বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দলবাজি আছে, গণতন্ত্রই নেই!

লেখক
প্রভাত খাঁ

স্মরণে রাখা উচিত প্রত্যেক নাগরিকের যে গণতন্ত্র আর দলতন্ত্র এক নয়, কারণ দলে দলবাজি ও দলাদলিটা হলো মূললক্ষ্য যাতে দলগুলি দলীয় স্বার্থে দেশের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে সেই একনায়কতন্ত্রকে দলের নেতা ও কর্মীদের  স্বার্থে কাজে লাগাতে পারে৷ আর এই করতে তারা সকলে মিথ্যা ‘গণতন্ত্র’ গণতন্ত্র বলে মানুষকে ভুলিকে রেখে সেই শাসন ব্যবস্থাকে দলীয় স্বার্থে কাজে লাগাতে পারে৷ বর্তমানে দেশে চলছে সেই নোংরাদল বাজির নায়ক দলতন্ত্রী শাসন আর সেই বিরোধী দলগুলিও তাদের মতো শাসন ক্ষমতা হারিয়ে গদী লাভের স্বার্থেই কেবল কুৎসা, ছল বল কৌশলে শাসক দলের ও অন্য বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক উক্তি করে জনসমর্থন পেতেই কাজ করে, কিন্তু জন সংযোগ করে না৷ খবরের কাগজে নানা ধরণের উক্তি করেই তারা দেশ সেবক হয়ে বাজিমাৎ করতেই ব্যস্ত থাকে৷ আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতায় দেখে আসছি দীর্ঘ ৭৬ বছর ধরে এই দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিকে যখন শাসনে আসে তখন তাদের টিকিটি দেখা যায় না৷ জন সংযোগের সেই বোটার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে৷ কিন্তু বোট এলেই যেন জনসমর্থন পেতে বোটার সঙ্গে কিছুটা সম্পর্ক রাখে বোট পেতে আর জয়লাভ করতে৷ তাই বলি বোটের সময় জনগণ অর্থাৎ গণতন্ত্র আর শাসন হাতে এলেই সেই দলের নেতানেত্রীগণ সমর্থকগণ হয়ে যায় দলের অন্য কারোর নয়৷ একের বেশী নির্বাচনে জিতলেই কোন রাজনৈতিক দল হয়ে যায়  স্বেচ্ছাচারী দলতন্ত্রেরই শাসক আর দেশের সিংহ ভাগ বোটারদের নানাভাবে শোষণ করার যা দিকে দিকে বাস্তবায়িত করে প্রয়োজন পবিত্র সংবিধানের ধারা ও আইনকে সংখ্যা জোরে পালটিয়ে সংবিধানকে পাশে রেখে শাসনের নামে শোষন চালায় কেবলমাত্র ধনতন্ত্রের সেবাদাস হয়ে, সমাজতন্ত্রের ধারদিয়েই চলে না৷ তাই মাত্র কটা বছরে ভারতের সংবিধান হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন ছেঁড়া সংস্কারের জ্বালায় একটি পুষ্প বিশেষ৷ মনে রাখা দরকার আমেরিকা গণতান্ত্রিক দেশ তাদের গণতন্ত্র কয়েক শতবছরের কিন্তু পবিত্র গণতন্ত্র এর সংবিধানটি মাত্র বার তিনেক সংস্কারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বিশেষ! আমাদের দলীয় নেতা নেত্রীগণ সেটা রক্ষা করতে পারেননি নিছক দলীয় স্বার্থে! ভারতের বুকে যে বিরাট দেশটি লোকসংখ্যা ১৪২ কোটি মতো৷ সেখানে দলতন্ত্রী শাসকগণ ভাবনা চিন্তা না করে গদীতে আঁকড়ে থাকতেই সেই ইন্দিরার মতো জরুরী অবস্থা জারির মতোই বিরোধীদের অস্বীকার করে নানাভাবে বাকস্বাধীনতাকে হরণ করে সেই সাম্প্রদায়িকতার সেবক হয়ে ছলবল কৌশলে এক জরুরী কালিন অবস্থার সৃষ্টি করে শাসন