কোভিট-১৯ করোনা ভাইরাস শুধু ভারতবর্ষ নয়, সমগ্র বিশ্বের আর্থ-সামাজিক পরিবেশটাই বদলে দিয়েছে । কিন্তু এই বদল এমনটাও নয় যে, সূর্য পশ্চিমদিক থেকে উঠবে! সূর্য পূর্বদিক থেকেই উঠবে মানুষকে শুধু সেই সূর্যের আলোটাকে প্রতিটি অন্ধকার গুহা-কন্দরে প্রবাহিত করাতে হবে । মানুষকে বলতে রাষ্ট্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত মানুষদেরকে বলছি । কিন্তু কোথায় অন্ধকার গুহা আলো পড়লো? আলো পড়লো তো তাঁদের ঘরে, যাঁদের ঘরে অল্প হলেও আলো ছিল বা আছে।
আত্মনির্ভর ভারত তৈরির কারিগররা শুধু আত্মনির্ভরতার সংজ্ঞাটাকে বদলে দিয়েছেন মাত্র। কিন্তু সংজ্ঞা বদলালেই তো আর পরিস্থিতি বদলে যাবে । পরিস্থিতি ওই সূর্যের মতোই পূর্বদিক থেকেই উঠবে । সেখানে ভারত-আত্মা কতটা প্রাণ পাবে কিংবা আদৌ পাবে কিনা, সেটাই আসলপ্রশ্ণ । আত্মনির্ভর ভারত গড়ার নামে সেই প্রশ্ণ থেকে মানুষকে সরিয়ে নিতে চাইছেন আজকের শাসককুল । এমন একটি পরিস্থিতিতে যখন দেশের আপামর জনগণ করোনা নামক একটি সুক্ষ্ম অনুজীবতের ভয়ে গৃহবন্দি।
কিছু দান খয়রাতির নামে আত্মনির্ভরতার এই সোনার পাথরবাটি কেন জনগণের সামনে তুলে ধরলেন ? আসলে এর চেয়ে উপযুক্ত সময় আর তাঁরা পাবেন না । অন্ধকারের জীবেরা অন্ধকার খোঁজে, তেমনি এই শাসককুল জনগণের এই দুরাবস্থার সুযোগ খুঁজছিলেন ।
বিভিন্ন রাজ্যগুলিকে আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার নামে অর্থমন্ত্রীর মাধ্যমে চরম পঁুজিবাদী এই সরকার বকলমে একটি আর্থিক বাজেতাঁতেট পেশ করলেন । যে বাজেটে কিছু সাহায্য দেওয়ার নামে পুঁজিবাদীদের কাছে দেশের সম্পদ বিক্রির ঘোষণা । কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতির সঙ্গে এই বাজেটের পেশের কী সম্পর্ক ছিল ।
প্রাচীনকাল থেকে আজ অব্দি ভারতবর্ষ যতটা আত্মনির্ভর ছিল বা এখনো যতটা আছে তা কীসের জন্য?
না, সেটা গ্রামোন্নয়ন ভারতের জন্য অর্থাৎ কৃষি, কৃষি-কেন্দ্রিক ও কৃষি-সহায়ক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, হস্ত ও কুটির শিল্প ও খনিজ ও বনজ সম্পদ কেন্দ্রিক ভারি শিল্পের কারণে । যদিও এই শিল্পগুলির মধ্যে কোন শিল্প কাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত তার কোনো সুনির্দিষ্ট রূপ ছিল না । আমদানি বাণিজ্যের ব্যাপক নির্ভরতার আগে পর্যন্ত ভারতবর্ষ রপ্তানি বাণিজ্যে ও আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যে বেশ সামঞ্জস্য বজায় রেখে চলেছে । বহিবিশ্বে যান্ত্রিক উন্নত শুরু আগে পর্যন্ত ভারত আত্মা সেই ধারাতেই সমৃদ্ধ ছিল । পাশ্চাত্য দেশগুলির উন্নত বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির আমদানি-বাণিজ্য নির্ভরতা বাড়তে থাকায় ভারতীয় বাণিজ্যের সেই ভারসাম্য নষ্ট হতে থাকে । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যত বেশি পঁুজিবাদ ঘেঁষা সরকার এসেছে । তাঁতে এই ভারসাম্য বেশি নষ্ট হয়েছে । কংগ্রেসের নেহেরু সরকার পঁুজিবাদী হলেও তাঁর রাষ্ট্র সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকেও কিছুটা ঝঁুকে থাকতো । ইন্দিরা-রাজিবরা সেই ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করলেও দেশীয় পঁুজিবাদীদের চাপের কাছে অনেক কিছুরই ভারসাম্য নষ্ট করেছেন । বিজেপি তো চরম পঁুজিবাদীদের সরকার তাঁদের আত্মনির্ভরতার ভারত আত্মা খাঁচায় বন্দি পাখির আদর খাওয়ার মতো ।
