জয় শ্রীরাম উদ্যোগে নির্মলা সীতারমন জপে হরি হরি, মোদী জপে হর হর

লেখক
কৃষ্ণমোহনদেব

পূর্ব প্রকাশিতের পর,

মুঘলযুগের অবসানের সঙ্গে সঙ্গে এল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শোষণ৷ ক্লাইভ নিজে মীরজাফরের কাছ থেকে বাৎসরিক তিন লক্ষ টাকার জায়গীর ছাড়া  ২৩ লক্ষ টাকা নগদ নিয়ে ছিলেন৷ কোম্পানী ও কর্মচারী নিয়েছিল তিন কোটি টাকা৷ এছাড়া দেশীয় রাজন্যবর্গের প্রাসাদ সম্পদ লুঠ করেছিল৷

‘‘সাম্রাজ্যবাদী শোষণের পরিপূরক হলো রাজনৈতিক শোষন৷ ব্রিটিশের রাজনৈতিক শোষণ শুরু হয় বাঙলার বৃহত্তম সীমাকে টুকরো বিচ্ছিন্ন করে’ পাশ্ববর্তী অঞ্চলগুলির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়ে বাঙালী জনগোষ্ঠীর মূল সংখ্যককে কমিয়ে ফেলার মধ্যে দিয়ে৷ যে অঞ্চলগুলি বিচ্ছিন্ন করে সংলগ্ণ রাজ্যগুলির সঙ্গে যুক্ত করা হল, সেই অঞ্চলের জাতীয় সম্পদগুলির অধিকার থেকেও বাঙলার জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করা হয়৷ ওইসব অঞ্চলের বাঙালীরা কয়েক পুরুষ পরেই অবাঙালী বলে বাঙলার মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল৷ বাঙলার অর্থনৈতিক শোষণকে চিরস্থায়ী করতে ব্রিটিশরা রাজনৈতিক অত্যাচারের পন্থা নিয়েছিল৷’’ ব্রিটিশরা তাদের এই ‘‘ডিভাইড এণ্ড রুল’’ পলিসি ভারতের অন্য কোন ভূখণ্ডে প্রয়োগ করেনি৷ বাঙলার মানুষ ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত ব্যষ্টিদের স্বেচ্ছাচারিতায় অভ্যস্থ ছিল৷ তাই ব্রিটিশরা অমন ধরনের ব্যবস্থাতে বাঙলার ব্যবসা-বাণিজ্য, রুজি-রোজগার ও জীবনধারণকে রুদ্ধ করে দিয়েছিল৷ এর ফলে হয়েছিল ছিয়াত্তরের মন্বন্তর৷ যাতে বাঙলার শিল্পী কারিগর ও কর্ষক মিলে প্রায় এক কোটি লোক ধবংস হয়ে গিয়েছিল৷ ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের ২০ বছরের মধ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসক তার রাজনৈতিক শক্তি প্রয়োগ করে বাঙলার তুলা, রেশন, বস্ত্র বয়ন, চীনা, লবন লোহার যন্ত্রপাতি রঙ জাহাজ শিল্প সব কিছুকে ধবংস করেছিল৷ এইভাবে বিখ্যাত শিল্পনগরী ঢাকা, মুর্শিদাবাদ, পাণ্ডুয়া ও অন্যান্য শহরগুলির সমৃদ্ধি ম্লান হয়ে গিয়েছিল৷ শিল্পপ্রধান গ্রামগঞ্জে অসংখ্য বেকার সৃষ্টি হ’ল ও তারা সকলে গিয়ে ভীড় জমাল কৃষিক্ষেত্রে৷ তারপর বাঙলার কৃষিক্ষেত্রেও ব্রিটিশদের শোষন প্রবেশ করল৷ ১৭৭৯ সালে ব্রিটিশ শোষকরা জোর করে বাঙলার চাষীদের দিয়ে ধানী জমিতে নীল চাষ করতে বাধ্য করেছিল৷ যারা নীলচাষ করতে অস্বীকার করত তাদের ওপর ভয়াবহ অত্যাচার ও পীড়ন ও হত্যা পর্যন্ত করেছে৷ ‘নীল বিদ্রোহে’র ফলে নীল চাষ পরিত্যক্ত হয়েছিল৷

