নিরামিষ খান, শরীর ও মনকে সুস্থ রাখুন

লেখক
পাঠকের মতামত

ভাগাড়ের মরা গোরু, কুকুর, বেড়ালের পচা মাংস, পচা মুরগীর মাংস হোটেলে রেঁস্তোরায় নিয়মিত সরবরাহ হওয়ার খবর আমরা পেয়েছি৷ ভোজন বিলাসী মানুষেরা বড় বড় হোটেলে বসে বাড়তি পয়সা দিয়ে জুত করে ভোজ সারছেন৷ এখন পচা মাংসের খবর আসায় সবাই চিন্তায় পড়েছেন, এতদিন আমাদের তাহলে ভাগাড়ের কুকুর-বেড়ালের মাংস খাওয়ানো হ’ত! মাংসের প্রতি অনেকের ঘৃণা বোধও আসছে৷ এত কিছু হওয়ার পরও গত ১৩ই জুন হাওড়ার লিলুয়া থানার জগদীশপুরে একটি কণ্টেনার থেকে ১৩০ কেজি পচা মুরগীর মাংস আটক করল পুলিশ৷ ওই মাংস নিশ্চয়ই কোনো হোটেল বা রেস্তোঁরায় পাঠানো হচ্ছিল৷ পুলিশ কণ্টেনারের চালক ও খালাসীকে আটক করেছে৷ এইসব শুনে ভোজন বিলাসী ভাই-বোনেরা আরো চিন্তায় পড়ে গেছেন৷

তাই আমি বলি কি, তামসিক খাদ্য খাওয়া ত্যাগ করুন৷ সাত্ত্বিক খাদ্য খান, তাতে শরীর ও মন দুই-ই ভাল থাকবে৷ খাদ্য সাধারণতঃ তিন প্রকার---সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক৷ সাত্ত্বিক খাদ্য মানে যে খাদ্য শরীর ও মন দুইয়ের পক্ষে উপকারী৷ শরীরকেও সুস্থ রাখে, মনকেও প্রফুল্ল রাখে৷ সাত্ত্বিক খাদ্য মনের মধ্যে সাত্ত্বিক ভাবনা জাগিয়ে তোলে৷ তামসিক খাদ্য শরীর বা মনের পক্ষে অত্যন্ত খারাপ৷ আর রাজসিক খাদ্য শরীরের কখনও কখনও ভাল হলেও শরীরে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া আছে৷ মনের পক্ষেও এ খাদ্য ভাল নয়৷ বিশেষ করে পশুপক্ষীর মাংস, বাসি পচা খাদ্য এ সবই তামসিক৷ মানুষের জীবনে এর প্রতিক্রিয়া খুবই খারাপ৷

তাছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলেছেন তামসিক খাদ্য ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে৷ অপরপক্ষে শাক-সব্জি অর্থাৎ সাত্ত্বিক খাদ্য ক্যানসারের প্রতিরোধক৷ তাই সুস্থ শরীর ও সুস্থ মন নিয়ে বাঁচতে হলে সাত্ত্বিক খাদ্যই মানুষের উপযুক্ত খাদ্য৷ তাই আসুন না, আমরা সবাই সাত্ত্বিক ভোজ করি৷

মানুষ প্রাকৃতিকভাবেই নিরামিষাশী প্রাণীর অন্তর্গত৷ যারা আমিষাশী প্রাণী তাদের সরু ধারালো ক্যানাইন টিথ থাকে৷ যেমন কুকুর, বেড়াল, বাঘ, সিংহ প্রভৃতি৷ মানুষের সেই ক্যানাইন টিথ নেই৷ প্রকৃতিগতভাবে যারা ফলাহারী প্রাণী বা গাছ-পাতা খায় (যেমন বানর বর্গীয় প্রাণী বা অন্যান্য নিরামিষাশী প্রাণী) তাদের দাঁতের গড়ন মানুষের মত৷ তাই সেদিক থেকেও মানুষের পক্ষে নিরামিষ খাওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত৷

তাই সকলের প্রতি আমার পুনরায় পরামর্শ ও অনুরোধ, আপনারা নিরামিষ খান, সুস্থ ও আনন্দময় জীবন লাভ করুন৷     ---দীনদয়াল বসু, উত্তর কলিকাতা