ব্যবস্থায় কব্জায় রাখতে যেন সদা ব্যস্ত৷ হিন্দুত্ববাদী কেন্দ্রের বিজেপি শাসকদের সেই দশা! এরা কথায় কথায় মহামান্য বিচার বিভাগকে অস্বীকার করে অর্ডিনেন্স জারী করে বসে সাংবিধানিক অধিকারকে নিজেদের হাতে রাখতে৷ দিল্লির কেন্দ্রীয় শাসিত রাজ্যে তাই হয়েছে৷ ইন্দিরা যেমন কথায় কথায় কেন্দ্রের সিবিআই ও অন্য তদন্ত সংস্থাকে দিয়ে রাজ্যে রাজ্যে তদন্তের নামে আতঙ্ক ছড়াতেন জরুরীকালিন অবস্থায় এই কেন্দ্র সরকার তাই করে যাচ্ছে! বিরোধী দলের লোকদের বিশেষ করে সাংবাদিক ও লেখক যাঁরা নিরপেক্ষভাবে গণতান্ত্রিক পথে দেশের কল্যাণে ও সংবিধানের স্বার্থে লিখছেন তাঁদের ও নানাভাবেই আটক ও হেনস্থা করা হচ্ছে৷ এর অসংখ্য প্রমাণ নানা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ও হচ্ছে৷ তবে প্রসঙ্গত বলি এই রাজ্য দলছুুট তৃণমূলের প্রাক্তনমন্ত্রী ও সদস্য বিধায়কগণ বিরোধী আসনে বসেও বিরোধীদলের নেতা হয়ে যে সব কাণ্ড করে চলেছে সেটা কিন্তু সচেতন বাঙালী নাগরিকগণ মোটেই পছন্দ করছেন না৷ বিরোধী দলের নেতাদের তো এটা কাজ যাতে নাগরিক গণ যাঁরা দরিদ্র ১০০ দিনের কাজ করে বেঁচে আছেন তাঁদের টাকাটা সবটা কেন্দ্রের আটকে না রেখে দেওয়া যাতে তারা বাঁচতে পারে৷ তা না করে তারা কেন্দ্রকে বলেছেন ১০০দিনের কাজের টাকা বন্ধ রাখুক কেন্দ্র সরকার যেটা বিরোধী নেতা প্রকাশ্য বলে সংবাদপত্রে জানান দিচ্ছে যে কতো বড়ো করা হলো! এটা কিন্তু নেতার কাজ নয় কারণ এদেশের মানুষরাই বোট দিয়ে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছেন তাদের৷ তাদের জনসেবা করা কি কাজ নয় সেই নেতা বা নেতাদের! অভিযোগ এ ব্যাপারে রাজ্যের টাকার হিসাবে গণ্ডগোল আছে৷ রাজ্য সরকার বলছে তারা ১০০ দিনের কাজের সব হিসাব সঠিক সময়ে দিয়েছে কেন্দ্রকে৷ যদি কোন ত্রুটি থাকে তাতে কিছু টাকা আটকে রাখতে পারে কিন্তু সবটা নয়, এ টাকা পাওয়ার অধিকার রাজ্যের সাংবিধানিক অধিকার কিনেই বিরোধী দলের কি, শুধু রাজ্যে অশান্তি পাকানো আর সব কাজ কর্মে৷ বিরোধীতা  ও হইচই করা আর সব কাজে জটিলতা সৃষ্টি করা? এটা এরাজ্যের জনগণ পছন্দ করেন না৷ এটা একটা দলের নেতাদের কি ভাবা উচিত নয়?

স্মরণে রাখতে হবে যে চিরকালই এই বাঙালী---জনগোষ্ঠী---রাজনৈতিক সচেতন৷ তারা কেন্দ্রের শাসন সম্বন্ধে চিরকালই সচেতন তাই মনে করি এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা রাজনৈতিক সচেতনার পরিচয় দিয়ে জনগণের সেবা দেবেন তবে জনগণ তাদের সমর্থন জানাবেন৷ যদি অন্ধ ইয়েসম্যান হয়ে বিজেপি দল-এর সমর্থনকারীরা কেন্দ্রের সরকারে আছে বলে এই আত্ম অহংকার করে লাফালাফি ঝাঁপাঝাঁপি করে দলের নেতারা চলে তাহলে রাজ্য জনসমর্থন পেতে গিয়ে বোটারদের কাছ থেকে নিরাশ হতে হবেই৷ এরাজ্যের বোটারগণ সব দেখেন ও তার জন্য হয়তো কিছুটা সময় লাগবে কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্ত তারা নেবেন৷