দেশের শাসকগণ নির্বাচন করছেন না জনগণের সঙ্গে ঠাট্টা তামাশা করছেন সেটা বোঝা যাচ্ছে  না!

লেখক
সঞ্জয় দেব

পশ্চিমবাঙলার রাজ্য নির্বাচনটাকে এক ভয়ঙ্কর কুৎসিত দলবাজির যাকে নেতা ও অভিনেতাগণ বলেন খেলা বা খেলযুদ্ধ সেই খেলাটা চলছে কয়েকমাস ধরে করোনার কবলে আক্রান্ত পশ্চিমবাঙলায়৷ এটা আবার অনেকে কুরুক্ষেত্রের অসম যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করছেন৷ তবে স্মরণে রাখা দরকার কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বাঙালীরা অংশগ্রহণ করেনি৷ প্রাগজ্যোতিষপুরের রাজা খাদ ও যিনি নরকাসুরের পুত্র ছিলেন তিনি কৌরবদের পক্ষ গ্রহণ করেন৷ এই প্রাগজ্যোতিষপুরটি ছিল উত্তর বাঙলা ও অসমে অবস্থিত৷ শ্রীকৃষ্ণ নাকি নরকাসুরকে দমন করেন তাই তার পুত্র ক্ষুদ্ধ হয়ে কৌরবদের পক্ষ নেন ও যুদ্ধে হস্তি যোগান দেন৷

তবে বর্তমানে পশ্চিমবাঙলা এই নির্বাচন হচ্ছে বাঙলার অসীম সাহসী লড়াকু মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রের  দলের৷ এই লড়াইয়ে তবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই যে নির্বাচনের নামে রাজ্যস্তরে দলীয় খেলা তার পশ্চাতে বিজেপিতে যোগ দেওয়া অনেক  দলছুট তৃণমূল কংগ্রেসের  নেতা ও মন্ত্রীগণ আছেন৷ শুধু তাই নয় এই রাজ্যের বিজেপি দলটাই হলো একপ্রকার তৃণমূল দলের বিচ্ছিন্ন দলত্যাগীদের দল৷ তাদের মদৎ দিচ্ছে দিল্লীর বিজেপির সরকারের হোমরা চোমরা নেতা মন্ত্রীরা নেতা কারণ  প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো অনেকে প্রায় উড়োজাহাজে প্রতিদিনই এইরাজ্যে রাজনীতিতে নির্বাচনী খেলা খেলছেন৷ অন্যদিকে মমতা রাজ্যসরকারের নেত্রী হয়ে বক্তব্য রাখছেন আহত অবস্থায়’ কারণ নির্বাচনী প্রচারে তিনি পায় আঘাত পান৷ এই খেলায় ব্যাপকভাবে লোক দেখানো জমজমাট প্রচার চলছে আর এই চরম সমস্যা সংকুল পশ্চিম বাঙলাকে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবার ব্যাপক প্রচার করছেন প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কারণ নির্বাচনে জিততে হলে তো ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়াটাই হলো এদেশের  নির্বাচনে একটা  প্রথা বিশেষ৷ বোটের পর তো সবকিছু  ভোঁভা৷ কেন্দ্র সরকার এদিকে দেশের সবকিছু বিক্রি করেই দিচ্ছেন কারণ বিরাট ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা তলানীতে চলে গেছে৷ পাকিস্তান ও বাঙলাদেশের চেয়ে করুণ অবস্থা৷ তার ওপর দ্বিতীয়বার করোনায় দেশ আক্রান্ত হচ্ছে ভয়ঙ্করভাবে৷ জনগণের অবস্থা শোচনীয়  রান্নার গ্যাসের দাম ৯০০ টাকায় এসেছে! তাঁরা নাকি বাঙালীর হাহাকারে কাতর তা হতভাগ্য বাঙালীকে সোনার বাঙলা গড়ার মিথ্যা প্রলোভন দেখাচ্ছে পরিযায়ী নেতারা ৷ তখন যদি বাঙলার বোটারগণ প্রলুদ্ধ হয়ে বাঙলার সিংহাসনে ঐসব নেতাদের  সাকরেদদের বসায়৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভুলে গেছেন যে কেন্দ্রের দায় আছে রাজ্যকে দেখাও আর্থিক সাহায্য করা সেটাকি দেওয়া হয়েছে? হয়নি, রাজ্য কোটি কোটি টাকা পায় কেন্দ্রের কাছ থেকে৷ যেহেতু বিরোধী শাসক তাই হেয় করতে রাজ্যকে বঞ্চিত করা হচ্ছে৷ এটাই হলো দলীয় গণতান্ত্রিক শাসনের একটি মারাত্মক ত্রুটি! মিথ্যা কথা বলা, মানুষকে বিপথগামী করাটাই হলো এই নেতাদের  মিথ্যা দাদাগিরি ও মিথ্যাচারিতা৷ কিন্তু  নির্বাচন যাঁরা পরিচালনা করেন সেটি আবার নাকি স্বাধীন (?) নির্বাচন কমিশন৷ তাঁরা  এখন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করছেন,যেখানে প্রার্থীকে বিরোধী পক্ষ লাঠি পেটা করে মাথা ফাটিয়ে দেয়৷ আহা! কি দেশ সেবা! এইসব কারণে  নিরপেক্ষ জনগণ অত্যন্ত বিরক্ত৷ বাঙলাদেশ করনার জন্য নির্বাচন স্থগিত৷ আর এদেশের সরকার নিজেদের গড়া আইন অমান্য করে  বোটে গদী জিততে কালো টাকার জোরে মাঠ ভর্তি করছে৷ লোক আক্রান্ত  হবে না! এসব কি সরকারের দেখার দরকার নেই! তাই জনগণ এদের  নোংরা দলবাজিতে অত্যন্ত বিরক্ত৷ এবারে নির্বাচনের প্রার্থী সম্বন্ধে জনগণ বিরক্ত কারণ যতো অভিনেতা অভিনেত্রীকে দলগুলো দাঁড় করিয়েছে আর দলভাঙ্গিয়ে অন্যদলের এম.এল.এ ও মন্ত্রীদের দলে টেনে৷ দেশের গণতান্ত্রিক শাসন ও নির্বাচনটাকে শাসকগণের নোংরা দলীয় স্বার্থে ধবংস করে দিচ্ছেন সেটা জনগণ বেশ ভালোভাবেই বুঝছেন! তবে এটা পরিস্কার যে বিজেপি দলটি চাইছে নিজেদের প্রশাসনিক ক্ষমতার দ্বারা পশ্চিমবাঙলার তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করে নিজেদের দলের ক্ষমতাকে কায়েম করা৷ তা না হলে কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এতটা সক্রিয় কেন পশ্চিমবাঙলার মতো একটা সমস্যা সংকুল রাজ্যকে কুক্ষিগত করতে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে বর্তমানে সারাভারতের রাজনৈতিক জগতে তথা পৃথিবীতে একজন সক্রিয় রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে বিখ্যাত৷ তার সঙ্গে সারা ভারতের  বিজেপি দল ছাড়া  প্রায় সকল দলের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে যেটি ভারতের পক্ষে অনুকূল৷