১৭৯৩ সালে লর্ড ডালহৌসী ‘‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’’-এর মারফৎ গ্রামীন অর্থব্যবস্থাকেও কায়েম করল৷ ‘‘এই ব্যবস্থায় জমিদারকে জমির প্রকৃত মালিক তৈরী করে’ তাদের হাতে প্রচুর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা দান করে৷ খেয়ালখুশী মত জমির খাজনা নির্ধারন, কর্ষক উচ্ছেদ৷ কর্ষকদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির ক্রোধ কর্ষকদের বিচার ও প্রয়োজনে হত্যা করার অধিকার ও জমিদারদের দেওয়া হয়েছিল৷ এ সবের বিনিময়ে জমিদারকে শুধু বছরের শেষে এক নির্দিষ্ট পরিমান টাকা  ব্রিটিশ সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে হতো৷ সেই টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্রেজারীতে না পৌঁছালে জমিদারী নিলাম হয়ে যেতো  যার জন্য জমিদারগন খেয়ালখুশী মত জমির খাজনা নির্ধারন করত, কর্ষক উচ্ছেদ করত৷ জমিদারগণ, অনাবৃষ্টি অতিবৃষ্টি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্র্যেগজনিত যে কোন অবস্থাই হোক না কেন কর্ষকদের খাজনার অর্থমূল্য শোধ করতেই হোত৷ এজন্য কর্ষক পীড়ন ভয়াবহরূপ নিয়েছিল৷’’ জমিদারদের লক্ষ্য ছিল সরকারী পাওনার ওপর মুনাফা লাভ তোলা৷ আর জমিদারদের পক্ষে দূর দূরান্তে গিয়ে খাজনা আদায়ের  অসুবিধা ছিল৷ এর জন্য লোক মারফৎ খাজনা আদায় করত স্তরে স্তরে দালাল নিয়োগ করে৷ ফলে সরকারী পাওনা, জমিদারদের মুনাফা ও স্তর পরম্পরায় দালালদের লাভের ভারটা কর্ষকদের ওপর পড়েছিল৷ দালালরা ছিল মধ্যসত্ত্বভোগী৷ এইসব কারণে বাঙলার কর্ষক কুল দারিদ্রের সর্বশেষ স্তরে নেমে এসেছিল৷ ও ছাড়া দারিদ্রের কারণে মহাজনদের কাছে জমি বন্দকী রেখে চড়া দরে সুদনিত আর সময় মত মহাজনদের টাকা না দিতে পারলে কৃষকেরা ভূল হীন খেত মজুরে পরিণত হয়ে গিয়েছিল৷

হিন্দিস্থানীদের সাম্রাজ্যবাদী শোষণঃ---

ব্রিটিশ শাসনের পরে ১৯৪৭ সালের পরে স্বাধীনোত্তর ক্ষুদ্র বাঙলায় একই ধরণের শোষণ অব্যাহত রয়েছে৷ ‘‘স্বাধীনতা লাভের প্রথম পর্বে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্র হয়েও ভারতের  অন্যান্য রাজ্যের থেকে বেশী অগ্রসর মান রাজ্য ছিল৷ পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক আর ছিল অন্যান্য রাজ্যের আয় অপেক্ষা বেশী৷ বাঙলার বহু শিল্পপতি তখনও পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে বিরাজ করত৷ কিন্তু বহিরাগত শোষকরা তাদের পরিকল্পনা মাফিক পশ্চিম বাঙলার শিল্প ও বাণিজ্যের বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র থেকে  শিল্পপতিদের উৎখাত করতে শুরু করে৷ স্বাধীনতা প্রাপ্তির সঙ্গে বাঙলা বঞ্চনার কাজ নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক শুরু হয়ে যায়’’ ভারত সরকার বাঙলার ওপর শোষণ অব্যাহত রেখেছে৷ পশ্চিমবঙ্গের ওপর বিমাতৃসুলভ আচরণ করে চলেছে৷

‘‘স্বাধীনতা লাভের  পরে পরেই পাঠের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গের কৃষি জমি পাটচাষের জমিতে রূপান্তরিত হয়ে গেল৷ এরফলে ধান জমি থেকে তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেল৷ অন্যদিকে পাটের উৎপাদন খরচ বা বাজার দর চাষীরা পেল না৷ বহিরাগত শোষকরা দু’তরকা লাভ করল৷ এক সম্প্রদায় পাট তারা বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রার সবটুকু আত্মসাৎ করল আর নিজস্ব এলাকার উৎপন্ন অপ্রয়োজনীয় ধান তারা পশ্চিমবঙ্গে ঢেলে দিল৷ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে মোট আশিটি (৮০) পাটকল৷ ওই সমুদয় পাটকলের মালিক হল বহিরাগত পুঁজিপতি৷ এরা কোটি কোটি টাকার মুনাফা অর্জন করত৷ কেন্দ্রীয় সরকার বাঙলার পাট বিদেশে রপ্তানী করে বছরে আয় করে কোটি কোটি টাকা৷ আর পাটজাতদ্রব্যের ওপর নানাবিধ ট্যাক্স, শুল্কবাবদ আয় করে আরও অনেক কোটি টাকা৷ কেন্দ্রের কুড়ি শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা আসে বাঙলার পাট থেকে বাঙলার পাট চাষীরা তাদের উৎপাদিত সম্পদ থেকে,পরিশ্রমের ফসল থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত৷ কেন্দ্রীয় সরকার কমদামে মহারাষ্ট্র ও গুজরাতকে তুলা বিক্রয় করে৷ বাঙলার তাঁতীদের তার থেকে অনেক বেশী দামে কিনতে হয়৷ ফলে বাঙলার স্যুতি ও তাঁতবস্ত্রের উৎপাদন খরচ বেশী পড়ে৷ চীনীর ক্ষেত্রেও সেই একই ব্যাপার৷ বাঙলার খনিজ সম্পদ লোহা ও কয়লা ইত্যাদি যখন অন্যরাজ্যে বিক্রি করতে হয় বাঙলাকে বিনালাভে দিতে হয়৷ কিন্তু অন্য রাজ্য থেকে  বাঙলাকে তেল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিষ কিনতে হলে অধিক মূল্য দিতে হয়৷’’

