বর্তমান পৃথিবী এক ভয়ংঙ্কর অনিশ্চিতের মধ্য দিয়ে এগুচ্ছে৷ সারা পৃথিবী আজ প্রাণদায়ী পানীয় জল, খাদ্য, জ্বালানীর সংকটের মধ্য দিয়ে শুধু এগুচ্ছে তা কিন্তু নয়, সারা পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে৷ বর্তমান ভূমণ্ডলের জল ও স্থলের পরিবর্ত্তন ঘটতে পারে৷ নিম্ন এলাকাগুলি ডুবে যেতে পারে৷ মানুষের, গাছপালা জীবজন্তুর জীবনে আসতে পারে মারাত্মকভাবে অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ণ৷
প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন ভূমিকম্প, জলোচ্ছাসে অনেক কিছুই ধবংস হয়ে যেতে পারে৷ সেই কারণে মানুষের সমাজকে বেশ কিছুটা সজাগ ও সচেতন হতে হবে৷ পরিবেশ দূষণ ভয়ংঙ্করভাবে পৃথিবীতে বেড়ে গেছে৷ পৃথিবীর ভারসাম্য একেবারে ধবংস হয়ে যাচ্ছে৷ তাতে বহু ক্ষুদ্র প্রাণী ও খাদ্যশষ্যের ফলন ব্যাহত হচ্ছে৷ নোতুন নোতুন রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে৷
তাই বনসৃজনের দিকে নজর দেওয়া, ডিজেল, পেট্রোল যথেচ্ছভাবে যান চলাচলে ব্যবহার করা সম্বন্ধে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে৷ ছোট যানগুলি যাতে হুইলে চালনা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে৷ জাপান এই ব্যবস্থাকে ব্যাপক হারে চালু করেছে৷ ভূগর্ভস্থ জলের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে মাটির উপরের নদনদী, পুকুর পুষ্করিনী, হ্রদের জল ব্যবহার করতে হবে৷ বর্র্ষর জল ধারণের দিকে নজর দিতে হবে৷ এদেশের নদনদীগুলি জলধারণের ক্ষমতা হারিয়েছে বালি পড়ার দরুন৷ এগুলির সংস্কার জরুরী৷ এদেশে বর্র্ষর জলের প্রায় সবটাই সাগরে পড়ে৷ স্থলভূমিতে যৎসামান্য সেইজল সঞ্চিত হয়৷ তাই চাষাবাদে দারুণ জলের অভাব ঘটায় চাষী জলের অভাবে চাষাবাদ ঠিকমতো করতে পারে না৷ জলের অভাবে জলজ খাদ্যের ও উৎপাদনে ক্ষতি হয়৷
এদেশে মৌসুমী বায়ুর খামখেয়ালীপণার উপর কর্ষকদের দারুণভাবে নির্ভর করতে হয় তাই আশানুরূপ ফসল এখানে ফলে না৷ প্রান্তিক চাষীরা দারুণ আর্থিক সংকটকাল কাটায়৷
জলের অভাবে হাজার হাজার একরজমি অনাবাদি হয়েই পড়ে থাকে৷ ডি.বি.সি এর মতো বহুমুখী নদী উপতক্যা পরিকল্পনা বর্তমানে সংস্কারের অভাবে কৃত্রিম বন্যায় পশ্চিমবাংলার কয়েকটি জেলায় প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষের ঘর বাড়ির, রাস্তাঘাটের ও চাষাবাদের৷
এই ব্যাপারে দেশের জনগণ ও সরকারকে যৌথভাবে সচেতন হয়ে কাজ করতে হবে৷ গঙ্গা বিশেষ করে হুগলী নদীর নাব্যতা কমে যাওয়াতে নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, হুগলী, ২৪ পরগণার তীবরবর্তী এলাকার ভাঙ্গনে নদীগর্ভে চলে যাওয়াতে হাজার হাজার মানুষ গৃহহারা হচ্ছে ও চাষাবাদ ধবংস হচ্ছে৷ নদনদী, খাল, বিলের সংস্কার জরুরী৷ তাছাড়া বিভিন্ন নদনদীর সঙ্গে যোগ স্থাপন করে দেশের মধ্যে সেই জলকে যাতে চাষের কাজে ও শুদ্ধিকরণ করে পানীয় জলের যোগান দেওয়া হয় তাহলে পানীয় জলের অভাব দূর হতে পারে৷ এসবের দিকে আন্তরিকতার দারুণ অভাব৷ বর্ত্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বন্ধ করে দিয়েছে৷ যেগুলি এই পরিকল্পনায় সৃষ্টি হয়েছিল সেগুলির যথাযথ দেখভালের দিকে নজর আছে বলে মনে হয় না৷
বর্তমান যুগ হলো বিদ্যুতের যুগ৷ এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে৷ মাটির নীচের কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করাটাকে নিয়ন্ত্রণ করে আঞ্চলিক ভিত্তিতে সৌরশক্তি, বায়ুপ্রবাহ, নদনদীর জল হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাপক হারে করতে হবে৷ যাতে উৎপাদন ব্যয় কম হয় ও সারাদেশে বিদ্যুতের যোগান দেওয়া যায়৷
দারুণ খাদ্যাভাব ও বেকার সমস্যায় দেশ পঙ্গু হয়ে গেছে৷ ব্লকভিত্তিক পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করে তুলতে হবে৷ তার সঙ্গে কৃষি সহায়ক শিল্পকে বাড়াতে হবে৷ এই শিল্প হবে স্থানীয় কর্মক্ষম ব্যষ্টিদের দ্বারা৷ এটা হবে সমবায় পদ্ধতিতে স্থানীয় লোকেদের দ্বারা৷ যেমন আলু থেকে অনেক কিছু হয়৷ পাট থেকে কাপড়, সিল্ক, সিল্ক বস্ত্র, কার্পেট ইত্যাদি৷ কলা, আম, কাঁঠাল, আরো অনেক ফসল থেকে অনেক কিছু খাদ্য দ্রব্য হয়৷ সেগুলিকে প্যাকেট জাত করে বাজারে রপ্তানী করলে গ্রামের বেকার সমস্যা সমাধান হয়৷ তাছাড়া বাহিরের দেশে রপ্তানী করলে দেশ আর্থিক দিক থেকে উন্নত হবে৷ বৈদেশিক মুদ্রা ও উপার্জন হবে৷
মোদ্দাকথা আজ খাদ্য, পানীয় জলের বড়ই প্রয়োজন সারা পৃথিবীতে৷ তাই কৃষি প্রধান দেশ ভারত এই দিকে বেশী করে নজর দিক৷ আর চাকুরীর জন্য যাতে গ্রাম শহর মুখী না হয় সেটার দিকে নজর দিতে হবে৷ মোদ্দা কথা বিকেন্দ্রিক পথে ব্লকস্তরগুলিকে আর্থিক দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে করে তুলতে বেসরকারী ও সরকারীভাবে জরুরীভিত্তিতে পরিকল্পনা নিতে হবে৷
অত্যন্ত লজ্জা ও দুঃখের বিষয় নিছক নোংরা দলবাজিতে দেশ ধবংস হতে বসছে৷ জনবহুল দেশে বড়ো বড়ো কলকারখানায় বেকার সমস্যা পূরণ হবে না৷ শিল্পকে ছড়িয়ে দিতে হবে ব্লকে ব্লকে৷
- Log in to post comments