আজ চরম সংকটে মনে পড়ে সেই বিপ্লবী, মানবতাবাদী কবি নজরুলকে---যিনি বলেছেন--- ‘‘হিন্দু না ওরা মুসলীম ঐ জিঙ্গাসে কোন জন?৷ কাণ্ডারী বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার!’’ তাঁর সেই কথা দলীয় স্বার্থন্ধরা মানে নি! তারা সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্রয় দিয়ে ইংরেজের টোপ গিলে দেশ ভাগ করে চরম সর্বনাশ করে মেকী স্বাধীনতা নিয়ে এলো৷ যার কুফল আজও দেশ ভোগ করছে৷ মেকী ধর্মমতের আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ বাধিয়ে! এটাই দীর্ঘ বছর ধরে উষ্কানী পাচ্ছে ধর্র্মন্ধ ও চরম সুবিধাবাদী নেতা-মন্ত্রীদের কাছ থেকে! তাই এতো দেশের ক্ষয়ক্ষতি৷ আর শাসকদের সেই ধনীদের সেবাদাস হয়ে শাসন করা, সিংহভাগ দরিদ্র মানুষকে অবহেলা করা সবদিক থেকে বঞ্চিত করে৷ তারই পরিণতিতে আজ আর্থিক বৈষম্য আকাশ পাতাল৷ কশ্মীর নিয়ে নেহেরু সরকারের ভুলের মাশুল আজও ভারতবাসী কে দিতে হচ্ছে৷ মাননীয় জে.এন. চৌধুরী তখন সামরিক বিভাগের প্রধান তিনি পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে তৈরী হল, কিন্তু জওহরলাল বাধা দিয়ে ইউ.এন.ওতে অভিযোগ করেন৷ ইউ.এন.ও যুদ্ধ বিরোধী নীতি প্রয়োগ করেন৷ সেই হলো এক মারাত্মক ব্যাপার! সেই থেকে কশ্মীরের অর্ধেক অংশ আজও পড়ে আছে আজাদ কশ্মীর হয়ে পাকিস্তানের হাতে৷ যেখানে ভাই-বোনেরা চরম কষ্টেই দিন কাটাচ্ছে!
একেই বলে রাজার পাপে রাজ্য নষ্ট৷ এক প্রধানমন্ত্রীর ভুলের মাশুল গুণতে হচ্ছে সমগ্র দেশবাসীকে৷ আর সেই প্রধানমন্ত্রী হয়ে মাননীয় অটল বিহারী বাজপেয়ী যিনি অতি দক্ষতার সঙ্গে দেশ শাসন করে গেছেন কয়েকটি বছর পুরাপুরী সংবিধান মেনে ও ন্যায়ধর্ম ও সেই রাজধর্ম পালন করে৷ সেই রাজনীতির প্রথম ও প্রধান সামবেদের সাম ধর্মকে পালন করে৷ নীতি ও দূরদৃষ্টির প্রয়োগে! অথচ তাঁরই দলের আজ আর এক প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাদের সেবাদল হয়ে দেশকে ধবংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে৷ তাই তিনি আজও সম্মানের ও শ্রদ্ধার পাত্র হয়ে আছেন দেশের মানুষের কাছে ৷ বাকিরা যে একজন দু’জন ছাড়া কেউই যেন সমালোচনার ঊর্ধে নয়! দেশটাই দীর্ঘ ৭৭ বছরে একেবারেই ছন্নছাড়া হয়েই আধমরা! আর দলীয় শাসকরা নিছক নোংরা দলবাজিতেই ও দলীয় স্বার্থান্ধেই পাগল৷ লজ্জার কথা হলো গণতন্ত্রে ইন্দিরা গান্ধীর ৪২তম সংবিধান সংশোধন, আর সেই গদীর স্বার্থের লোকসভাকে না জানিয়ে দেশে অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থাজারি৷ কি ভয়ঙ্কর দিন ছিল সেই সময়! সারা দেশ যেন কারাগারে আটক৷ তবু গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষকে তিনি ধবংস করতে পারেনি৷ তাই জনগণের চাপে জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার করে নির্বাচনে আসতে বাধ্য হলেন৷ মহান জনগণ রায় দানে নির্বাচনে তিনি হেরে গেলেন৷ দেশ কিছু মুক্তি পেল কিন্তু ২০১৪ সালে মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় এসে গণ পরিষদের পবিত্র বিভিন্ন আইনের ধারা দলীয় স্বার্থে পাল্টে দিয়ে দেশটাকে নিছল সংসদী গণতন্ত্রের ছোবড়া করেই ছাড়লো৷
তবু গণতান্ত্রিক ভারতবর্ষ আজও মরে যায়নি৷ অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতা থেকে না সরালেও মাজা ভেঙে দিয়েছে৷ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে নিজেও তিনলক্ষের বেশী ভোট কম পেয়ে মান বাঁচালেও মোদি পরিবার ভুলে এখন জোট ধর্ম পালনে ব্যস্ত৷
দেশ আজ যে কঠিন সময় এসেছে৷ এই সময় দরকার দেশের স্বার্থে সৎ ন্যায়নীতিবাদী দেশসেবকদের যাঁরা অন্তত কিছুটা ভাববে হতদরিদ্র মানুষগুলির জন্য! অত্যন্ত দুঃখের ও লজ্জার কথা দলতান্ত্রিক গণতন্ত্রটা হলো সোনার পাথর বাটি সেটা বাস্তবে অসার৷ গণতন্ত্র হলো সরকার জনগণের, জনগণের জন্য ও জনগণের দ্বারা৷ কিন্তু দলতন্ত্র হলো সরকার দলের, দলের জন্য দেশ সেবার ভাবনাটাই নেই৷ তাই বর্তমান জগতের মহান দার্শনিক মাননীয় পি.আর. সরকার বলেন--- সারা দেশে আজ সৎ মানুষেরই অভাব৷ তাই সর্ব প্রথম মানুষ গড়ার কাজ করতে হবে যাঁরাই মানুষের কল্যাণ চায়৷ প্রাউটের ভাষায় যাকে বলা হয় সদ্বিপ্র৷ দেশকে বাঁচাতে হলে এই সৎনীতিবাদী সদ্বিপ্রের হাতে দেশের ভার তুলে দিতে হবে৷
- Log in to post comments