‘‘ বহিরাগতদের শোষনে ৯০ শতাংশ মানুষ আজ দারিদ্র সীমার নিচে নেমে এসেছে৷ বাঙলার অর্থনৈতিক কাঠামো আজ সম্পূর্ণ বিধবস্ত৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রতিদিন বাঙলা থেকে গড়ে দশ কোটি টাকা বহিরাগত শোষকদের মারফৎ বাঙলার বাহিরে চলে যাচ্ছে৷ বাঙলার নিজস্ব শিল্প  উদ্যোগগুলি আজ প্রায় নির্মূল৷ ব্যবসা-বাণিজ্য সমেত বাঙলার গুরুত্ব পূর্ণ শিল্পাঞ্চলগুলি ও বহিরাগত শোষকদের হাতে৷ বাঙলার এককোটি বেশী কর্মক্ষণ যুবক কর্মহীন৷ অন্যদিকে চাকুরীক্ষেত্রে ষাট (৬০) শতাংশ লোককে বাঙলার  বাইরে তেকে আনা হয়৷’’

ফ্যাসিই বাঙলার শোষণ

                ‘‘আর্থিক শোষণের চূড়ান্ত ভয়াবহরূপ হলো ফ্যাসিষ্ট শোষণ৷ সাম্রাজ্যবাদী শোষকেরা তাদের শোষণকে যুক্তি ও তথ্যের ওপর দাঁড় করানোর জন্যে প্রথমে তারা জাতীয় সমর্থন আদায় করতে সচেষ্ট হয়৷ এরজন্যে তারা জাতীয়তাবাদ তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করে৷ জাতীয়তাবাদের সেন্টিমেন্ট দিয়ে তারা তাদের শোষণকে যুক্তি সিদ্ধ ও নিয়মতান্ত্রিক বলে প্রতিষ্ঠা করতে চায়৷’’ জাতীয়তাবাদের সেন্টিমেন্ট দিয়ে তারা শোষণ করতে থাকে তো স্থানীয় মানুষেরা এক জাতির এক দেশের  লোক ভেবে তাদের দ্বারা স্থানীয়রা যে শোষিত হচ্ছে তা পারে না৷ বর্তমানের সরকার জাতীয়তাবাদের ওপর জোর দিচ্ছে যে---‘‘এক দেশ, এক জাতি, এক ভাষা৷’’ রাজ্যের হাত থেকে তার ক্ষমতা কম করার চেষ্টা চলছে৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে যা প্রাকৃতিক সম্পদ তা থেকে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার কোন অংশ পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া হয় না৷ কেন্দ্র থেকে প্রাপ্য অর্থকে পঃবঙ্গকে ঠিক ঠিকমত দিচ্ছে না৷ ‘এক দেশ এক জাতি’ এ উন্নত ভাবনা ঠিকই কিন্তু এই এক দেশ এক জাতির অজুহাতে, সঙ্গতি সম্পন্ন ধনী ও প্রতিপত্তিশালীরা আর কেন্দ্রীয় সরকার তাদের নিজস্ব লোক নিয়োগ করে অন্যসব প্রদেশের বা স্থানের মানুষকে অবাধভাবে শোষণ করে চলছে, তাদের সম্পদ লুঠ করে যাচ্ছে ও লুঠ করতে থাকবে৷ রাষ্ট্রীয় শোষণ ও অন্যপ্রদেশের প্রভাবশালীদের শোষণ অবাধভাবে থাকে৷ এই জাতীয়বাদের অজুহাতে শোষকেরা প্রথমে প্রাকৃতিক সম্পূর্ণভাবে স্থানকে বেছে নেয়৷ তারপর ওই স্থানের জনগোষ্ঠীর মানসিক সাংস্কৃতিক পরিবেশকে উৎখাত করে দেয় আর তাদের ওপর অন্যতর এক ভাষা ও সংস্কৃতির পরিবেশকে চাপিয়ে দেয়৷ যারফলে জনগোষ্ঠীর স্বাভাবিক অভিপ্রকাশকে বিকৃত করে দেয় ও তাদের মধ্যে একধরণের পরাজিত সুলভ হীনমন্যতার মনোভাব গড়ে ওঠে আর স্থানীয় মানুষের সংগ্রামী মনোভাব চিরতরে বিনষ্ট হয়ে যায়৷ শোষকেরা তাদের শোষণ স্থায়ীভাবে করতে থাকে৷ এটা হলে মানস অর্থনৈতিক শোষণ এরফলে একটা জনগোষ্ঠীর নিজস্ব পরিচিতি আর থাকে না ইতিহাসের বুক থেকে ওই জনগোষ্ঠী বিলুপ্ত হয়ে যায়৷

