স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

স্নায়ুরোগ–মস্তিষ্ক্ বিকৃতি–স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি–মানসিক রোগ

গুড়ুচি–গুলঞ্চ

Tinospora cordifolia  Miersঃ

পরিচয় ঃ যে আয়ুর্বেদীয় ওষুধটির নাম গুড়ুচি তাও মুথা বা কন্দের সাহায্যে চাষ করা হয়৷ তাই তাকে গুলঞ্চকন্দ বা গুড়ুচিকন্দ বলা হয়৷ কথ্য বাংলায় গুড়ুচি শব্দের ব্যবহার কম, গুলঞ্চ শব্দের ব্যবহার বেশী৷ হিন্দীতে গুড়ুচী বা গুরুচি দু’টি শব্দই চলে৷

স্নায়ুরোগ–মস্তিষ্ক্ বিকৃতি–স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি–মানসিক রোগ

প্রাকৃতিক সুগন্ধীর স্নায়ু ও মনের ওপর হিতকর প্রভাব ঃ

কেয়া–(Pandanus fascicularis Lam.)ঃ

পরিচয় ও প্রজাতি ঃ কেত + কন = কেতক (কেতক>কে > কেআ> কেয়া)৷ কেয়াফুল গ্রীষ্মপ্রধান দেশে বনেজঙ্গলে নদীর ধারে স্বাভাবিক নিয়মে জন্মে থাকে৷ এমনকি রাজস্থানের মরুভূমিতেও আমি কেয়ার গাছ জন্মাতে দেখেছি৷ দেখেছি  হিমালয়ের  কিছু ঊর্ধ্ব  দেশেও৷ দেখেছি  তামিলনাড়ুর  তরঙ্গায়িত রক্ত মৃত্তিকায়, কোঙ্কণ উপকূলের লবণাক্ত সমুদ্র বিধৌত এলাকায়, দক্ষিণ সুন্দরবনের কুম্ভীর শাসিত খাড়ি এলাকায়৷ অতি বৃহৎ অর্থাৎ ৩০–৩৫ ফুট থেকে ছয়–সাত ইঞ্চি পর্যন্ত অজস্র প্রকারের কেয়ার প্রজাতি রয়েছে৷

চক্ষুরোগে পদ্মমধু

পদ্মফুলের শোভা ও সৌন্দর্য্যে ও এর গন্ধে মউমাছি, ভ্রমরা, কীটপতঙ্গেরা আকৃষ্ট হয়৷ অন্যান্য পদ্মের তুলনায় শ্বেতপদ্মের গন্ধ বেশী৷ পদ্মের মধু (বিশেষ করে শ্বেতপদ্মের মধু) সর্ববিধ চক্ষুরোগের মহৌষধ বিশেষ করে চোখের মণি সংক্রান্ত রোগে৷ বাংলায় এই পদ্মমধু নিয়ে চর্চা হলে ভাল হয়৷ চক্ষুরোগে গোলাপ জলের ব্যবহার হিতকর৷ এছাড়া ফুলকপি ও গাজর চক্ষুরোগে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে৷

পদ্মের পরাগ সর্পবিষের প্রতিষেধক

খাদ্যরস

খাদ্যরস সাধারণতঃ ছয় প্রকারের৷ এই ষড়রস হচ্ছে–তিক্ত, কটু, কষায়, লবণ, অম্ল ও মধুর৷ তন্ত্র–ভারতীয় ভেষজবিজ্ঞান এই হিসাবকেই অনুসরণ করে৷ প্রথম পাতে খেতে হয় তিক্ত (যেমন পলতা, শুক্তো, নিম–বেগুন, শিউলি পাতার ঝোল প্রভৃতি)৷ দ্বিতীয় পাতে খেতে হয় কটু অর্থাৎ ঝাল (যেমন একটু বেশী লঙ্কা বা গোলমরিচ বা পিপুল দিয়ে তৈরী রান্না–আলু–মরিচ, নিরামিষ ঝাল, ক্ষড়ির ঝাল)৷ তৃতীয় পাতে খেতে হয় কষায় জিনিস (যেমন ডুমুর, মোচা, থোড়, কাঁচকলা প্রভৃতি)৷ চতুর্থ পাতে খেতে হয় লবণযুক্ত জিনিস (যেমন অচার, পাঁপড়, নোনতা পোলাও, নিমকি, সিঙ্গাড়া প্রভৃতি)৷ পঞ্চম স্তরে খেতে হয় অম্লরস যুক্ত খাদ্য (অম্বল, চাটনি, টক, তেঁতুল, আমড়া, জলপাই, করমচা, কাম

