গত ১৫থেকে ১৯শে ডিসেম্বর সাঁইথিয়া আনন্দমার্গ স্কুলে পাঁচদিনের প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হয়৷ এই পত্রিকার সংবাদ অনুসরণ করে বলছি---‘‘আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বর্তমান ঘূণধরা সমাজের সর্বস্তরে যে ব্যাপক দুর্নীতি অনাচার ও ব্যাভিচারে ভরে গেছে৷ তার কারণ বিশ্লেষণ করে বলেন---ভারতবর্ষে সম্পদের অভাব নেই৷ যোগ্য নেতৃত্বের অভাবেই আজ দেশের এই করুণ অবস্থা৷’’ ভারতবর্ষে সম্পদের অভাব নেই অথচ দেশের মানুষ দুবেলা পেট পুরে খেতে পায়না৷ ‘‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা গরিবের পেটে ক্ষুধার খরা৷’’ ভারত সম্পদশালী দেশ অথচ ভারতের মানুষ গরিব৷ কথাটা স্ববিরোধী হলেও তা বাস্তব সত্য৷ কারণ প্রসূনানন্দজীর ভাষায় আদর্শ নেতৃত্বের অভাব৷ এছাড়া প্রাউটের পঞ্চমূল সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাগতিক সম্পদের যুক্তিসঙ্গত বন্টন--- তা হচ্ছে না৷ প্রাউটের সিদ্ধান্ত---‘‘কোন ব্যষ্টিই সামবায়িক সংস্থার সুস্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া ভৌতিক সম্পদ সঞ্চয় করতে পারে না৷’’
এই নীতি পালিত না হওয়ার জন্যই ২০২০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে একশো কোটি ডলারেরও বেশী সম্পদের মালিকের সংখ্যা ষাট শতাংশের ও বেশি বেড়ে গেছে৷ অক্সফ্যামের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এ খবর পাওয়া যায়৷
ভারতের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় ব্যয়বহুল নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য এম.এল.এ, এম.পি.দের পুঁজিপতিদের দোর গোড়ায় কড়া নাড়তে হয়, হাতপাততে হয়৷ ফলতঃ জনপ্রতিনিধিদের তথা দলের টিকি বাঁধা থাকে পুঁজিপতিদের হাতে৷ তাই পুঁজিপতিদের অঙ্গুলি-হেলনে তাদের চলতে হয়৷ একটি উদাহরণ---২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার কর্র্পেরেট করের পরিমান বহুলাংশে কমিয়ে দেয়৷ তার ফলে ভারতে বাজেটে যে পরিমান রাজস্ব লোকসান হয়েছিল তা দেশের স্বাস্থ্য বাজেটের অর্ধেক৷ মোটকথা, ভারতের গণতন্ত্র হচ্ছে ছদ্মবেশী ধনতন্ত্র৷
এবার আসা যাক প্রসূনানন্দজীর মন্তব্যের বাস্তবতা বিষয়ে৷ উনি যথার্থই বলেছেন, ভারতবর্ষে সম্পদের অভাব নেই৷’’ বিভিন্ন প্রকার খাদ্যশস্যের মধ্যে ধান বা চাল অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য৷ পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রধান খাদ্য চাল বা ধান৷ সেই ধান উৎপাদনে চীনের পরেই ভারতের স্থান দ্বিতীয়৷ (ক্রমশঃ)
- Log in to post comments