প্রবন্ধ

ওরা দু’পায়ে  দলে  মরণ শঙ্কারে

মন্ত্র আনন্দ

আবার সেই এপ্রিল ! চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহ!!  জালালাবাদের এই যুদ্ধ হয়েছিল ১৮ই এপ্রিল ১৯৩০৷ বছর ঘুরতেই  সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশের  ওপর আবার আঘাত৷ ৭ই এপ্রিল ১৯৩১, মেদিনীপুরের অত্যাচারী  জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেমস্ পেডি নিহত হয়৷  সাম্রাজ্যবাদী শাসকের  অত্যাচার  যত বাড়ে বাঙলার দামাল ছেলেদের  স্বাধীনতার  বেদীমূলে  জীবন উৎসর্গ করার লাইনটাও তত  দীর্ঘ  হয়৷  আর এপ্রিল-টাই  যেন অকুতোভয়  বিপ্লবীদের বড় পছন্দের মাস ! দুষ্টু ছেলেকে শান্ত করতে  ব্রিটিশ রমনী  গাইতো  ঘুমপাড়ানি গান---‘বেবি, স্লিপ অন, অ্যানাদার  এপ্রিল  ইজ কামিং!’

বিজন সেতুর পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে

আচার্য ত্র্যাম্বকেশ্বরানন্দ অবধূত

১৯৮২ সালের ৩০শে এপ্রিল ভারতের সংস্কৃতির  পীঠস্থানরূপে  পরিচিত কলকাতার কসবা এলাকায়  বিজন সেতুর  ওপরে  তলায় ও  অনতিদূরে বুন্দেল গেটে একই সঙ্গে ৩জায়গায় কলকাতার  আনন্দমার্গের সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনীদের ওপর নৃশংসভাবে আক্রমণ  চালানো হয়৷  এতে ১৬জন সন্ন্যাসী ও ১ জন সন্ন্যাসিনীকে একদল গুন্ডাবাহিনী পৈশাচিকভাবে হত্যা করে৷

কে বা কারা ওই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল? ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ  করে সেই প্রশ্ণের উত্তর দিয়ে এই নিবন্ধটি লিখেছিলেন  আচার্য ত্র্যম্বকেশ্বরানন্দ অবধূত৷ তিনি এখন আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু তাঁর এই তথ্য সমৃদ্ধি  বিশ্লেষণাত্মক নিবন্ধটি পাঠকদের সামনে তুলে ধরছি৷

শৈব বাংলায় বিকৃত সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে

মানস দেববাংলার কৃষ্টি সভ্যতা সংস্কৃতি আজ চরম সংকটের সম্মুখে৷ বাংলা সালের শেষ মাসের শেষ দিন৷ বছরের এই সময়টা বাংলা উত্তাল থাকে শিবের গাজনে৷ গর্জন শব্দ থেকে গাজন শব্দটা এসেছে৷ বছরের এই সময়টা বাঙলার সাধারণ মানুষ চৈত্র গাজনে মেতে থাকে, কিন্তু এবার বাংলা সালের শেষ দিন বিভিন্নস্থানে অস্ত্রহাতে ডিজে আর রাম রাম (বিকৃত হয়ে কানে বাজছিল ভাম ভাম) চিৎকারে যে লুম্পেন নাচ চলল তা একথায় বলা যায়, বাংলা ভাষা সংস্কৃতির উপর গণধর্ষণ৷ অবাক লাগল যারা এই নৃত্য করল তারা অধিকাংশই ভিনরাজ্যের,দাঁড়িয়ে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করল মূলতঃ বাংলা ভাষী মানুষ৷

বাতাসে বিষ

মনোজ কুমার সরকার

দূষণনগরী কলকাতা---দিনে ২০টা সিগারেটের বিষ ঢুকছে  প্রতিটি  নাগরিকের ফুসফুসে৷ দূষণের  চাদরে  ঢেকে  গিয়েছে  কলকাতার আকাশ বাতাস৷ পরিস্থিতি এতটাই  বিপজ্জনক যে, শহরে শ্বাস নেওয়া মানেই দিনে  গড়ে ১৮ থেকে ২০টা সিগারেট খাওয়ার সমান বিষ আমাদের  শরীরে ঢুকে যাচ্ছে৷ অর্থাৎ সিগারেট থেকে  দূরে  থেকেও  বা বাস্তবে  সিগারেট না খেয়েও আপনার অজান্তে ফুসফুসে ঢুকে যাচ্ছে  বিষাক্ত বাতাস--- যা আপনার  শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর৷ গত ডিসেম্বরের (২০১৮) শুরুতে  কলকাতার  বাতাসে দূষণের  মাত্রা বাড়তে  শুরু করেছিল৷ ডিসেম্বরের প্রথম  সপ্তাহান্তে  দূষণের  পরিমান  অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছিল যখন বাতাসে ভাসমান  ধ

নির্বাচনে দলগুলো নিজেদের লক্ষ্য ও পরিকল্পনার কথা বলুক, ব্যষ্টিকেন্দ্রিক নোঙরা খেউড় বন্ধ করুক

প্রভাত খাঁ

ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের সতেরতম লোকসভা নির্বাচন চলেছে৷ কোন কোন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনও এই সঙ্গে হয়ে যাবে৷ এবারে নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে হয় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ দেখা যাক কী হয়! এ.ড়িআর.