প্রশ্ণ করবেন, কাদের খাঁচা । উত্তর, পঁুজিবাদীদের । কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, শিক্ষা,চাকরি সবই এখন পঁুজিবাদীদের হাতে । সাধারণ মানুষকে খাঁচায় বন্দি পাখির মতো আদর খেতে দেওয়ার মতো করে দান খয়রাতির আর্থিক পাক্যেজ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে । তারই পূর্বাপর ঘোষণা করে চলেছে এই সরকার ।
স্যাটেলাইট প্রযুক্তি নির্ভর বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে পঁুজিবাদীরা সাধারণ মানুষের মনন, মেধা, মগজ সব কিছুই নিজেদের কব্জায় নিয়ে নিয়েছেন । সেই প্রযুক্তি বিজ্ঞানের রঙিন খাঁচায় বন্দি পাখিদের অবস্থা । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের খাঁচার পাখি আর বনের পাখির মতো গণতন্ত্র , ভোট সবই ওই রঙিন খাঁচার সংকোচন প্রসারণ । বেরিয়ে আসার উপায় নেই । এ এক মনস্তাত্ত্বিক শাসন-শোষণ এই মনস্তাত্ত্বিক শাসন-শোষণের রূপ প্রচলিত অর্থনীতির সংজ্ঞায় নেই । ফলে মুক্তির উপায় এখনো পর্যন্ত অধরা ।
আত্মনির্ভরতা কোনো কিছুই যে আত্মনির্ভর প্রকল্প নয়, তা জেনেও উত্তরণে নতুন দিশার কথা নিয়ে প্রতিবাদ মুখ হতে পারছেন না কেউই। না রাজনীতিবিদরা, না অর্থনীতিবিদর । সবাই খাঁচার পরিধির হ্রাসবৃদ্ধি নিয়ে চিৎকার করছেন । খাঁচা ভেঙে বেরিয়ে আসার দাওয়ায় কেউ বাতলাতে পারছেন না । এমতাবস্থায় শক্তিশালী বহিঃ শত্রুর আক্রমণ অবসম্ভাবী । কিংবা বলা যেতে পারে, দেশের জনগণকে জাতীয়তাবাদী নেশার ছিলিম খায়িয়ে মোহান্ধ কলের রেখে আরও বেশি পুঁজিবাদ নির্ভরশীলতার দিকে ধাবিত করতে এটা রাষ্ট্র নেতাদের সাজানো যুদ্ধ ।
বিচিত্র কিছুই নয়! ভারতবর্ষের আত্মনির্ভরতার প্রথম ও প্রধান শর্ত ছিল কৃষি, শিল্প,ব্যবসা, বাণিজ্য, শিক্ষা, চাকরি--- এ সবের মধ্যে একটি সামঞ্জস্য গড়ে তোলা । প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সরকারি নিয়ন্ত্রণ জাতীয়করণ কিছু ক্ষেত্রে সমবায়ের মাধ্যমে, কিছু ক্ষেত্রে সরকারি করণ করে । এই সরকার হাঁটছে ঠিক তার উল্টো পথে ।
প্রথমে যদি কৃষির কথা বলি, বর্তমান প্রযুক্তি নির্ভর সময়ে কৃষি পরিচালিত হওয়া উচিত সমবায়ের মাধ্যমে । এককভাবে চাষিদের পক্ষে প্রযুক্তির ব্যবহার করে চাষবাস করা সম্ভব নয় ।এতে উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্ষকরা কোনোদিনই স্বচ্ছলতার মুখ দেখবেন না । কর্ষকেরা কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাঁরাই আবার বেকার হয়ে রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হবেন ।
উচিত ছিল কৃষিতে সমবায়ের মাধ্যমে চাষবাস চালুর ব্যবস্থা করা ।কৃষিকে শিল্পের মর্যাদা দেওয়া অর্থাৎ শিল্পজাত পণ্যের যেভাবে বাজারদর নির্র্ধরণ করার ব্যবস্থা করা । আত্মনির্ভর ভারতের সোনার পাথরবাটি ঝোলানো সরকার তা করলেন না । কী করলেন কর্র্পেরেট পঁুজিবাদীদের জন্য কৃষিক্ষেত্র উন্মুক্ত করে দিলেন । লাভহীন কৃষিক্ষেত্র নিয়ে পঁুজিপতিরা কী করবেন, তা সহজেই অনুমেয় । যে পদ্ধতি সমবায়ের মাধ্যমে করা যেত,পুঁজিপতিরা একক পঁুজির জোরে কর্ষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে তাই করবেন । আর কর্ষকরা খাঁচার পাখির মতো আদর খাবেন । তাঁদের ঘরের বেকার ছেলে মেয়েরা পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে রাজ্যে রাজ্যে কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াবেন ।
আত্মনির্ভর ভারতের নামে কর্র্পেরেট পঁুজিবাদীদেরকে পঁুজি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়ায় ভারত কতটা আত্মনির্ভর হবে?
আসলে এই সরকার চাইছেন, ভারত আত্মার প্রাণপাখি কৃষি কর্ষকদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পঁুজিবাদীদের হাতে তুলে দিতে । কেননা, বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি এখন এতটাই উন্নত কৃষিতে মানুষ ছাড়াও যন্ত্রের মাধ্যম চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব । পঁুজির অভাবে যা ভারতবর্ষের ক্ষুদ্র চাষিরা করতে পারছিলেন না । সরকার যদি সেটা করতে সাহায্য করত, তা হলে সেটা হতো প্রকৃত কর্ষক দরদী কাজ । এই সরকার কর্ষকদের আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে উন্নত প্রযুক্ত দিয়ে চাষবাসের সুবিধা না দিয়ে বছরে ছয় হাজার অনুদান দিলেন । ছয় হাজার টাকায় কি হয়ে এই টাকা আসলে দেওয়া হয়েছে মোবাইলের রিচার্জ করে অনিল আম্বানিদের জীও কে জীবন্ত রাখতে । আর কর্ষকদের জন্য কর্র্পেরেট পঁুজিবাদী থাবা পঁুজিবাদীরা জমি লিজ নিয়ে কর্ষকদেরকে আরও বেশি করে গৃহবন্দি করে রাখবেন ।পঁুজিবাদীদের হাতে কৃষি পণ্য পাবে শিল্প মূল্য ফল, ফুল, ফসল পঁুজিবাদীদের দ্বারা প্যাকেটজাত হয়ে পঁুজিবাদীদের মলে বিক্রি হবে । সাধারণ মানুষ তা সেই নির্ধারিত দামে কিনতে বাধ্য থাকবেন ।ভারত আত্মার নাম করে এই সরকার কৃষি নীতির চমক আসলে এটাই ।
দ্বিতীয়ত শিল্প ঃ শিল্প কল-কারখানায় আত্মনির্ভর হতে গেলে দরকার ছিল শিল্পের শ্রেণী বিভাগ করে কোন শিল্প কাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে তার ব্যবস্থা করা । সেক্ষেত্রে দরকার ছিল হস্ত ও কুটির শিল্প ব্যষ্টি মালিকানায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সমবায়ের হাতে আর বৃহৎ বা ভারি শিল্প যাকে কী ইন্ডাস্ট্রি Key Industry) বলে, তা থাকবে সরকারের অধীন । কেননা, কী ইন্ডাস্ট্রি অন্য সকল ইন্ডাস্ট্রিকে নিয়ন্ত্রণ করে কী ইন্ডাস্ট্রি ব্যষ্টি মালিকানায় থাকলে মাঝারি বা ক্ষুদ্র শিল্পের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে । আমাদের দেশে সেটাই ঘটে চলেছে ও বর্তমান সরকার বেসরকারিকরণ করে তাকে আরও নগ্ণ করে তুলেছে ।
এমতাবস্থায় রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ বলে কিছু থাকবে না । উৎপাদিত পণ্যের ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর কর আদায়ের মাধ্যমে কিছু রাজস্ব বৃদ্ধি ছাড়া রাষ্ট্রীয় আয় বলে কিছু হবে না লভ্যাংশ যাবে পঁুজিপতিদের পকেটে।
তাছাড়া ব্যষ্টি মালিকানায় শিল্প কল-কারখানা হলে পরিযায়ী শ্রমিক কর্মচারি সমস্যা কোনোদিনই মিটবে না । পঁুজিপতিরা নিজেদের শিল্প কল-কারখানা কখনো স্থানীয় শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগ করতে চান না । কারণ স্থানীয় শ্রমিক নিয়োগ করলে বেতন বৃদ্ধি সহ নানান অজুহাতে শ্রমিক কর্মচারিরা মালিকপক্ষকে হুমকি দিতে থাকে । তাই পঁুজিবাদীরা চিরদিন বাইরের রাজ্য বা দেশ থেকে শ্রমিক-কর্মচারি আনার পক্ষে । এই সমস্যার একমাত্র সমাধান সরকারি নিয়ন্ত্রণ । এই সরকার সে পথে না হেঁটে শিল্প কল-কারখানা পঁুজিপতিদের হাতে দিয়ে দিচ্ছেন ।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের কাঁচামালের জোগানদানকারী বৃহৎ শিল্প পঁুজিপতিদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের বাজার দর ভীষণভাবে ওঠানামা করে । বাজারের নিয়ন্ত্রণ থাকে না । ভারতবর্ষের বেশিরভাগ বৃহৎ শিল্প পুঁজিপতিদের হাতে । ফলে পণ্যের বাজার কখনো সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে না ।