ব্রিটিশ আমলে বাঙলার মানুষেরা এই ব্রিটিশের এই ক্রর মানসিক শোষণের শিকার হয়েছিল ব্রিটিশ বাঙালীর সংগ্রামী মনোভাবকে ধবংস করার জন্য মানসিক শোষণ শুরু করেছিল৷ ‘‘দ্বিতীয়ত বাঙালী জনগোষ্ঠীর মূল সংখ্যাকে কমিয়ে ফেলার জন্যে বাংলাকে খণ্ড বিচ্ছিন্ন করে পাশ্ববর্তী স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত করে ছিল৷ সেখানে বাঙালী জনগোষ্ঠীর এক বৃহৎ অংশ অন্য স্থানের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাঙলার  মূল জীবন ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল৷’’ এখনও স্বাধীনতার পরেও কেন্দ্রীয় সরকার একই নীতি অনুসরণ করে চলেছে৷ বাঙালী উদ্বাস্তুদের সমস্যা এখনও ৭০ বছরেও সমাধান করে নি৷ ‘‘শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাস, সামর্থ্য ও কঠিন পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করে বিপুল সংখ্যার বাঙালী উদ্বাস্তু ত্রিপুরা, বিহার, ওড়িষ্যায় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম করে চলেছে৷

---বাঙালী জনগোষ্ঠীর মূল সংখ্যাকে কমিয়ে ফেলার সঙ্গে রয়েছে তাদের প্রাণ শক্তি ধবংস করার অপচেষ্টা৷ মানসিক শক্তি বিকাশের মাধ্যম হলে ভাষা ও সাহিত্য৷ তাই আপনভাষা ও সংস্কৃতি থেকে উৎখাত করার চেষ্টা হল মানসিক শোষণের এক বিশেষ পদ্ধতি৷ সমগ্র পূর্ব ভারত জুড়ে জনমানসের ওপর এই সাংস্কৃতিক অন্যায় অবাধে চলছে৷ বাঙালীর জাতীয় চরিত্রের নৈতিকতা ও  দৃঢ়তাকে শিথিল করার জন্যে বাজারে সর্বত্র মদ, জুয়া, আফিং, সাট্টা, গাঁজা, চরস, পতিতালয় ক্যাফ্যারে ইত্যাদি দূষিত ক্ষতের মত ছড়িয়ে রাখা হয়েছে৷

একই সঙ্গে বাঙলা ছুড়ে দুইক্ষতের মত ছড়িয়ে দেওয়া  হয়েছে যৌন আবেদন মূলক অপরাধ প্রবন চলচ্চিত্র ও অশ্লীল সাহিত্যের বিপুল প্রচার৷ মানুষের স্বাভাবিক মন অধোমুখী৷ নীচের দিকে যত সহজে যায় ওপরের দিকে অত তাড়াতাড়ি ওঠে না৷

‘‘বাঙলার কারখানায় ও গ্রামীন উৎপাদনের ক্ষেত্রে চলছে পুঁজিবাদী শোষণ’’---ফ্যাসিষ্ট শোষনটা হলো এই ধরণের৷ এ হল এক ধরণের ইন্ট্রা জাতীয়তাবাদী শোষন৷ এক জাতি অন্যজাতিকে শোষণ করলে তা ইন্টার জাতীয়তাবাদী শোষন এই ধরনের শোষন অর্থাৎ জাতীয়তাবাদে নামে বা মানবতার ভাবাবেগে যা বিশ্বভ্রাতৃত্বের নামে শোষনরোধ করতে হলে ওই সঙ্গে শোষন বিরোধী প্রাদেশিক সেন্টিমেন্ট,ভাষাগত বা গোষ্ঠীগত ভাবাবেগ আদি রেখে চলতে হবে যতক্ষণ না ওই সবের অজুহাতে শোষন দূর না হচ্ছে৷ একে বলে আদর্শগত ভাবাবেগের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রিয় ভাবাবেগ রেখে চলা৷  (ক্রমশঃ)