গণতন্ত্র , নির্বাচন ও নৈতিকতা

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

ভারতবর্ষকে বলা হয় বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক তথা  প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র৷ আমাদের দেশের নেতানেত্রীগণ উঠতে-বসতে কথায় কথায়  ভারতীয় গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা, গণতন্ত্রের মান মর্যাদার কথা  বলেন৷ কিন্তু কোন নেতা বা নেত্রী  বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন যে  তাঁর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি সত্যিকারের সম্মান রয়েছে কিংবা  তিনি গণতান্ত্রিক প্রথা পদ্ধতিকে আন্তরিকভাবে মেনে চলতে  সদা তৎপর!

লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে জনসেবার  ভাবনার দারুণ  অভাব, কেবল দলীয় স্বার্থে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দান

প্রভাত খাঁ

রাজনৈতিক দলগুলির যে সকল নির্বাচিত প্রতিনিধি লোকসভায়  বর্তমানে আছেন, তাঁদের মধ্যে যাঁরা পুনরায়  নির্বাচনে  দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের যেটা প্রধান কর্তব্য তা হ’ল, তাঁরা গত  ৫ বছরে কী কী কাজ করেছেন, তার হিসেব দেওয়া ও জয়লাভ করলে কী কী কাজ করবেন তা জানানো৷ নূতন যাঁরা দাঁড়াচ্ছেন, তাঁরাও নির্বাচিত হলে কী কী কাজ করবেন তা  জানাতে হবে৷ কিন্তু এই জিনিসটা কেউ করছেন না৷ অথচ নির্বাচনী  প্রচারে  গিয়ে  এইটাই জানানো তাঁদের  প্রধান কর্তব্য৷ আর তা না করে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বড়ো বড়ো  মাঠ ঘেরা হচ্ছে আর দলের  নেতা-নেত্রীগণ হাজির হয়ে বিরোধী দলের ও বিরোধী দলের প্রার্থীদের আদ্যশ্রাদ্ধ করছেন৷ জনগণের  সমস্যার কী সমাধান  ক

বাংলা নববর্ষে বাঙালীর সংকল্প

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

পা-পা ক’রে বাংলা নববর্ষ অর্র্থৎ ১লা বৈশাখ এগিয়ে এলো---বাঙালীও পেরিয়ে গেল আর একটা বছর৷ কালের নিয়মেই মাসের পর মাস ক্যালেণ্ডারের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে বঙ্গ জীবনে চৈত্রের চিতভস্ম উড়িয়ে কালবৈশাখীর তাণ্ডব যেন শুণিয়ে যায় রুদ্র বৈশাখের আগমন বার্র্ত৷ আর বাঙালী তখন গা-ঝাড়া দিয়ে গেয়ে ওঠে-‘‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’’৷ পাড়ায় পাড়ায়, ক্লাবে ক্লাবে নোতুন বছরকে বরণ করার সাড়ম্বর প্রস্তুতি৷ টেলিবিশন, রেডিওয়, বর্ষবরণের জমকালো অনুষ্ঠান, সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা, গল্পকথা, বৈঠকী আড্ডার বিপুল আয়োজন৷ এই দিনটাতে বাঙালী অন্ততঃ মনে- প্রাণে, সাজে-পোশাকে, চলনে-বলনে, আচার-আচারণে বাঙালী হয়ে ওঠার চেষ্টা করে৷ সকালে উঠেই স্নান সেরে

শোষণমুক্ত বিশ্ব  কোন পথে?

মন্ত্র আনন্দ

আমার কিছু শুভানুধ্যায়ী আমাকে সঙ্কীর্ণ বাঙালীয়ানা ছেড়ে ভারতীয় হবার পরামর্শ দিয়েছেন৷ আমি রাজি, কিন্তু কতকগুলি কিন্তু   আছে, তার সঠিক জবাব পেলে তবেই৷ ভারতে থেকে বাঙালী বলাটা সঙ্কীর্ণ হলে, পৃথিবীতে থেকে ভারতীয় বলাটা কি আর একটু বড় সঙ্কীর্ণতা নয়? আবার সৌরমণ্ডলের মধ্যে থেকে শুধু পৃথিবীর কথা ভাবা আর একটু বড় সঙ্কীর্ণতা৷ আবার সৌরমণ্ডল লাখ লাখ সৌরমণ্ডলের একটি৷ তাই সব সঙ্কীর্ণতা ছেড়ে আমাদের মহাবিশ্বের নাগরিক হতে হবে৷ তখন আমার শুভানুধ্যায়ী বন্ধুদেরও হিন্দি হিন্দু হিন্দুস্থান বলা ছাড়তে হবে, কি রাজী?