ভারতীয় রাজনীতির কর্কট ব্যাধি

লেখক
একর্ষি

পূর্ব প্রকাশিতের পর

আধ্যাত্মিকতা যদি কারণ হয় তবে তার ফলাফল হল বৃহৎ ভাবনায় অভিষিক্ত বা পুষ্ট হওয়া৷ এর প্রকাশ বা প্রতিক্রিয়াটা কেমন--- না মানুষের মনে বাসা বাঁধে, সমাজ দেহে ধবনি প্রতিধবনি হয়ে ফেরে---’’

‘‘জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে,

সে জাতির নাম মানুষ জাতি৷

এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত, একই রবি শশী মোদের সাথী৷’’ কিংবা ‘‘শুণহ মানুষ ভাই/ সবার উপরে মানুষ সত্য, /তাহার উপরে নাই৷ ফলতঃ আধ্যাত্মিকতায় পরিশীলিত মন হয় মুক্তমনা, সকল প্রকার সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত---যা সকল মানুষকে সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে৷ কিন্তু রাজনীতি ধর্ম বর্জিত হওয়ায় বা আধ্যাত্মবিজ্ঞান আধারিত না হওয়ায়, অর্থাৎ রাজনীতি আধ্যাত্মিকতার ওপর ভর করে  উঠে না আসায় ভারতীয় সমাজদেহে নানান ধরণের সংকীর্ণতা, ভেদ-বিভেদ, বিচ্ছন্নতা-মতি,সাম্প্রদায়িকতা বাসা বেঁধেছে৷ ভারতবাসীকে দেশভাগের যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছে, দেশভাগের পরেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং কশ্মীর -পঞ্জাব-উত্তরপূর্বভারতে বিচ্ছন্নতাবাদী আন্দোলনের সম্মুখীন হতে হয়েছে, হচ্ছে৷

আধ্যাত্মিক ভাবনায় বা আধ্যাত্মিক বিজ্ঞান বা দর্শন অনুযায়ী সঞ্চরধারায় (‘সঞ্চর’ এই দার্শনিক পরিভাষিক শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল--- চলন, গমন৷ আর ‘সঞ্চরধারা’ বলতে বোঝায় সৃষ্টির উৎস থেকে ধাপে ধাপে এক থেকে বহুতে বা সৃষ্ট চরাচরে বা জগতে পরিণত হওয়ার  গতিধারা৷ আবার গতি যখন ক্রমবিবর্তনে সৃষ্টি থেকে সৃষ্টির  উৎসের দিকে হয় তখন তার নাম প্রতিসঞ্চরধারা৷ বিজ্ঞান, দর্শন, অধ্যাত্মবিজ্ঞান সর্বত্র সৃষ্টির এই রহস্যের উদঘাটন প্রক্রিয়া চলেছে চলছে৷) এক থেকেই বহুর সৃষ্টি৷ আর সৃষ্ট প্রতিটি সত্তাই নিজ নিজ ‘প্রপাটি’ গুণে স্বাতন্ত্র্য বলেই সকলেরই স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রয়েছে৷ তাই এই কার্যকারণ সম্পর্কে বৈচিত্র্যহি প্রাকৃত ধর্ম৷ আর প্রতিসঞ্চর ধারায় বৈচিত্র্য যদি ধবনি হয়, তবে এর সম্মিলিত প্রতিধবনিটির নাম সংশ্লেষণ---ওঁংকার অর্থাৎ বৈচিত্র্যের মাঝেই সুমহান ঐক্য৷