বছর ৭-৮ বয়সের ছোট্ট ছেলেটি সুকল থেকে বাড়িতে এসে মাকে বলল, মা, প্রিন্সিপাল আমাকে অনেক ক্যান্ডি দিয়েছেন, আর তোমাকে একটা চিঠি দিয়েছেন৷ চিঠিটি পড়তে পড়তে মায়ের চোছ ভিজে উঠল৷ ছোট্ট ছেলেটি মাকে বলল মা তুমি কাঁদছ কেন? মা বললেন আনন্দে কাঁদছি৷ শিশুপুত্রকে জড়িয়ে ধরে আদর করে বললে প্রিন্সিপাল লিখেছেন---আপনার পুত্র খুবই জিনিয়াস ও ছোট্ট শহরে ওকে শিক্ষা দেওয়ার মতো শিক্ষক আমাদের নেই৷ পারলে ছেলেকে বড় শহরে কোন ইসুকলে ভর্তি করে দিলে ভাল ছেলেটি একদিন বিশ্বখ্যাত হবে৷ মা-ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলল এই জিনিয়াসকে আমি পড়াবো৷ মায়ের শিক্ষায় ছেলেটি একদিন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী হয়ে গেলেন৷ বৈদ্যুতিক বাল্ব, শব্দ রেকর্ডিং, চলমান ছবি ইত্যাদির আবিষ্কারক তিনি৷ নাম টমাস আলভা এডিশন৷
মায়ের মৃত্যুর পর টমাস গেলেন সেই ছোট্ট গ্রাম্য বাড়িতে৷ টমাস ঘর পরিষ্কার করতে করতে সেই চিঠিটি খুঁজে পেলেন৷ চিঠিটি খুলে পড়তে পড়তে টমাসের চোখে জল এসে গেল৷ চিঠিতে লেখা ছিল--- ‘ম্যাডাম, আপনার ছেলে এতটাই নির্বোধ যে তাকে শিক্ষা দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমাদের নেই৷ অন্য কারোর আছে বলে আমাদের জানা নেই৷ আপনার ছেলের কারণে আমাদের সুকলের সুনাম ক্ষুন্ন হবে৷ তাই সুকল কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে আপনার ছেলেকে সুকল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হল৷’
সাধারণ মায়েদের সঙ্গে টমাসের মায়ের পার্থক্য এখানেই৷ সাধারণ মায়েরা এই ধরণের চিঠি পেলে ছেলের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে হয়তো বলে বসতেন তোকে আর লেখাপড়া করতে হবে না৷ কিন্তু টমাসের মা টমাসকে বুঝতেই দিলেন না সুকলের শিক্ষক, সুকলের অধ্যক্ষ তার সম্পর্কে কি লিখেছে৷ তিনি সম্পূর্ণ ধনাত্মক মানসিকতা নিয়ে ছেলের শিক্ষার দায়িত্ব নিলেন ও ছেলেকে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী করে গড়ে তুললেন৷
এই মনীষীর জীবন থেকে আজকের দিনে বাবা মায়েদের শিক্ষা নেওয়া উচিত ছেলেকে কিভাবে গড়ে তুলতে হয়৷ যে ছেলেকে সুকলের অধ্যক্ষ নির্বোধ বলে সুকল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন মায়ের শিক্ষায় সেই ছেলেই একদিন হলেন বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী৷ তাঁর বহু আবিষ্কারের ফসল আজ পৃথিবীকে উজ্জ্বল আলোয় ভরে দিচ্ছে৷
- Log in to post comments