আকাশ তরঙ্গ

লেখক
যুগ যুগ ধরে 'লং-হর্ন মিয়াও'

নৃগোষ্ঠীর জনগণ.....মৃত ব্যক্তির  চুল দিয়ে  তৈরি  হ্যাট মাথায় পরেন।  জাতিগোষ্ঠী ভেদে সংস্কৃতির পার্থক্য কিংবা বৈচিত্র্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। পৃথিবীতে এমন কিছু জাতিগোষ্ঠী রয়েছে যারা ভিন্নধর্মী রীতি পালনে অভ্যস্ত। এমনই একটি অদ্ভূত সংস্কৃতি পালন করে লং-হর্ন মিয়াও নৃগোষ্ঠীর জনগণ। মিয়াও উপজাতির কয়েকটি ভাগের মধ্যে লং-হর্ন অন্যতম। এই নৃগোষ্ঠীর নারীরা তাদের বংশের ঊর্ধ্বতন নারীর মাথার চুল দ্বারা তৈরি এক ধরনের বিশেষ হ্যাট মাথায় পরে। তাদের এই ঐতিহ্য যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে।

চিরুনি করার সময় উঠে যাওয়া চুলগুলো ফেলে না দিয়ে সংরক্ষণ করে তারা। এ চুল দিয়েই তৈরি করা হয় বিশেষ প্রকৃতির পরচুলা। তাদের তৈরি এই পরচুলা দেখতে অনেকটা প্রাণীর শিং এর মতো। এ উপজাতির নারীরা তাদের মা, দাদি, নানি, খালা, ফুফুদের পরচুলাগুলোও সংরক্ষণ করেন রাখেন তাদের মৃত্যুর পর।

তাদের পর সেগুলোর দেখভালের দায়িত্ব পায় পরিবারের কন্যা সন্তানেরা। অনেক পরচুলা আছে যেগুলো শত শত বছরের পুরনো। বংশ পরম্পরায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই পরচুলা হস্তান্তর হতে থাকে। মিয়াও নারীরা বিশেষ অনুষ্ঠানে এসব পরচুলা পরে থাকে। 

একসময় মিয়াও উপজাতির পুরুষেরাও পুর্বপুরুষদের চুল দ্বারা তৈরি পরচুলা পরত। তবে ধীরে ধীরে সে ঐতিহ্য বিলুপ্ত হলেও মেয়েরা পূর্বসূরীদের সম্মান জানাতে এখনো এ রীতি পালন করছে। 

চীনের দক্ষিণ অঞ্চলের গুয়াঞ্জু প্রদেশে এই মিয়াও উপজাতির বসবাস। ক্ষুদ্র এ জাতিগোষ্ঠীর জনসংখ্যা পাঁচ হাজারের কাছাকাছি। পূর্বপুরুষদের উপাসনা করা মিয়াও জনগণের ধর্ম বিশ্বাস। আর শিং আকৃতির পরচুলা পরে পূর্বপুরষদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে।