(৯) আবার ‘যুজ’+ ‘ঘঞ’ প্রত্যয় করে ‘যোগ’ শব্দ পাচ্ছি৷ ‘যুজ্’ ধাতুর অর্থ হ’ল যোগ করা, জোড়া লাগানো, যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত করা, যোগ্যতা অর্জন করা৷ দু’টি আৰ+ তিনটি আঁ = পাঁচটি আঁৰ৷ এক্ষেত্রে আঁৰগুলির প্রত্যেকটির পৃথক পৃথক অস্তিত্ব থাকছে৷ এটি যোগ to add, to unite)৷ এই ‘যুজ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘য’ শব্দ পাচ্ছি তার একটি অর্থ হ’ল ‘যুক্ত করা’ to unite)৷
(১০) এই ‘যুজ্’ ধাতুর উত্তর ‘অচ্’ প্রত্যয় করে আমরা ‘যুগ’ শব্দটি পাচ্ছি যার ভাবারূঢ়ার্থ হচ্ছে ‘খণ্ডকাল’, যোগারুঢ়ার্থ হ’ল ‘বার বৎসরের সমষ্টি’৷ তাই ‘যুজ্’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘য’ শব্দ পাচ্ছি তার একটি অর্থ হ’ল ‘যুগ’ (সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর প্রভৃতি)৷
(১১) ‘যুঞ্জ্’ ধাতুর অর্থ হ’ল মিলিয়ে মিশিয়ে যুক্ত করে দেওয়া (to unify)৷ যেমন জল আছে, সিরাপ আছে, মিছরি আছে৷ তিনে মিলে হয়ে গেল সরৰৎ৷ এতে তিনের কারও পৃথক অস্তিত্ব থাকছে না৷ তাই একে ৰলি unify৷ ‘যুঞ্জ্’+ ঘঞ্ করে আমরা ‘যোগ’ শব্দ পাচ্ছি---তার মানে to unify৷ জীব যখন ঈশ্বরে মিশে যায় তাকে যে যোগ ৰলা হয় সেটা এই যোগ অর্থাৎ unify---to unify নয়৷
‘‘সংযোগো যোগ ইত্যুক্তঃ জীবাত্মা-পরমাত্মনঃ৷’’
(১২) ‘যুঞ্জ্’ ধাতুর মানে হচ্ছে মিলেমিশে যাওয়া, লেপটে থাকা৷ কিছু বস্তু আছে যা খুবই চটচটে ভাবারুঢ়ার্থে সেগুলির জন্যে ‘যুঞ্জ্’ ধাতু ব্যবহৃত হয়ে থাকে৷ উদরাময় হলে লোকে যে ৰার্লি খেয়ে থাকে তাও চটচটে জিনিস৷ তাই এই জন্যে ‘যুঞ্জ্’ ধাতু+ অচ্ প্রত্যয় করে আমরা যে ‘যব’ শব্দ পাচ্ছি তার ভাবারুঢ়ার্থ হচ্ছে চটচটে বস্তু আর যোগারূঢ়ার্থ হচ্ছে যব বা ৰার্লি৷ এই অর্থে ‘যুঞ্জ্’+ ড করে যে ‘য’ শব্দ পাই তার একটি মানে ‘যব’৷
(১৩) ‘যোগ’ শব্দ থেকে ‘য’ প্রত্যয় করে ‘যোগ্য’ শব্দ আসছে৷ যোগ্য মানে দক্ষ, ৰরণীয়, সম্মানিত, কোন কাজের জন্যে উপযুক্ত ৰলে যে বিবেচিত যোগারূঢ়ার্থে ‘গুণশালী’৷
(১৪) ‘যা’ ধাতুর একটি ভাবারূঢ়ার্থ হ’ল দ্রুত চলা৷ আলোক খুব দ্রুত চলে৷ তাই ‘যা’ ধাতু+ ড প্রত্যয় করে যে ‘য’ শব্দ পাচ্ছি তার একটি অর্থ হ’ল ‘আলোক’৷
(১৫) কোন বস্তুর ওপর আলোকপাত হলেই সেই বস্তুর সংস্থিতি ও তার কাটছাঁটের ওপরে নির্ভর করে তার জ্যোতিঃ বিকিরণ যেমন একটু ৰড় আকারের হীরকখণ্ড থেকেও ভালভাবে জ্যোতিঃ বের হবে না যদি হীরকখণ্ডটিকে ঠিকভাবে কাটা না হয়৷ মণিমাদিক্য ও অন্যান্য অনেক বস্তু থেকেই যখন (যে কোন কারণেই হোক) দ্যুতি বিচ্ছুরিত হয় তখন সেই দ্যুতিকেও (refracted light) ‘যা’ ৰলা হয়৷ এটিও ‘যা’ ধাতু+ ড প্রত্যয় করে আসছে৷
(১৬) ‘যম্’ ধাতুর অর্থ নিয়ন্ত্রণ করা৷ যে সৰ কিছুকে নিজের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখে তার জন্যে ‘যম্+‘ক্তিন্’ করে ‘যতি’ শব্দ ব্যবহৃত হয়৷ ‘যতি’ মানে সন্ন্যাসী এতদর্থে ‘যম্’+ ‘ড’ করে যে ‘য’ শব্দ পাচ্ছি তার মানেও তাই ‘সন্ন্যাসী’৷
(১৭) ‘যম্’ ধাতুর বিশেষার্থে নশ্বর বস্তু ত্যাগ করাকেও ৰোঝায়৷ তাই ‘যম্’ ধাতু+‘ড’ করে যে ‘য’ শব্দ পাচ্ছি তার আর একটি মানে হচ্ছে ‘ত্যাগ করা’ বা যার মধ্যে ত্যাগের মনোভাব জেগেছে৷ (শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)