বাঙালী-বিদ্বেষী বাম-সরকার চরম স্বৈরাচারী

লেখক
হরিগোপাল দেবনাথ (ত্রিপুরা)

রাষ্ট্র বিজ্ঞানে  এরকম  আইডিয়া  প্রচলিত যে ক্ষমতা শাসক শক্তিকে দুর্বৃত্তায়নের পথে ঠেলে দেয় ৷ বস্তুত, এ মন্তব্যটি সকল জায়গায় আর সকলের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযুক্ত হবে জোর দিয়ে  বলা যায় না, কারণ নীতিবাদী আদর্শপরায়ণ ও সংযতন্দ্রিয়  হলে সেই ধরণের চলাফেরা অবশ্যই ব্যতিক্রম না হয়ে পারেন না৷  তবে আমাদের রাজ্যের তথা কথিত ‘বাম’ নামের শাসক গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে যে উপরিউক্ত মন্তব্যটি শতকরা একশ ভাগই সত্যি, এর  অসংখ্য নজির এত ব্যাপকভাব ছড়িয়ে রয়েছে যে,  তা বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না৷  আর তাদের দুরাচার বা দুবৃর্ত্তায়নের   তালিকা তৈরী করা এই মূহুর্তে আমার ইচ্ছাও নয়৷  এই পরিসরে আমি শুধু  এটুকু দেখবার চেষ্টা করবো যে, ক্ষমতালোভী শাসকগোষ্ঠী হিসাবে তারা কতদূর দুরাচারকে অবলম্বন করেছেন৷ 

অতি সম্প্রতি  ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা নিয়ে  আলোচনাটি শুরু করেছি৷  সেই ২৩শে আগষ্ট দিনটির  ঘটনা৷ ঐদিন রাজ্যের আই পি এফ টি দল  তাদের দলের  প্রতিষ্টা দিবস পালন করতে  রাজধানী শহরে মিছিলের  ডাক দেয়৷  গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোতে তারা তাতো করতেই পারেন৷  এই নিয়ে কারোরই কিছু বলার থাকতে পারে না৷  কিন্তু কার্যক্ষেত্রে রাজধানীবাসী কি দেখলেন? মিছিল চলাকালীন তারা রাস্তার পাশের দোকানে ভাঙচুর চালালেন , রাস্তার পাশে রাখা লোকজনের গাড়ীগুলিতে আগুন ধরিয়ে দিলেন, নিরীহ পথচারী  নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিচারে মারধর শুরু করলেন, যারফলে অন্তত জনা পঞ্চাশেক আহত হন৷  প্রায় ২০/২৫জনকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়৷  কেন ? কেন এইরূপ জংলীপনা ও জল্লাদীপনা? তাদের আক্রোশ মেটাবার সাধ জাগল কেন?  আর কারাই বা ছিল তাদের আক্রমণের লক্ষ্য? হিংসা ও বিদ্বেষের এত উগ্ররূপ দেখিয়ে এইরূপ উচ্ছৃঙ্খল ,অভব্য, অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক আচরণ কেন করলেন?  কি ছিল তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য? ঘটনার মূহুর্তে নাকি রাজ্যে বাম-সরকারের উর্দি-পরা পুলিশ পুংরা উপস্থিতও ছিলেন, তবে নীরব দর্শকের ভূমিকায় ৷ কেন?  এ থেকে কী প্রমাণিত হয়? তারপরও  এখনও পর্যন্ত দোষীদের কোনও গ্রেফতার নেই, কারোর নামে কোন অভিযোগও আনা হয়নি৷ এর থেকেই কি রাজ্য সরকারের ও তার প্রশাসনের ভূমিকার চিত্র ফুটে উঠেনি? পরবর্তীকালে যে ২৮ জনের ফটো পুলিশ যোগাড় করেছে, এরা কারা?  কোথাকার ছবি ? কী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ? সবচেয়ে বড় প্রশ্ণটা হল  উক্ত আই.পি.এফটি দলের  জংলীবাহিনী এর পূর্বেও দু দু বার একই কায়দায় শহরে মিছিল করতে এসে  প্রকাশ্য দিবালোকে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে গিয়ে  প্রশয় পেয়ে গেছে৷  এবারও  দেখা গেছে লোহার রড , লাঠিসোটা ও টাককাল  নিয়ে মিছিলে নাচ দেখালেন৷ এতেই বা কি প্রমাণ হয়? পুলিশের কাছ থেকে এসবের অনুমতি কিভাবে পেলেন? আর,  যদি বিনা  অনুমতিতেই  অস্ত্র-শস্ত্র এনে থাকেন,  তারপরও  বাম সরকারের পুলিশের নিস্ক্রিয় অবস্থানের পেছনে  মূল রহস্যটা কী ছিল?  আমার এসব প্রশ্ণ আগরতলা শহরবাসী ও রাজ্যবাসী সুধীজন  আদলতের কাছে?  আপনারাই বলুন , আমরা কেমন রাজ্যে বাস করছি?  কেমন প্রশাসনে  দিন কাটাচ্ছি?  রাজ্যসরকার বাহাদুরের মনন---মানসিকতা  কোন খাতে বইছে?

তার পরের ঘটনা মর্র্মন্তিক ও গণতন্ত্রের পক্ষে অতি ভয়াবহ৷ উক্ত ২৩শের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যের ‘আমরা বাঙালী’র দলের পক্ষ থেকে গত ২৫শে আগষ্ট ২০১৬ সালে রাজধানী শহরে প্রতিবাদ মিছিল ও শকুন্তলা রোডে বিক্ষোভ সভা করার জানান দেওয়া হয়েছিল পুলিশ প্রশাসন থেকে ৷ এ নিয়ে উক্ত ওই ২৫শে আগষ্ট থেকে সকলে গেলে বলেন দুপুরে  আসুন , দুপুরে গেলে বিকেলে ও বিকেলে সন্ধ্যের পর ছাড়া হবে না, এখন মিছিল ও মিটিংএর অনুমতি দেওয়া যাবে না ইত্যাদি বলে বলে ২৯শে আগষ্ট এর রাতের বেলায় গিয়ে জানালেন আপনাদের অনুমতি দেওয়া হবে৷  সেই অনুসারে আমাদের রাজ্য কার্র্যলয় থেকে রাজ্যের সর্বত্র  খবর পাঠানো হলো ৩১শে আগষ্ট ২০১৬ তারিখে উক্ত কর্মসূচীর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে৷  তার পরের দিন  অর্র্থৎ ৩০শে আগষ্ট এ দুপুর ১২ টা নাগাদ এ.এন.পি ডি, পি,ও (সেন্ট্রাল)  থেকে লিখিত কাগজ দিয়ে জানালেন যে অনুমতি  দেওয়া গেছে ৷ কিন্তু তিনটি ঘন্টা কাটতে না কাটতেই আবার রাজ্য কার্র্যলয় খবর এল পুলিশের সঙ্গে  দেখা করতে, এবার গেলে আরেকটি কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলা হল যে আমাদের দেওয়া অনুমতি বাতিল করা হয়েছে রাজ্যের বা শহরের আইন শৃঙ্খলাগত কারণে৷  আমরা তো একে বারে থ বনে গেলাম৷ বুঝতেই পারিনি  পূর্র্বেক্ত তিন ঘন্টায় কিভাবে আইন শৃঙ্খলা কোথা দিয়ে তলিয়ে গেল৷ আমরা জানালাম তাদের যে রাজ্যের অনেক জায়গায় লোকজন  তৈরী হয়ে গেছেন ৩১শে আগষ্টের কর্মসূচীতে আসতে, অনেক জায়গায় গাড়ী রিজার্ভ করে  অগ্রিম বুকিং এর টাকাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে৷  তা হলে আমরা যে সাংঘাটনিক ভাবে অপরিমেয় ক্ষতি  সম্মুখীন হবো৷  এতে মনে হল পুলিশরাও খুশি হলেন, দু--একজন কানাকানি করলেন অতিসন্তর্পণে যে ---  কী করব বলুন , জানি অন্যায়  হয় যাচ্ছে, কিন্তু এটা ওপরওয়ালার নির্দেশ , আমরা নিরুপায়৷  তারপরও আমাদের কর্মীরা জবাব দেয় যে এর মধ্যে পুলিশের অনুমতি ক্রমেই টি.এম.সি দল অনুরূপ কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন৷  এমনকি শাসকদলও মিছিল-মিটিং করেছেন৷ তবে জানি না তাদের বেলায় অনুমতি লাগে কিনা বা আইন শৃঙ্খলার হাজার হোক  শাসকদল বলে কথা৷