কর্মে উৎসাহহীনতা দূর করতে আদা

যাঁরা কোন কর্মে উৎসাহ পান না, যাঁরা দীর্ঘসূত্রী বা অলস, তাঁরা গুড়–ছোলাভিজে–আদা একসঙ্গে কিছুদিন খেলে কর্মোদ্যম ফিরে পাবেন৷ মুড়িতে যে পেট–ফাঁপার দোষ আছে, আদার সঙ্গে মুড়ি খেলে সে দোষটা থাকে না৷ তাই যেখানে জলখাবারে মুড়ির প্রচলন, সেখানে উচিত মুড়ির সঙ্গে দু’–চারটে আদা–কুচি খেয়ে নেওয়া৷

‘‘মুড়ির সঙ্গে নারকোল কুরো আর আদা কুচি

গপাগপ খাবে দাদা ফেলে দিয়ে লুচি৷’’

 (‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’)

উচ্ছের উপকারিতা

পরিচিতি ও প্রজাতি ঃ উৎস - কন্ + টা = উৎসিকা৷ যে তরকারীটি খেলে শরীরের বিভিন্ন উৎস থেকে লালা উৎসারিত হয়ে খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে তাই–ই উৎসিকা৷ উৎসিকা>উচ্ছিআ>উচ্৷ সে জন্যে উচ্ছে প্রথম পাতে খেতে হয়৷ আদিম অবস্থায় বা বন্য অবস্থায় উচ্ছে বাংলার পথে–ঘাটে এখনও জন্মায়৷ এই বুনো উচ্ছেগুলি আকারে খুব ছোট, অতিমাত্রায় তিক্ত ও ঔষধীয় গুণ এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী৷ দ্বিতীয় ধরনের উচ্ছে হ’ল চাষের উচ্ছে৷ বুনো উচ্ছেকে চর্চার দ্বারা উন্নীত করে চাষের উচ্ছের সৃষ্টি হয়েছিল৷ এই উচ্ছে আকারে কিছুটা বড়৷ তিক্ততা বুনো উচ্ছের চেয়ে কিছুটা কম৷ উত্তর ভারতে এই চাষের উচ্ছেকে বলা হয় ‘করেলী’৷ এই চাষের উচ্ছেকে

প্রাচীন ভারতে শল্য–চিকিৎসা, বিষ–চিকিৎসা, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার উদ্ভব ও বিকাশ

এবার আমি মহাভারতের যুগের চিকিৎসা–পদ্ধতি সম্বন্ধে কিছু বলব৷ আয়ুর্বেদের মতে যখনই শরীরে বায়ু কিংবা পিত্ত কিংবা কফের বৃদ্ধি বা স্বল্পতা ঘটে তখনই দেহের সাম্যাবস্থা নষ্ট হয়ে রোগ দেখা দেয়৷ এই সাম্যাবস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্যেই ওষুধের প্রয়োজন হয়৷ বায়ুর স্বল্পতা ঘটলে ওষুধ দিয়ে তাকে বাড়াতে হয়৷ পিত্তের বেলায়ও একই নিয়ম৷ আয়ুর্বেদের এটাই মত৷ একই পর্যায়ভুক্ত ইউনানি চিকিৎসা পদ্ধতি অনুযায়ী চারটা ধাতুর ওপর পরীক্ষা চালানো হয়–বায়ু, পিত্ত, কফ, ও রক্ত৷ এই দু’য়ের মধ্যে তফাৎটা হ’ল এই যে ইউনানি পদ্ধতিতে একটা অধিক ধাতুকে (রক্ত) ধরে নেওয়া হয়েছে৷ বাকি তিনটি ধাতু উভয় পদ্ধতিতেই সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ৷ উভয় পদ্ধতিতেই স্থূ

আদা

পরিচয় ও প্রজাতি ঃ সংস্কৃত ‘আর্দ্রক’ থেকে বাংলা ‘আদা’ শব্দটি এসেছে৷ আদা শরীরকে ভিজিয়ে দেয়, স্নিগ্ধ রাখে, নিজেও ভিজে ভিজে–স্যাঁৎসেতে৷ তাই সংসৃক্তে নাম আর্দ্রক৷ (আর্দ্রক>আদ্দ>আদ্)৷ বিহারে ও উত্তরপ্রদেশের পূর্বাংশে বলা হয় ‘আদী’৷ আদাকে উর্দূ–হিন্দী–হিন্দোস্তান্ ‘আদরক’ বলা হয় যা সংস্কৃত আর্দ্রক শব্দ থেকে এসেছে৷