ফুড প্রডাক্ট সহ ওষুধ শিল্পের মতো ভারি শিল্প পঁুজিপতিদের নিয়ন্ত্রণে থাকলে দুএকটি বাদে বেশিরভাগ কোম্পানির প্যাকেটজাত খাদ্যের বা ওষুধের গুণগত মান কতটা ঠিক থাকে তা প্রশ্ণ থেকে যায় ।
আত্মনির্ভর ভারত গড়তে চাইলে শিল্প কল-কারখানাকে সরকারি করণ করাটাই আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ছিল । সরকার তা না করে, শিল্প কল-কারখানা বেচে দিচ্ছে । এই যদি ভারতআত্মার উন্নতির চিন্তা হয়, অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করা উচিত ।
তৃতীয়ত ঃ ভারতবর্ষ বহু ভাষা, বহু ধর্মমত, বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এক মহা মিলন ক্ষেত্র । একক কোনো ধর্মমত, একক কোনো ভাষার আমদানি করে ভারত আত্মার এই শান্তি বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা । কোন্ আত্মনির্ভরতা ভারত আত্মার মূল সুর এই বহুত্বের মিলনের মধ্যে বৈচিত্র্যের মধ্যে বৈচিত্র্য প্রকৃতিরও ধর্ম ।
শাস্ত্রে বলা আছে, বৈচিত্র্যং প্রাকৃত ধর্ম । এঁরা কোনো শাস্ত্রও মানে না ।মানুষের বৈচিত্র্য ধবংস করে পঁুজিবাদীদের স্বার্থে সবকিছু এক করতে মরিয়া ।
পঁুজিবাদীরা চায় মানুষের বৈচিত্র্য ধবংস করে চাহিদা ও জোগানকে এক করে দিতে । তাতে এক রকমের পণ্যেই বিশ্ব বাজার মাৎ করা যাবে । তাতে পণ্যের উৎপাদন খরচ, বাজারজাত করণের জন্য বিজ্ঞাপন করা সহজ হবে । একই বিজ্ঞাপন সারা পৃথিবীতে বাজবে, একজন সেলিব্রেটি দিয়ে এই সুক্ষ্ম মনস্তত্ত্ব সাধারণ মানুষ কেন, তাবড় তাবড় অর্থনীতিবিদরা পর্যন্ত বুঝতে পারছেন না । তাই তাঁরাও বেসরকারি করণের পক্ষে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছেন এটা ভারত আত্মার মূল সুর নয় ।
সত্যি কথা বলতে কি, ভারত আত্মার মূল সুর বুঝে বর্তমান সময়ের কোনো প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব-এর অর্থনীতির শরণাপন্ন এই সরকার নয় । পঁুজিবাদ সাম্যবাদের বিপরীতে নোতুন কোনো প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব যে এসে গেছে সেটাই এখনো অনেকে জানেন না । বুঝুন বর্তমান সময়ের শিক্ষার কী দুরবস্থা নোতুন একটি প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব এসে গেল, অথচ তা শিক্ষার্থীরা, অর্থনীতিবিদরা জানতে পারলেন না ।
অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ নোতুন এই প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব-এর অর্থনীতির খোঁজ জানলেও পঁুজিবাদীদের ব্যাপক মানস অর্থনৈতিক কৌশলের কাছে এতটাই নত মস্তক, সে সম্পর্কে কিছু বলছেন না ।
নোতুন এই প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব যেহেতু পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার অবসান চায়,তাই রাষ্ট্র কখনোই তার প্রয়োগ চাইবে না । এ তত্ত্ব প্রকৃতই ভারত আত্মার । সুতরাং ভারত আত্মার উন্নতি চাইলে এই প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব-এর বিকল্প কিছু নেই ।এটাই নির্মলা সীতারমণদের বুঝতে হবে অমর্ত্য, অভিজিৎদের বুঝতে হবে ।
প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, একুশ শতকের এই নোতুন পৃথিবীর জন্য সামাজিক-অর্থনৈতিক নোতুন এই প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব-এর প্রবক্তা শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার । এই নিবন্ধের সমগ্র ভাবনা তাঁরই প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব-এর চিন্তা এই তত্ত্বের সঙ্গে ভারতবর্ষ তথা বিশ্বকে জুড়তে পারলে প্রকৃত ভারত আত্মার মুক্তি ঘটবে ।
- Log in to post comments