মধু

লেখক
আয়ুর্বেদাচার্য

ব্যবহারে বিধিনিষেধ

মধু ব্যবহারের সময় কয়েকটি বিধি–নিষেধ মেনে চলতে হবে৷ একবারে কেউ যেন অধিক মাত্রায় মধু গ্রহণ না করে৷ কেবল ঔষধের সাথে মিশিয়ে ব্যবহারের প্রয়োজন ছাড়া মধু সবসময়ে জলে মিশিয়ে গ্রহণ করতে হবে৷ মুখের স্বাদের জন্যে মধু ঢেলে চামচের পর চামচ গ্রহণ করলে শরীর ও মাথা গরম হয়ে যায়৷ ফলে মাথায় চাপ সৃষ্টি হতে পারে৷ মধুকে পরিমিত ভাবে গ্রহণ করতে হবে৷ সুস্থ ব্যষ্টি প্রতি একদিন অন্তর দুই–তিন চামচ মধু এক গ্লাস জলে গুলিয়ে খেতে পারেন৷ তাতে শরীরের স্বাভাবিকতা বজায় থাকবে, শরীর কর্মশক্তিতে ভরপুর থাকবে৷ খাঁটি মধু সংগ্রহের চেষ্টাও থাকা উচিত৷ চিকিৎস্বার্থে কেউ যদি মধু ব্যবহার করতে চান তবে উপযুক্ত ব্যষ্টিগণের পরামর্শ গ্রহণ করেই তা করবেন৷ গরমের দিনে মধু গ্রহণের আনুপাতিক হার কিছুটা কমিয়ে দিলে ভাল হয়৷ উপযুক্ত পাত্রে (কাঁচের বা চীনামাটির পাত্রে) মধু জমিয়ে রাখবেন৷ প্রয়োজনে পরিশোধিত মধু গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়৷ মনে রাখা দরকার, যে বস্তুর গুণ ও শক্তি যত বেশী আর বহুমুখী সে বস্তুর ব্যবহারেও তত বেশী সতর্কতা ও বিধি–নিষেধ মেনে চলা প্রয়োজন৷

প্রাচীন ঋষিগণ, যোগীগণ আর চিকিৎসকগণ মধুর অসাধারণ গুণাবলী অবগত হয়ে সমাজ জীবনে মধুর মর্যাদাকে ও মহত্বকে কেবল ঔষধি মূল্যে বৃত্তেই সাধারণ উপকরণের আসনটুকু দিয়ে ফেলে রাখেন নি, তাঁরা মধুর মধ্যে জীবনের কল্যাণ, সমাজের মঙ্গল সমষ্টি ও ব্যষ্টির শ্রী–জ্ঞান–ধৃ–দ্যুতি–স্ অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার সংবেদ বধির আলোতে জানতে পেরেছিলেন৷ মধুকে তাই মঙ্গলের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করে প্রায় ৬,০০০ বছর অতীতে ঋক্বেদীয় ঋষিরা শ্লোক রচনা করেছিলেন– ‘‘ওঁ মধুবাতা ঋতায়তে মধুক্ষরন্তু সিন্ধবঃ মাধ্বির্ণ সন্তোষধি / মধুনক্তমুতষসো মধুমৎ পার্থিবং রজঃ মধুদৌরস্তু নঃ পিতা৷ / মধুমান্নো বনস্পতি মধুমাঁ অস্তু সূর্যো মাধ্বির্গাবো ভবন্তু নঃ৷৷ ওঁ মধু ওঁ মধু ওঁ মধু৷