এখানে স্বাভাবিক কারণে কিছু প্রশ্ণ উঠে এসেছে৷ গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোতে  যে কোন নাগরিক, যে সংস্থা, যে কোন রাজনৈতিক সংঘটনকে তার বা তাদের নিজের মতামত প্রকাশের অধিকার আমাদের সংবিধানই দিয়েছে৷ বাক্ স্বাধীনতা আমাদের মৌলিক অধিকার সেই অধিকার খর্ব করা, চাপা দেওয়া, কেড়ে নেওয়া  কি সংবিধানকেই লঙ্ঘন করা হল না?  রাজ্যের তথা ভারত-ডোমিনিয়নের  গণতন্ত্রকে চরম অপমান করা হল না? এ রাজ্যের পুলিশ প্রসাসনের এধরণের হঠকারিতা ও মামদোবাজী অতীত দিনের ভারতেব ব্রিটিশ শাসকদেরও হার মানিয়ে দিল না? ‘আমরা বাঙালী’ দল ভারতে একটি  রেজিষ্টার্ড রাজনৈতিক সংঘটন! তাহলে রাজ্য সরকারের কতটুকু স্পর্র্ধ যে এভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ভিতরে থেকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে একটি রাজনৈতিক দলকে তার কর্মসূচীকে অনুমোদন দিতে না দিতেই  অযথা কারণ দেখিয়ে  তার নাকোচ করে দেওয়া হল? এ রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের মাসোহারা জোটে এতে রাজ্যবাসীরও যৎকিঞ্চিৎ হলে অবদান রয়েছে৷  সেই অবস্থায় রাজ্যবাসীরই সামগ্রিক স্বার্থে ‘আমরা বাঙালী’ দল যে কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল তা রাজ্যের পুলিশ কর্র্তবাবুরা  তাদের ওপরওয়ালা অর্র্থৎ রাজ্যের  সাহেনশা  তথা উজিরই আজমদের দোহাই পেড়ে কেন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক  অন্যায়টুকু করলেন, এই বিষয় নিয়ে রাজ্যবাসীর  অবশ্যই  কিছু ভাবা আজ প্রয়োজন৷ কেন না , আমি দেখতে পাচ্ছি রাজ্যশাসক দল  তথা বিশেষ করে  সিপিএম দলটি ও তার নায়ক  আর হোমড়া-চোমড়ারা এতটাই স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছেন যে  চরিত্রগতভাবে তারা অতীতের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী  ও শোষকদের নিষ্ঠুরতা আর স্বৈরাচারীতাকে হার মানিয়ে যাচ্ছেন৷ এক কথায় ব্রিটিশ শাসকদেরই  বাঙালী বিদ্বেষের ছায়া বিশেষ আজকের এ রাজ্যের  শাসকগোষ্ঠী৷ আর এ রাজ্যের মুষ্টিমেয় সাচ্চা, সৎ প্রকৃতির চরিত্রবান নীতিবাদী কর্মী বা কর্মকর্র্ত ছাড়া বাদবাকিরা সকলেই নীতিবর্জিত  চরিত্রভ্রষ্টদের দলে ভীড়ে গেছেন৷ উল্লেখ যে এদের মধ্যে একটা অংশ রয়ে গেছেন যারা  নারী ধর্ষনের দায়  অভিযুক্ত টি.সি.এস সরকারী তহবিলের টাকা চুরির দায় অভিযুক্ত  টি.সি.এস বা সিবি আই এর নজরে দোষী বলে  এস আই এ. এস  বা  আই পি এস ইত্যাদি৷ আর  তাদেরই সঙ্গে যুক্ত আছেন  ছোট-খাটো ছা-পোষা, অর্ধস্তন উর্দি-ওয়ালা আর  কিছু সংখ্যক  খয়ের খাঁ ছা-পোষারা৷

ত্রিপুরার বাম-শাসকদের স্বৈরাচারিতার একটিমাত্র নমুনা এতক্ষন বিবৃত হল৷  এ জাতীয় আরও  ভুরি ভুরি  নজির রয়েছে৷  জানি না সুধী পাঠকবৃন্দ লেখাটি পড়ে কে কি ভাবতে শুরু করেছেন৷ আমি কিন্তু ? বলছি যে,  আজ এসব ব্যাপার নিয়ে প্রতিটি  বিবেকবান নাগরিক মাত্রেরই ভাবার  কিছু রয়েছে  কার্যকরী পদক্ষেপও কিছু নেবার রয়েছে৷  কেননা আমি নিজে শুধু বাঁচবো আর থাক বিপদ অপরের ঘাড়ে এই বলে শাসকের মতো নিজেকে গুটিয়ে রাখার  মধ্যে আর যাই থাকুুক তাতে প্রকৃত মানবত্বের  ছোঁয়া পাওয়া যায়না৷  কেননা মানুষের জীবন নেহাৎ  মৈথুন প্রক্রিয়ার  অনিবার্য পরিণতি নয়, দৈবক্রমে ঘটে যাওয়ার মতো কোন দুর্ঘটনাও নয়৷  মানুষের জীবন হলো একটি আদর্শ প্রবাহ () সুতরাং নিজেকে গুটিয়ে রাখার মধ্যে নয়, বরং পূর্ণ প্রস্ফুটিত  পুষ্পের মতই পাপড়ি প্রকাশ  পায়৷  মূলত মানুষের জীবনটা সার্থক হয়, কর্ম মানে  মহৎকর্ম, সেবা ও ত্যাগের  মহিমায়৷ মনে রাখা প্রয়োজন যে , জড়াভিমুখী ও ভোগবাদে বিশ্বাসী, ঈশ্বরতত্বে বিমুখ মাকর্সবাদীরা প্রকৃত অর্থেই অসংযত চরিত্রের হওয়াতে তারা অতিসহজেই দুনীর্তিগ্রস্ত, হঠকারী, স্বৈরাচারী হতে দ্বিধাবোধ করে না৷

বামেদের স্বৈরাচারিতার আরেকটি বড় নজির কিছুদিন  পূর্বে ঘটে যাওয়া উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুরের কাশীরামপুরের  নৃশংস ঘটনা৷ ওই  দুপুর বেলায় কিছু সংখ্যক  উন্মত্ত রিয়াং শরণার্থী অতর্কিতে দা-বল্লম-টাককাল হাতে নিয়ে ওখানকার বাঙালী গ্রামবাসীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে৷ সশস্ত্র আর জংলীপনায়  আক্রমন হতে দেখে গ্রামবাসীরা  এ অবস্থায়  প্রাণ বাঁচাতে ছুটে গিয়ে  পার্শ্ববর্তী  টি, এস,এস আর ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়৷ নারী পুরুষ শিশু আর বৃদ্ধ যার পরনে যা ছিল  তা নিয়েই প্রানের দায়ে তারা ছুটে পালিয়েছিল৷ টি এস আর রাইফেলধারীরা দাঁড়িয়ে  সব দেখেও গাছের  মত ঠায় দাঁড়িয়েছিল, কারোর কিছু করার ছিল না কারণ ওপর থেকে কিছু না করার হুকুম ছিল৷ জংলীরা একের পর এক  একুশটি পরিবারে লুন্ঠন চালিয়ে বাড়ির  জিনিসপত্র  নিয়ে যায় ৷ তাদের পরিবারগুলোর মোট ১৭৬টি গরুও ওরা লুঠে নিয়ে যায়, পরে শোণা যায় গরুগুলো লুটে তারা বাংলাদেশে পাচার করে দিয়ে টাকাগুলি আত্মসাৎ করে৷ এদেরই পিছনে পিছনে আরেকটি গ্রুপ এসে এলাকাবাসীদের ঘরগুলিতে আগুন  ধরিয়ে দেয়৷ এভাবেই বামজমানায় এযুগেও জতুগৃহদাহের পর্ব সমাধা হয়৷

