অসুবিধা তো সেই বাঙলাদেশীদের নিয়ে!

লেখক
বঙ্গকন্যা অনন্যা

মূল অসুবিধা তো সেই বাঙলাদেশীদের নিয়ে, সে তো হবারই কথা৷ দেশভাগের পর থেকে বাঙলায় আসা পূর্ব পাকিস্তান বাসীরা (অধুনা বাঙলাদেশ) যদি পাঞ্জাবীদের মত প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ বাসস্থান ও নিঃশর্ত নাগরিকত্ব পেয়ে যেত সকলে তাহলে তো আজকের শরণার্থী সমস্যাই থাকতো না৷ কিন্তু অদ্ভুত ভাবে বিগত বছর ধরে বাঙলার রাজনৈতিক দলগুলি বাঙলা ও বাঙালীর জন্য জোরালো দাবী করে এই অধিকার আদায়ের চেষ্টাই করেনি৷ হয়তো জাতীয় স্তরে পদের লোভে৷ বরং স্থানীয় যে দল বাঙলা ও বাঙালীর হয়ে লড়ে এসেছে তাদের সমর্থন করা তো দূর  উল্টে বিরোধিতা করেছে৷ শুধু ভোটের লোভে বহিরাগতদের প্রাধান্য দিয়ে স্থানীয় ভাষা সংস্কৃতি ও স্থানীয় ভূমিপুত্রদের অবহেলা, অবজ্ঞা করে এসেছে৷ নির্লজ্জতার প্রতিনিধিত্ব করেছে কেন্দ্রে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে৷ তাই আর যাই হোক যারা প্রতিনিধিত্বের নামে প্রতিনিধিত্বই করেনি, বাঙলার স্বার্থে দাবী আদায়ে সচেষ্ট ছিল না, তারা সমর্থন পাওয়ার অধিকার আগেই হারিয়েছে৷ অবাধ অনুপ্রবেশ ঘটেছে বা ঘটছে, ভারত নেপালের খোলা সীমান্ত দিয়ে৷ দুই বাঙলার মাঝে রক্ষীদের ওপর সন্দেহ কোন সরকারই প্রকাশ্যে করতে পারেনি৷ অসমের কিছু অংশ বাঙলার৷ অসম প্রদেশ গঠিত হওয়ার সময় বাঙলার ভূমি জনজাতি দিয়ে সাহায্য করা হয়েছিল, তাই অসমীয়া ভাষা ও স্থানীয় জনজাতির ভিত্তিতে অসম তৈরী হয়নি, কিন্তু আমাদের পশ্চিমবঙ্গ ভাষা ও স্থানীয় জনজাতির ভিত্তিতে তৈরী হওয়া রাজ্যে৷ প্রতিটি বাঙালী নিজের মায়ের জায়গায়  বসবাস করে৷ কোন বহিরাগতর দখল করা জায়গায় নয়৷ যদিও নেহেরু মনে করতেন বাঙালীরাই বহিরাগত৷  অসমিয়ারা সেটাই চাইছে তাদের ভাষা সংস্কৃতি ও স্থানীয়দের জীবিকা সুরক্ষিত ও সংরক্ষিত করতে যেটা পশ্চিমবঙ্গের জন্যে লিখিত ভাবেই আছে কিন্তু আগে প্রযোজ্য হয়নি৷ সাথে ভীতু রাজীব গান্ধীর করে যাওয়া অযৌক্তিক অসম চুক্তি যদি লাগু হয় তাহলে নব্য সংশোধিত আইন অনুযায়ী বাঙলাদেশী (অমুসলিম) শরণার্থীরা কোথায় যাবে? আমাদের মাননীয়ার আশ্রয়ে আসতেই পারে৷ কিন্তু তার জন্য অসমকে দান করা জমিও ফেরত দিতে হবে বাঙলায়৷ একাধিক পার্শ্ববর্তী রাজ্যে বাঙলার জমি ঢুকে আছে সেগুলো বাঙলায় আগে ফেরানো হোক---এই দাবী করুক বাঙলার প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিরা৷ নাহলে নব্য প্রজন্ম কিন্তু তাদের আর ক্ষমা করবে না৷

বিঃদ্রঃ-ভারতের যা আর্থিক দৈন্যদশা চলছে কয়েক দশক ধরে, মুসলিম রাষ্ট্র থেকে অর্থের কারণে মুসলিমদের অনুপ্রবেশ, কোন দেশের শিশুরাও বিশ্বাস করবে না৷ অন্য কোন মানবিক কারণে অনুপ্রবেশ ঘটে থাকলে বিশেষ নীতি এনে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা প্রগতিশীল সমাজে অবশ্যই কর্তব্য৷ এখন এতো বিভেদ থাকলেও ভবিষ্যতে ভারত এশিয়া তথা সমগ্র বিশ্বে আর বিভেদ থাকবে না৷ এই পৃথিবী সর্বত্র সকলের জন্য একদিন তৈরী হবে বিশ্বরাষ্ট্র৷ তবে দেরী আছে৷ মানব মস্তিষ্কের আরও বিকাশের পর মানব সভ্যতা আরও উন্নত হবে৷ আমাদের একাধিক মনীষীর ভবিষ্যৎবাণী বৃথা হবার নয়৷

---নমস্কারান্তে বঙ্গকন্যা অনন্যা