিন্ন স্থানে, ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর, বোকারো ও ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা, খোয়াই সহ অন্যান্য স্থানে এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে পালন করা হয় ও ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়৷কলিকাতায় মূল অনুষ্ঠানটি শ্যামবাজারে পাঁচ মাথার মোড়ের সন্নিকটে উদযাপিত হয়৷ সন্নিহিত জেলা ও কলিকাতার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠান স্থলে এসে মিলিত হয়৷ কেন্দ্রীয় সাংঘটনিক সচিব শ্রীতপোময় বিশ্বাস, হিতাংশু ব্যানার্জী, প্রণতি পাল, স্বপন মন্ডল, স্বপন দে, জয়ন্ত দাশ, সুদীপ বিশ্বাস, সুবোধ রঞ্জন কর,শুভজিত পাল ও অন্যান্য আমরা বাঙালী নেতা নেত্রী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের সাকচী নেতাজী সুভাষ ময়দান থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে জেলা শাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে এসে উপস্থিত হয় ও জেলাশাসককে ‘আমরা বাঙালী’র দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়৷ পরবর্তী পর্যায়ে শোভাযাত্রা সাকচী গোল চক্কর চত্বরে এসে পৌঁছায় ও সেখানে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত আমরা বাঙালী সদস্য সদস্যাগণ এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন৷ আমরা বাঙালী সংঘটনের কেন্দ্রীয় সচিব শ্রী জ্যোতিবিকাশ সিনহা সহ মোহন লাল অধিকারী, সুশীল কুমার মাহাতো, আশিস নাগ চৌধুরী,নারায়ণ সেন, অঙ্গদ মাহাতো, সুনীল মাহাতো, দেবাশীষ মন্ডল,রেখা মাহাতো ও অন্যান্য নেতা নেত্রী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন৷ এছাড়াও ঝাড়খণ্ডের বোকারো শহরে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করা হয়৷ এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী মনোতোষ মন্ডল ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন৷
ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা, খোয়াই ও অন্যান্য স্থানে এই দিনটি পালিত হয়৷ এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী অশোক কুমার দাস, গৌরীশঙ্কর নন্দী, কেশব মজুমদার, রাজ্য সচিব শ্রী গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল, গৌতম ঘোষ, বিধান দাস, রামকৃষ্ণ দেবনাথ, সীমন্তি দেব, গীতাঞ্জলি দাস ও অন্যান্য নেতা নেত্রী উপস্থিত ছিলেন৷
বিভিন্ন সভায় ‘আমরা বাঙালী’র নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে এই দিনের তাৎপর্য, ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ, আদর্শ ও মাতৃভাষা বাংলার সম্মান রক্ষায় মরণপণ সংগ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন৷ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে যে বাঙালী জাতির অবদান সবচেয়ে বেশী, নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, রক্ত ঝরিয়েছেন সকলের থেকে বেশি,স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতে সেই বাঙালী, বাঙলা আর বাংলা ভাষার উপর আঘাত এসেছে সবচেয়ে বেশী--- বঞ্চনা, নির্যাতন, অবদমন চলেছে যৎপরোনাস্তি৷ এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্যে বক্তাগণ সকল বাঙালীকে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে অবতীর্ণ হবার আহ্বান জানান৷
হাওড়ায় ভাষা দিবস --- হাওড়া জেলার বাগনান রেলস্টেশনে আমরা বাঙালী জেলা কমিটির পক্ষ থেকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালন করা হয়৷ স্টেশনের সম্মুখে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন শ্রীবকুলচন্দ্র রায়, সুশান্ত শীল প্রমুখ৷