‘‘মানুষ মানুষ হারায়ে হুঁশ কোথায় চলেছ তুমি,
আকাশ সাগর বিষিয়ে দিয়ে নরক করে’ মর্তভূমি?’’
সাবাস ভারতীয় সেনা, এই জবাবটা দেয়ারই ছিল ধর্মের নাম নিয়ে পৈশাচিকভাবে নরহত্যা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না৷ সীমান্ত পারের জল্লাদ গুলোকে যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা বাহিনী, প্রয়োজনে আরও কঠিন কঠোর জবাব দিতে হবে৷ সেনাবাহিনীর এই কাজে প্রতিটি ভারতবাসীই সেনা বাহিনীর পাশেই থাকবে৷ একদল ধর্র্মন্ধ মানুষ ধর্মের মুখোশে মুখ ঢেকে দশকের পর দশক ধরে পৈশাচিক হত্যালীলা চালিয়ে যাবে, একে আর কোনও মতেই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়৷
কিন্তু প্রশ্ণ অন্য জায়গায়৷ এই পাল্টা মার শুধুমাত্র যেন দেশ ও দেশবাসীর সুরক্ষার জন্যে হয়ে থাকে, রাজনীতির অন্য গন্ধ যেন না থাকে৷ আর মনুষ্যত্ব যেন পদদলিত না হয়৷ অকারণে কাপুরুষের মতো এতো সেনাকে খুন করার পর একটা উচ্ছ্বাস হতেই পারে৷ কিন্তু উচ্ছ্বাস কেন বিকৃত উল্লাসে পরিণত হবে!
সেনা বাহিনীর আক্রমণের পর কিছু মানুষ যেভাবে উল্লাস প্রকাশ করেছে, এমনকি কোনও কোনও রাজনৈতিক দলের অফিস থেকে মিষ্টি বিতরণ হয়েছে সেটা মোটেই কাম্য নয়৷
একটা কথা বিশ্বকে বোঝাতে হবে, যে ভারতবর্ষ শুধু আয়তনে ও জনসংখ্যায় পাকিস্তানের চেয়ে বড় নয়, মানবিকতায়, মানসিকতায়, হৃদয়বত্তায়, মননশীলতায় অনেক অনেক বড়৷ ভারতীয় সেনা যেটা করেছে, প্রয়োজন হলে আরও করবে তা নিছক বদলা নেওয়ার জন্যে নয়, সমগ্র মানব জাতির শত্রু, মানবিকতার শত্রু অবশ্যই ইসলামের শত্রু৷ এদের বিনাশ শুধু ভারতের সুরক্ষার জন্যে নয়, সমগ্র মানব জাতির কল্যাণের জন্যে প্রয়োজন৷ এই বার্র্ত বিশ্ববাসীর৷
কিন্তু এ ধরনের বিকৃত উল্লাস অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ কোথায় যেন একটা অন্য ফায়দা লোটার ধান্দা কাজ করছে৷ এই ইঙ্গিতও ভালো নয়৷ দেশবাসী নিরাপত্তা ও সুরক্ষার সঙ্গে রাজনীতির লাভ-লোকসান মিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ মানবিকতা আমাদের রাজনীতি থেকে মুছে গেছে৷ ভয় এখানেই৷ আমরা আমাদের সংসৃকতি ঐতিহ্য ভুলে যাচ্ছি৷ একদল অমানুষ জঙ্গীর কোপে পড়ে আমরাও অমানুষ হয়ে যাচ্ছি৷ জঙ্গিরা সফল এখানেই৷ তাই এই প্রবণতা অবিলম্বে বন্ধ হোক, সেনাবাহিনী তার কাজ করুক, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাক৷ ধর্মের নামে কুসংস্কারাছন্ন বিকৃত মতবাদের উল্লাস(উভয় পারে) বন্ধ হোক৷ রবীন্দ্রনাথ বলেছেন--- ‘‘পশু বলছে সহজ ধর্মের পথে ভোগ করো, মানুষ বলছে মানব ধর্মের সাধনা করো’’৷ ভোগের পথ ছেড়ে মানুষ মানব ধর্মের সাধনা করুক, মানুষ মানুষ হোক৷
- Log in to post comments