এক দেশ এক নির্বাচন —যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানবে

লেখক
পত্রিকা প্রিতিনিধি

-- আগামী লোকসভা অধিবেশনেই এক দেশ এক নির্বাচন বিষয়ে আলোচনা হতে পারে৷ হিন্দুত্বের ধবজাধারীরা হয়তো ভাবছেন---একবার একদেশ এক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে পারলে হিন্দু রাষ্ট্র ঘটনে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া যাবে৷ বাস্তবে কিন্তু বিপরীতটাও হতে পারে৷ প্রবীণ প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রীপ্রভাত খাঁ শ্রীরামপুরে এক আলোচনায় বলেন---সরকারের ভিমরতি ধরেছে৷ দেশের সামনে অনেক সমস্যা---খাদ্যপণ্যের বাজারদর গৃহস্থের নাগালের বাইরে৷ আর্থিক সংস্থাগুলি জানাচ্ছে বিশেষ করে শহর ও শহরতলিতে খাদ্যপণের বিক্রি কমেছে৷ এরসঙ্গে রয়েছে নেট দুনিয়ার প্রভাবে সামাজিক অবক্ষয়, ছাত্র-যুব সমাজ বিপথগামী, দেশ দুর্নীতিতে ভরে গেছে, সরকারের এসব নিয়ে কোন চিন্তা ভাবনা নেই৷ সরকার লাফাচ্ছে হিন্দুত্ব নিয়ে৷ অথচ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিল দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, বছরে দু-কোটি চাকরী---সব প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী ভুলে গেছেন৷

শ্রীখাঁ বলেন স্বাধীনতার প্রথম দশকে দু-তিনটে নির্বাচন গোটা দেশে একসঙ্গে হয়েছিল পরবর্ত্তীতে কিছু কিছু রাজ্য সরকার অসময়ে পড়ে যাওয়ায় আর একসঙ্গে নির্বাচন হওয়া সম্ভব হয়নি৷ স্বাধীনতার পরও ১০-১৫ বছর ব্রিটিশ বিরোধী সেন্টিমেন্টের একটা প্রভাব ছিল৷ আজ সে সেন্টিমেন্টও নেই, স্বাধীনতার সেই উচ্ছ্বাসও নেই৷ কোন একটি ধর্মমতের ভাবাবেগে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে গেলে চরম মুর্খামী হবে৷ মনে রাখতে হবে ভারতবর্ষ নানা ভাষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতির একটি দেশ৷ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর আহার পোষাক-পরিচ্ছদ এমন কি নৃতাত্ত্বিক পরিচয়েও রয়েছে ভিন্নতা৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয় ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’৷ তাই নানা ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতির মধ্যে সমন্বয় স্থাপন করে সংহতির পথ খুঁজতে হবে৷

আজ এক দেশ এক নির্বাচনে নানা সমস্যার সৃষ্টি করবে৷ প্রথমত বেশ কিছু রাজ্যে নির্বাচিত সরকারকে ভেঙে দিতে হবে মেয়াদ ফুরাবার অনেক আগে৷ তাছাড়া এক নির্বাচনের পরেও বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় মেয়াদ ফুরাবার আগেই কোন কোন রাজ্যে জোট সরকার ভেঙে যেতে পারে৷ তাই এক দেশ এক নির্বাচন অনেক জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে৷ যা ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের কাঠামোয় আঘাত হানতে পারে৷ তাই এই ধরণের বিপদজ্জনক পথে পা বাড়াবার আগে সরকারকে ভেবে দেখতে হবে৷