কিন্তু মর্র্মন্তিক ব্যাপার হল তারও পরে৷ টি এস আর ক্যাম্পের ভেতরেই  ওই ঘরপোড়া আশ্রিত লোকেদের ঠাঁই হল এককাপড়ে নারী-পুরুষের গাদাগাদি অবস্থায়৷ এভাবেই ওদের দিন কাটছিল৷ তারা তখন কী খেয়ে প্রাণ  বাঁচায় আজও জানা হল না৷ লোকমুখে শুনেছি তিনটি দুগ্দপোষ্য শিশুরও কোন খাবার হাতের কাছে ছিল না৷  আমরা বাঙালী দল থেকে কর্মীরা তখন আগরতলাতেই পুলিশের ওপর মহলে দাবী জানিয়েছিলেন যাতে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হয়ও ক্ষতিগ্রস্তদের  উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ  পুনর্বাসিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়৷ তারপর স্থানীয়  কর্মীরা  উত্তর ত্রিপুরার পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে ও বার বার দ্বারস্থ হন, যাতে কিছু রিলিফ পৌঁছে দেওয়া যায় হামলার শিকারগ্রস্তদের কাছে৷  এতেও কারোর সাড়া পাওয়া যায় নি প্রথমদিকে  এক নাগাড়ে কিছুদিন৷ এখন, ওই লোকগুলির কী হাল আশা করি আপনাদের অনেকেরই জানা হয়ে গেছে ,  সবচেয়ে বিস্ময়ের আর  দুঃখের ব্যাপার৷ পরবর্তীকালে ওখানকার বাম-কর্মী ও রাজনীতির বোয়ালদের  হাবভাব থেকে  পরিস্কার হয়ে গেছে যে,  ওই এলাকাকে  বাঙালীমুক্ত করাটাই  ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য, আর সেজন্যেই কথাবার্তা বাঙালীমুক্ত করাটাই ছিল  মুখ্য উদ্দেশ্য  আর সেজন্যেই   পরিকল্পিত নাটক সাজানো হয়েছিল  একটি রিয়াং যুবককে মাছ চুরির ঘটনা দিয়ে৷ সত্যি, বামেদের এরূপ দুবৃর্র্ত্তয়নের দুবুদ্ধির তারিক না করে পারা যায় না৷ তবে স্বৈরাচারিতায়  তারাও যে অলিম্পিয়া তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷

বাম-শাসকদের স্বৈরাচারিতার আরও  কতিপয় দৃষ্টান্ত  তুলে ধরা যাক৷  অল্প পরিসরে বিস্তৃত ব্যাখার সুযোগ  নেই কিনা তাই৷  একটা ব্যাপার সবাই মেনে নেবেন যে, গত ২০/২৫ বছর ধরে  এ রাজ্যে স্কুল কলেজ ও ইউভার্সিটিতে ছাত্র-সংসদে এক চেটিয়া একটিই ছাত্র সংস্থার  সাম্রাজ্যবাদ চলছে ৷ কীভাবে যে চলছে  কেউ মুখ খুলে না বললেও  ভেতরে ভেতরে সকলেই  উত্তমরূপে জানেন৷  এ হল বাম-শাসকগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ  নাগরিক তৈরীর শিক্ষা৷  তাদের দলভুক্ত না হওয়ায়  রাজ্যের এক কলেজে পড়া ছাত্রের মুখে তারই  সতীর্থ ও সুযোগ্য বাম-ভক্ত ছাত্ররা পেচ্ছাপ করে  তাকে খাওয়ায়৷ ইদানিং আগরতলার  রাম ঠাকুর কলেজের  কান্ড  সবাই জেনেছেন৷  চন্দ্রপুরের জয়ন্তী বাজারের বিশালগড়ের পাশে এক পঞ্চায়েতের সিপিএম ক্যাডার  কর্তৃক নারী-নিগ্রহের চিত্রও আশাকরি আপনাদের স্মৃতিপটে জায়গা করে রেখেছে৷ এছাড়া প্রশাসনের হাতেই এ রাজ্যের বেকার-শায়েস্তা, কর্মচারী হেনস্তা ও সীমান্ত এলাকার কাঁটাতারের জন্য বাম-প্রভুদের দৌরাত্মের  শিকার নিরীহ ছা-পোষা মানুষদের অসহায়ত্বের কাহিনী কারই বা অজানা৷ কিন্তু, সবই আমরা নীরবে হজম করি, কেন না রাজ্যে চলছে বাম-জমানা৷