মনে পড়ে ২০০১ সালে সাংহাই শহরে এক আন্তর্জাাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়৷ সেই সম্মেলনে রাশিয়া, চীন, কিরগিজ রিপাবলিক, কাজাকাস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান-এর প্রেসিডেণ্টরা মিলিত হয়ে সাংহাই কোপারেশন অর্র্গনাইজেশন (এস.সি.ও) স্থাপন করেন৷ গত ৯ই জুন এই এস.সি.ও.-র বার্ষিক সম্মেলন হয় কুইংদাও নামক চীনের বন্দর শহরে৷ এই বন্দর শহরে চীনের প্রেসিডেন্ট মাননীয় জিংপিং-এর আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন৷ এখানে পৃথক ভাবে শ্রী মোদি ও জিংপিং-এর মধ্যে এক গুরত্বপূর্ণ আলোচনা হয়৷ সেই আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পায় সন্ত্রাস মোকাবিলা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াই -এর আহ্বান৷ প্রকৃতপক্ষে এশিয়ার দুই বৃহৎ রাষ্ট্র নিজেদের সম্পর্ক কে মজবুত করতেই মিলিত হন৷
এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এসসিও দেশগুলির কয়েকটি দেশ- এর সঙ্গে আলোচনা করেন৷ ভারতও এসসিও-এর সদস্য হয়েছে৷ পাকিস্তানও এর সদ্য সদস্য হয়েছে৷ মোদি এই প্রথম সম্মেলনে যোগ দিলেন৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী এস.সি.ও-এর জেনারেল সেক্রেটারী আলিমঙ রসিদদের সঙ্গে আলোচনা করেন৷ তিনি (রসিদ) বলেন এস.সি.ও-র সদর দফতরে আগামী ২১শে জুন আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালন করবেন৷ এসসিও-র সদস্যভুক্ত দেশগুলিতে সংঘটনে পৃথিবীর ৪২ শতাংশ মানুষ বাস করেন৷
সম্মেলনে মিঃ জিংপিং বলেন যে, ভারত ও পাকিস্তান সদস্য হওয়াতে সংঘটনটি আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে৷
তিনি ভারতের প্রধামমন্ত্রী শ্রী মোদিজীকে ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট সামনুন হুসেনকে স্বাগত জানান৷ ভারত ও পাকিস্তানের দুই নেতা সম্মেলনে যোগদান করে একটা আশার প্রদীপ জ্বেলেছেন বলে অনেকেই মনে করছেন৷ এটা এক ঐতিহাসিক ঘটনা৷ শ্রী মোদী বলেন, ঠান্ডা যুদ্ধের মানসিকতাকে বর্জন করতে হবে৷ সমবেতভাবে সবার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে৷ তিনি স্বচ্ছ বিশ্ব বাণিজ্য নীতির বহাল করার কথা বলেন৷ নিয়মমাফিক বহুমুখী বাণিজ্যনীতিকেও গ্রহণ করার আহ্বান জানান চীনের প্রেসিডেন্ট৷ অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন ও আঞ্চলিক অখন্ডতা আমাদের যুগের অন্যতম একটা ট্রেন্ড বললেন চীনের প্রেসিডেন্ট৷
তবে অনেক বছর আগে ভারতই প্রতিবেশী দেশগুলিকে নিয়ে সার্ক সংঘটন তৈরী করেছে৷ সেই সার্কের সদস্য পাকিস্তান৷ অথচ সেই দেশ বার বার ভারতের ওপর হামলা চালাচ্ছে ও সার্কের মর্র্যদা রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে৷ সীমান্তের অনুপ্রবেশ করাণোটাই হলো পাকিস্তানের প্রাত্যহিক একটা রুটিন৷ প্রতিবেশীর ক্ষতিসাধন তাদের লক্ষ্য৷
আজ এস.সি.ও সদস্য ভারত হয়েছে৷ মনে পড়ে বান্দুং সম্মেলনে চীন মাও সে তুং-এর আমলে ভারতের সঙ্গে এক চুক্তি করেছিল৷ নেহেরু শ্লোগান দেন--- হিন্দি চিনি ভাই ভাই৷ কিন্তু ১৯৬২তে নেহেরু আমলে চীনের ভারত আক্রমণ প্রমাণ করে যে, এই শ্লোগানটি কতটা নিরর্থক ছিল৷
তবে বর্তমাােন ভারতের জনতা আশা করে জিংপিং -এর আমলে তেমন কিছু হবে না৷ কারণ বহু চেষ্টা চরিত্র করে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন৷ মহান ভারতের মহান আদর্শের কথা ,ন্যায় নীতির কথা তাঁর যেন স্মরণে থাকে৷
চীন যে হিমালয়ের দক্ষিণের অংশ ভারতের নয় বলে দাবী করে আসছে সেটা এক ধরণের গোঁয়ার্তুমি কারণ হিমালয়ের দক্ষিণদিকের যেটা ঢালু এলাকা তা চীন দাবী করতে পারে না৷ আর কৈলাশও হলও হিন্দু তীর্থক্ষেত্র , মানস সরোবর হতে উদ্ভূত ব্রহ্মপুত্র---যা ভারতের পূর্র্বঞ্চলের প্রাণ তাকে রুদ্ধ করে দেওয়াটা অনৈতিক ও অমানবিক৷
মনে রাখা দরকার ঘর দেয়া পোড়া গোরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই আঁৎকে ওঠে৷ এটা যেন এসসিও সদস্যদের ভাগ্যে না জোটে৷
- Log in to post comments