আমরা অত্যাধুনিক যুগে প্রবেশ করেছি, এটাই এ যুগের অধিকাংশ শিক্ষার আলোকপ্রাপ্ত মানুষের দাবী৷ তাছাড়া অনেক রাষ্ট্র নেতারাও এই দাবী করে আনন্দে গদগদ! কিন্তু সারা পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ শিশু, নরনারী, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা নির্বিশেষে মনে প্রাণে এটাকে কী অন্তরের সঙ্গে মেনে নিতে পেরেছে? এই অত্যাধুনিক যুগে (?) দারিদ্র্যসীমার নীচে যে কত মানুষ দিনযাপনের গ্লানি বহন করে চলেছে তার সঠিক হিসেব নেই৷ কিন্তু ধনী রাষ্ট্রগুলি তাদের বঞ্চিত করে প্রতি বছর কোটি কোটি ডলার খরচ করছে মারণাস্ত্র তৈরী করতে৷ মানুষের সমাজ মানুষের চোখের জল মোছাতে তো তেমনটা আগ্রহী নয়৷ খাদ্য পচিয়ে নষ্ট করছে, কুচক্রীরা বাজার দর নিয়ন্ত্রণ করছে৷ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে বেঁচে থাকার খাদ্য ও অত্যাবশকীয় সামগ্রীকে নষ্ট করে দিচ্ছে৷ এটা কেমন সভ্যতা ও আধুনিকতা? আজও যারা মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনায় মত্ত হয়ে নির্মমভাবে নিরীহ মানুষ হত্যা করে বিশেষ এক রাষ্ট্র তৈরীর নেশায় উন্মত্ত, তাদের নিয়ন্ত্রণ করার দিকে দৃষ্টি না দিয়ে মানুষের সভ্যতাকে পদদলিত করতে তাদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে আর তাদের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে চলেছে৷ এ কেমন সভ্যতা? এটা খুব অপ্রিয় সত্য কথা তা হ’ল আজ যারা আক্রান্ত হচ্ছে একদিন এরাই তাদের মদত দিয়েছে নিজেদের ক্ষুদ্র ও জঘন্য স্বার্থসিদ্ধি করতে৷ এরা হ’ল সেই সাম্রাজ্যবাদী ভয়ঙ্কর শক্তি৷ পৃথিবী আধুনিক যুগে এগিয়ে যাবে মানবতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে৷ আজকের লক্ষ্য হবে বাঁচো আর অপরকে বাঁচতে দাও৷ তা না করে অপরের সম্পদ ও দেশ আক্রমণ করা বা যেন-তেন-প্রকারেণ শোষণ করা এই নীতিটাই বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে৷ মানবিক মূল্যবোধতো ধূলায় পড়ে কাঁদছে৷
পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ইউ এন ও হয়েছে৷ কিন্তু সেখানে এমন কয়েকটি দেশ ‘ভেটো’ ব্যবহারের অধিকার ভোগ করছে যাদের চিন্তাধারা ও রাষ্ট্রনীতিতে সহনশীলতা, মানবতা, সৌভ্রাতৃত্ব নেই৷ অনেক সময় তারা বহু ব্যাপারে ভেটো প্রয়োগ করে পৃথিবীর প্রগতিকে ব্যাহত করে তুলছে৷ পৃথিবী এমনভাবে এগোবে যাতে করে ধনী দরিদ্রের পার্থক্যটা না থাকে৷ তা না হয়ে দেখা যাচ্ছে ধনী ও দরিদ্রের তফাৎটা আকাশ আর পাতাল সমান হচ্ছে৷ অধিকাংশ সরকারী কর্মচারীদের এমন বেতন হার বাড়ছে যা সাধারণ মানুষের চিন্তার বাইরে৷ বেসরকারী লোকজনদের নুন আনতে পান্তা ফুরাচ্ছে! ভারতের মত অতি গরীব দেশে তো এই ধরণের তফাৎ হওয়াটা মোটেই কাম্য নয়৷ সমাজতন্ত্রের পথে বর্তমান যুগ এগোবে তবেই ধরা হবে মানুষ সভ্য হচ্ছে৷ ত্যাগ, সহনশীলতা, বন্ধুত্ব, প্রেম বাড়বে৷ কই তার তো কোন লক্ষণ নেই৷ দেশ নেতাদের সান্মানিক বেতন এমন হচ্ছে যা দেখলে আত্মারাম খাঁচা হয়ে যায়৷ (ক্রমশঃ)
- Log in to post comments