‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ কীর্ত্তন  ও মাইক্রোবাইটাম

লেখক
সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

 ‘ৰাৰা নাম কেবলম’ কীর্তন হ’ল মোহন বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত সঙ্গীত৷ ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ কীর্ত্তন হ’ল ইষ্টনাম হ’ল পজিটিভ সাউন্ড৷ উচ্চৈ স্বরে পরম পুরুষের  গুন-গান ক’রে পরমপুরুষের আনন্দপ্রাপ্তি হয়৷ এই অবস্থায় ভক্ত নিজেকে ভুলে গিয়ে আত্মহারা হয়ে পরম পুরুষকে  আনন্দ দেওয়াই হয়ে ওঠে ভক্তের  জীবনের লক্ষ্য৷ পজিটিভ সাউণ্ডের পরিবেশ পজিটিভ মাইক্রোবাইটামের সমাবেশ হওয়ার পক্ষে অত্যন্ত অনুকূল৷ সেদিক থেকে ‘ৰাৰা’র দেওয়া অষ্টাক্ষরী সিদ্ধ ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ কীর্তনে যে মনোরম স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাতে কোটি কোটি পজিটিভ মাইক্রোবাইটামের সমাবেশ হয়৷ আর এই মাইক্রোবাইটাম হরিপরি ম

ণ্ডলের উপস্থিত সকলের জাগতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক কল্যাণ সাধন হয়৷ এমনকি, বহু দুরারোগ্য ব্যধিরও নিরাময় হয় এই কীর্ত্তনে সৃষ্ট মাইক্রোবাইটামের সাহায্যে অশেষ কৃপা বর্ষন করেন৷ প্রসঙ্গত বলি--- গুরুধ্যানের মধ্য দিয়েও পজিটিভ মাইক্রোবাইটামের সমাবেশ হয়৷ কীর্ত্তন করার ফলে শুধু যে পজিটিভ মাইক্রোবাইটামের সমাবেশ হয় তাই নয়, উচ্চৈস্বরে কীর্ত্তন করার ফলে যে স্পন্দন তৈরী হয় তাতে মুখ পবিত্র হয়, জ্বিহা পবিত্র হয় ও কানও পবিত্র হয়৷ সামগ্রিকভাবে ঐ পরিবেশের জীবজন্তু, পশুপক্ষী এমনকি গাছপালা প্রভৃতি পবিত্র হ’য়ে ওঠে ও এক অপার আনন্দ স্রোতে  ভাসতে থাকে৷ আসলে কীর্তনের ফলে যে সূক্ষ্ম তরঙ্গের সৃষ্টি হয় তা  অতিরিক্ত সূক্ষ্মভাবাশ্রয়ী শব্দ তরঙ্গ  ছাড়া আর কিছুই নয়৷ এই সূক্ষ্মভাবাশ্রয়ী তরঙ্গে কেবলমাত্র একটি তন্মাত্র (শব্দ) থাকায় পজিটিভ মাইক্রোবাইটামের অবস্থানের পক্ষে সম্পূর্ণ উপযুক্ত৷ এই কারণেই ‘ৰাৰা নাম্‌ কেবলম্‌’ কীর্ত্তনে উৎপন্ন পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম স্বাধীনভাবে তার বহুমুখী কাজ চালিয়ে জীবকূল পশুপক্ষী ও  গাছপালা প্রভৃতির উপর প্রভাব ফেলে বহুবিধ কল্যাণ সাধন করে৷ এখানেই হ’ল ‘ৰাৰা নাম কেবলম্‌’ কীর্ত্তনের বিশেষ মাহাত্ম্য, এই মাহাত্ম্যের কথা ভেবেই অনুমিত হয় যে, শ্রদ্ধেয় দাদা আচার্য্য নিত্যসত্তানন্দ অবধূতজী তাঁর আনন্দ সঙ্গীত লিখেছেন---

 

একবার পরান খুলিয়া        গা’ দেখি তোরা

                          কেবলম্‌ ৰাৰা নাম্‌

দুর হয়ে যাক্‌             শোক ভয় লাজ

                        পূত হোক ধরাধাম্‌৷

                                                            (আনন্দ সংগীত, আনন্দ)

                                                                           নগর, মার্চ ১৯৭০

এমনি  আরও একটি গান হ’ল---

 

            আনন্দ দাও      আনন্দ মূরতি

                                 কৃপা কর জগজনে

             তুমি ছাড়া কেবা আছে ত্রিভুবনে৷

 

কবে পথে পথে সবে    গাইয়া ফিরিবে

                               তোমারই জয়গান---

 

করে বিশ্বভুবনে        উঠিবে ধবনিয়া

                             কেবলম্‌  ৰাৰা নাম৷৷

 

এই প্রসঙ্গে শ্রদ্ধেয় দাদা শ্রী অমূল্যভূষণ ষড়ঙ্গী কে ‘ৰাৰা’ (শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তী) একবার একান্তে কি বলেছেন তা পাঠক গণের কাছে হুবুহু পরিবেশন করছি---

শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী নিজেই বলেছেন---‘‘

‘I have not come to establish sadvipra samaj. That is but a fraction of my true purpose. My real mission is to inundate the world with devotion.’’

‘‘আমি এখানে সদ্‌বিপ্র সমাজ ঘটনের উদ্দেশ্য আসিনি৷ সেটা আমার আসল উদ্দেশ্যের একটা ভগ্ণাংশ মাত্র৷ আমার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে,, পৃথিবীকে ভক্তি স্রোতে প্লাবিত করে দিতে৷’’

‘ৰাৰা’-র এই উক্তির প্রসঙ্গে দাদা নিত্যসত্তানন্দজীর আরও একটি আনন্দ সংগীত আমাদের মনের কোনে তীব্র অনুরণ এনে দিচ্ছে৷

শ্রদ্ধেয় দাদা আত্মহারা হয়ে তাঁর আনন্দসংগীতে গেয়ে উঠলেন---

(ওভাই) দেখ্‌ চেয়ে দেখ ভাসছে ধরা নামের বানে৷৷

            ৰাৰা নামে সূর্য ওঠে ৰাৰা নামে চন্দ্র ওঠে

            ৰাৰা নামে পুষ্প ফোটে

            কাননে কাননে৷৷

            জগতে একটি নাম্‌ ৰাৰা নাম  ৰাৰা নাম

            ৰাৰা নাম দাও ছড়ায়ে

            প্রাণে প্রাণে৷৷

                                                                       (আনন্দনগর --- জুলাই, ১৯৭৪)