বন্ধন

লেখক
প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

কাশীর উত্তরে অযোধ্যাপ্রদেশ সহ সমস্ত ভূভাগকে নিয়ে  কোশলরাজ্য৷ এই কৌশল রাজ্যের রাজধানী ছিল শ্রাবন্তী৷ রাজা যবনাশ্বের পুত্র শ্রাবন্তই এই নগরের প্রতিষ্ঠাতা৷ হরিবংশ পুরাণে একথার উল্লেখ আছে৷ তাই এ নগরের নাম  শ্রাবন্তী৷ বৌদ্ধযুগে কোশল রাজ্যের রাজা ছিলেন প্রসেনজিৎ৷

একবার কয়েকজন ভিক্ষু (বৌদ্ধ সন্ন্যাসী) শ্রাবন্তীতে ভিক্ষা করতে বেরিয়েছেন৷ পথে দেখলেন, রাজা  প্রসেনজিতের  আদেশ বলে রাজ সৈন্যরা কিছু লোককে দড়ি আর শেকল দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছে৷ এ দৃশ্য দেখে ভিক্ষুরা  খুব মর্মাহত হলেন৷ তারা সন্ধ্যায় সঙ্ঘারামে ফিরে এসে সেই লোকগুলোর বন্দী দশা নিয়ে আলোচনা করতে লাগলেন৷

তাদের আলোচনা বুদ্ধদেব শুণতে পেয়ে বললেন, ভিক্ষুগণ, রজ্জু লৌহ ইত্যাদির বন্ধন তো অতি তুচ্ছ৷ স্ত্রীপুত্র কন্যা ধন সম্পদের প্রতি যে আসক্তির বন্ধন--- সেই বন্ধনই তো সবচেয়ে কঠিন৷ সেই মায়ার বন্ধন শরীরকে তেমন প্রভাবিত না করলেও মানসিক সত্তাকে পুরোপুরি প্রবৃত্তিমুখী করে রাখে৷ এ বন্ধন ছিন্ন করা দুরূহকর্ম৷ সাধকগণ এ বন্ধনকে মোচন করেই মুক্তির অপার আনন্দ লাভ করেন৷