পরমারাধ্য ‘ৰাৰা’ (শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী) তাঁর মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বে বলেছেন---‘‘গুরু যখন শিষ্যের আন্তরিক প্রয়াসে সন্তুষ্ট হন, তিনি তখন শিষ্যের উপর কৃপাপরবশ হয়ে পজিটিভ মাইক্রোবাইটার সাহায্যে শুভবৃত্তিগুলোকে উজ্জীবিত করেন ও তাদের প্রভাবকে বাড়িয়ে দেন আর অশুভ বৃত্তিসমূহের প্রভাবকে কমিয়ে দেন৷ এইভাবে মাইক্রোবাইটার মাধ্যমে গুরু প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রন্থিরসক্ষণের মাত্রা বাড়িয়ে বা কমিয়ে দিয়ে এটি করেন৷ পরমপুরুষ কোন একজনের ওপর সন্তুষ্ট হলে তিনি সেই ব্যষ্টির সমস্তচক্রে পজিটিভ মাইক্রোবাইটার সাহায্যে বিশেষ শক্তি সম্পাত করেন যার ফলে তাঁর পরমানন্দের অনুভূতি হয়৷ একটা উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হ’ল যে, কোন সাধক যখন সাধনার তৃতীয় স্তরে পৌঁছে যান তখন গুরুর প্রত্যক্ষ সাহায্যে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর মোক্ষপ্রাপ্তি হয়৷’’
এখন প্রশ্ণ হ’ল শিষ্য গুরুর সন্তুষ্টি সাধন কিভাবে করবেন? সাধকের অন্তর নিঃসৃত ভক্তি নিবেদনই হ’ল পরমপুরুষকে সন্তুষ্ট করার এক মাত্র উপায়৷ মানবজীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ মহামূল্যবান সম্পদ হল এই ভক্তি৷ একমাত্র ভক্তির দ্বারাই পরমপুরুষের সন্তোষ বিধান করার উপায়৷ এই ভক্তিই হল ভক্তের জীবন৷ সাধনার সিদ্ধিলাভের সর্ব শ্রেষ্ঠ সোপান হ’ল ভক্তি৷ তাই ‘বাবা’ বলেছেন ‘পরমপুরুষকে আনন্দ দেওয়ার ব্রতই ভক্তি৷’’
তাই শাস্ত্রে বলা হয়েছে---
ভক্তির্ভগবতো সেবা ভক্তিঃ প্রেমস্বরূপিনী৷
ভক্তিরানন্দরূপা চ ভক্তি ঃ ভক্তস্য জীবনম্৷৷
এই ভক্তি যে লাভ করেছে সে সব পেয়েছে৷ ভক্ত কেবল পরমপুরুষকে সেবা করতেই জানে৷ পরমপুরুষ ভক্তের উপর সন্তুষ্ট হয়ে সাধককে মাইক্রোবাইটাম দিয়ে বিশেষ শক্তি সম্পাত করে পঞ্চকোষকে পরিশুদ্ধ করে চক্রগুলিকে উজ্জীবিত করে সাধকের জীবনে পরমানন্দের অনুভূতি জাগায়৷ তাই যার মধ্যে ভক্তি ও নিষ্ঠা থাকবে সে পরমপুরুষের কৃপা পাবেই৷ শুধু এক বিন্দু কৃপার প্রয়োজন, অনেক কৃপা নয়, পরমপুরুষের একবিন্দু কৃপাকণাতেই মানব জীবন সার্থক হয়ে ওঠে৷
তাই প্রভাত সঙ্গীতে ধবনিত হয়েছে---
তোমার তরে প্রদীপ জ্বালা
তোমার তরেই গাঁথামালা৷
তোমায় ভেবে বেঁচে থাকা
তোমায় পেতে হই উতলা৷৷
অরূপ তুমি রূপে এলে
রূপের ডালি সাজিয়ে দিলে৷
সব কিছুতেই প্রীতি ঢেলে
চললো তোমার অশেষ চলা৷৷
তোমার কৃপার একটি কণা
তৃপ্ত করে সব এষণা৷
মুক্তপথে আনাগোনা
জানায় প্রভু তোমার লীলা৷৷
(প্রভাত সঙ্গীত ২৬৯৯)
তাই দেখা যাচ্ছে, ভক্তি ও মাইক্রোবাইটামের মধ্যে কত নিকট সম্পর্ক৷
- Log in to post comments