বর্তমান পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত জিটিএ চুক্তি সম্পূর্ণ বাতিল করা

লেখক
নিজস্ব প্রতিনিধি

গত ১২ই সেপ্ঢেম্বর শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় সর্বদলীয় বৈঠকে বিমল গুরুং বেশ বড় ধাক্কা খেলেন৷ গুরুং-কে বাদ দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের  জন্যে মিটিং করলেন৷

গোর্র্খল্যান্ডের ব্যাপারে  কোনো আলোচনা হ’ল না৷ বিমল গুরুং-এর দাবী ছিল, গোর্র্খল্যান্ড ছাড়া আর কোনো ইস্যু নিয়ে যেন আলোচনা না করা হয়৷ কিন্তু মোর্র্চ নেতা বিনয় তামাং পরিস্থিতি বুঝে গোর্র্খল্যান্ড দাবী তুললেন না, পরিবর্তে অন্যান্য  কিছু দাবী রাখলেন ৷ মমতাও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিনয় তামাংয়ের দাবী মেনে নেন ও আগামী ১৬ই অক্টোবর  আবার নবান্নে বৈঠকের তারিখ স্থির করে দেন৷ এদিকে বিমল গুরুং যে গোর্র্খল্যান্ডের  দাবীতে পাহাড় বনধের  ব্যাপারে অনড় ছিলেন, ক্ষুব্ধ জনসাধারণই ধীরে ধীরে নিজেরাই বাঁচার  তাগিদে দোকান পাট  খুলতে শুরু করছে কেনাকাটাও শুরু করেছে৷ অবশ্য এব্যাপারে বিনয় তামাং-এর সমর্থন মিলেছে৷ বোঝা যাচ্ছে, বিমল গুরুং-এর হাত থেকে পাহাড়ের  আন্দোলনের রাশ সরে যাচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে বিমল গুরুং  জনতার কার্ফুর হুমকি দিচ্ছেন ৷ কিন্তু  বেশিরভাগ পাহাড়ের  মানুষই এখন পাহাড়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে উদ্গ্রীব৷

১২ই সেপ্ঢেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে হাজির ছিলেন মোর্র্চর বিনয় তামাং, অনিত থাপা ছাড়াও জনআন্দোলন পার্টি, জি . এন.এল.এফ, গোর্খালীগ প্রভৃতি পার্টি৷  মোর্র্চর তিন বিধায়কের মধ্যে ২ জন বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন৷

বিনয় তামাং এই সুযোগে  মমতার কাছ থেকে   যে সমস্ত দাবী আদায় করে নেয়, তার মধ্যে আছে---

 ১) আন্দোলনে যাঁরা মারা গেছেন, তাদের পরিবারকে  ক্ষতিপূরণ৷

২)১৫ই সেপ্ঢেম্বরের মধ্যে পাহাড়ে, যাঁরা সরকারী কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের ১ মাসের টাকা অগ্রিম৷

৩) সমস্ত চা বাগানে  গতবারের ও এবারের বোনাস যাতে পাওয়া যায় সে ব্যাপারে বাগান মালিকদের ওপর যেন সরকার  চাপ দেয়৷

৪) রেশন ব্যবস্থা বন্ধ করা, ইত্যাদি কিছু কিছু দাবী৷

তবে এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে কঠোর মনোভাব নিয়ে চলতে হবে৷ বাঙলা ভাগ তো করা চলবেই না, এই সুযোগে  জিটিএ বাতিল করে  গোর্র্খল্যাণ্ডপন্থীদের্  আর তোল্লা দেওয়া ঠিক হবে না৷ এটা তো গোর্র্খদের  আদিভূমি নয়, এরা বহিরাগত৷ তাই ‘গোর্র্খল্যান্ড’ নামকরণের  কোনো যৌক্তিকতাও  নেই৷ আগে যে ভুল হয়েছিল, সাম্প্রতিক হিংসাত্মক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে ও  গুরুং যখন নিজেই জিটিএ পরিত্যাগ করেছে--- এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ‘জিটিএ’ চুুক্তিটাই পুরোপুরি নাকোচ করা উচিত৷ এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে পরবর্তী কালে আবার গোর্র্খল্যান্ড আন্দোলন মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে৷