‘‘বুলডোজার চালাবো’’ গণতন্ত্রে এ কেমন কথা? সত্যই কি দেশে গণতন্ত্র আছে?

লেখক
প্রভাত খাঁ

নির্বাচনে জেতার পরই উত্তরপ্রদেশে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ঘোষনা করা হয়৷ ‘ফের বুলডোজার চলবে’ যোগী রাজ্যে নিরীহ জনগণকে গত ৮ বছর ধরেই দেখছে সারা ভারতের বিশেষ করে ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে অসহায় গরীব জনগণের উপর ঐ বুলডোজারই চলছে৷ তাছাড়া বিজেপি বিরোধী রাজ্যগুলিতো চরম বঞ্চনার শিকার হয়েই শাসন চালাচ্ছেন৷ বর্ত্তমান কেন্দ্র সরকার তো পদে পদে সংবিধান বিরোধী কাজেই ওস্তাদ যার কারণে মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের ভৎস্নার শিকার হয়েই চলেছেন৷ দেখে মনে হয় কুসংস্কারাচ্ছন্ন  দু’কান কাটা জীব বিশেষ৷ এদের শাসনে হতভাগ্য গরিব নাগরিকগণতো সারাভারতেই জীবনমৃত হয়ে জীবন যাপন করে চলেছেন এরা ধনীদেরই সেবাদাস৷ এদেশে নির্বাচনটাই  যেন প্রহশনে পরিণত হয়েছে৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনগণ ৬০/৬৫ শতাংশ বোট দেন৷ বোট দানের আগ্রহটাই ধীরে ধীরে কমে গেছে৷ বিশেষ করে করোনার আক্রমণকালে৷ দেশের জনগণকে সেবাদেওয়ার চেয়ে বড়ো হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্বাচনে গদী সামলানো৷ দুর্নীতিতে দেশ ছেয়ে গেছে৷ চরম অত্যাচারিত শোষিত কর্সক নেতারাতো বোটে সাফল্যের দিনেও বিজেপিকে ধিক্কার দিচ্ছে৷ এদেশের নির্বাচনটাই হলো যেন এক ছল বল কৌশলে ও কালো টাকার জুয়া খেলা৷ কারণ যারা দু’েূবলা খেতেই পায়না তা অনেকাংশ বোট দিতেই যায় না৷ আর কোথাও কোথাও খুব ভীড় হয় যেখানে ঐ টাকার খেল হয়৷ বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে কোথাও কোথাও যে নক্কারজনককাণ্ড হয়েছে সেখানে নির্বাচনে যে ফল সেটাতে মানুষ হতবাক৷ তবে  হ্যাঁ সচেতন নাগরিক কিছুটা যে যে রাজ্যে আছেন সেখানে দাঁত ফোটানোটা যে কঠিন সেটা ধান্দাবাজরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে! ফলাফলে দেখা যাচ্ছে বিশেষ করে  উত্তরপ্রদেশে বহু আসনে অত্যন্ত কম মার্জিনে  বিজেপি আসন লাভ করেছে৷ প্রায় ২৫টি আসনে ২০০,৩০০,৪০০,৫০০,১১০০ তে জিতেছে৷ তবে আগের চেয়ে বিজেপির আসন সংখ্যা কিছুটা কমই হয়েছে৷ মনে রাখা দরকার হার জিত আছে তাই নির্বাচনের  পর বুলডোজার চালানোর হুমকীটা কি বলা সাজে?

সারা ভারতের জনগণ কি টের পাচ্ছেন না কেন্দ্র সরকার কি করে চলেছে৷ আদিখ্যেতার সীমা আছে! পঞ্জাবে কি হয়েছে? গোয়াতে তো হাড্ডাহাড্ডি৷ ২০ তাহলে?

ইন্দিরা গান্ধির আমলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সারা ভারতের চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে সেই  সময়ে লোক নায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ সারা ভারতে আন্দোলন গড়ে তোলেন৷ তখন শ্রী নারায়ণ পুলিশ বাহিনীকে বিবেকের দ্বারা পরিচালিত হতে আহ্বান দেন৷ তখন সারা ভারতে এক  ভয়ঙ্কর  ডামাডোলের সৃষ্টি হয়৷ তখন ঐ রাশিয়ার ইনধনে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে অভ্যন্তরীন জরুরী অবস্থা জারী করে সারাদেশকে কারাগারে পরিণত করেন৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী তাঁকে দীর্ঘ ২৩ মাসের পর নির্বাচন ডাকার কাণে মন্ত্র দেয়৷ সেই কারণে মিশা ডি.আই.আর আইনে আটক অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতারা জেলে বন্দী অবস্থায় নির্বাচনে বোট দান করেন দল ধর্মমত নির্বিশেষে৷ দেখা গেল ইন্দিরা জন সমর্থন হারিয়ে বসলো৷ জনতা দল আজকের বিজেপির পূর্ববর্ত্তী দল ভারতের শাসন লাভ করে৷ শেষে দেখা গেল সেই জনতা দল কেন্দ্রে শাসন চালাতে পারলো না যে দলকে জুম্মা মসজিদের ইমাম আবদুল্লা বুখারী বলেছিলেন গুলশানি ই গুলশান৷ আবার সেই ইন্দিরা ফিরে এলেন৷ আর সেই কমিউনিষ্টদেরই বাহির থেকে সমর্থনে দিল্লির তক্তে বসেন৷ এই হলো এদেশের নোংরা রাজনীতির এক ধারা৷ সেই কমিউনিষ্টরা বিশেষে করে সিপিএম জোট বাঁধে  এদের সঙ্গে  আজ তারাও জন সমর্থন হারিয়ে বসেছে এই জনগণের অনাস্থা হারিয়ে৷ আর কংগ্রেসও সমর্থন পাচ্ছে না জনগণের৷ তাই দলীয় শাসকদের স্মরণে রাখতে হবে বেশী বাড়াবাড়ি করলে জনগণের দেওয়া ফুলের  মালা একদিন সেই প্রত্যাখানের কাঁটার  মালা ভাগ্যে জুটবে৷ এটা সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের  যেন স্মরণে থাকে৷ এই পশ্চিমবাঙলায় বিজেপি কেন্দ্রে শাসনে এসে টাকার খেলায় তৃণমূল দলকে একেবারে শেষ করে দিতে নাস্তানাবুদ করে দলভাঙ্গাভাঙ্গী করে ও করোনারকালে এই পশ্চিম বাংলায় রাজ্য নির্বাচনে যে রাজনৈতিক নোংরা খেলা খেলে গেল সব বিধিনিষেধ অমান্য করে তাতে কি হলো? এই পশ্চিম বাঙলার সচেতন নাগরিকগণ বুঝিয়ে দিল এ মাটি বড়ো শক্ত৷ এটা যেন আত্মহারা অহংকারী দলের স্মরণে  থাকে৷ নিয়তি কেন বাধ্যতে!