 যদি মমতাকে ছল-বল কৌশলে  বা যেকোনভাবে তাঁকে শাসন ক্ষমতা থেকে চ্যুত করা যায় তা হলে শাসকদের বড়ো লাভ৷ কারণ শাসনে থেকে মমতা বক্তব্য যতটা কার্য্যকরী হবে আর না থেকে মতামতের গুরুত্ব অনেকখানি দুর্বল হবে৷

তাছাড়া এরাজ্যের বিরোধী দলগুলি ছিন্নভিন্ন৷ তাদের জনসংযোগেও অনেকখানি কম৷ সংঘটনগুলিও দুর্বল তাই তারা বিশেষ কোন বিজেপি বিরুদ্ধে জনমত ঘটনে সক্ষম হবে না৷ বিজেপি যে ভাবে  কৃষিনীতি শিল্পনীতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ণে ধনতান্ত্রিক কেন্দ্রীকরণের দিকে ছুটছে তাতে ভারতের সমূহ বিপদ৷ তাকে প্রতিরোধ করার মতো সচেতন পশ্চিমবাঙলার  মতো অন্য রাজ্যগুলি এগিয়ে যেতে উৎসাহ পাবে না যদি তৃণমূল সরকার উৎখাত হয়৷ তাই কেন্দ্রের সরকার আদাজল খেয়ে লেগেছে মমতাকে উৎখাত করতে৷  তাই রাজনীতির ক্ষেত্রে নির্বাচনের নামে  নোতুন নাম দিয়েছে ‘খেলা’ অর্থাৎ যা ইচ্ছা তাই করে নির্বাচনকে সামনে রেখে সফল রাজ্য সরকারকে ফেলে দেওয়া৷ এটা সেই ২০১৪ সাল থেকেই বিজেপির প্রস্তুতি চলছে ৷  তাদের লোকেরাই তৃণমূলে ঢুকেছিল এই সুযোগের সন্ধানে যেটি মমতা বোঝেনি বা খেয়াল করেনি৷ তা না হলে নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকে তৃণমূলের দলের এমন অবস্থা হয় দল ছাড়ার হিরিক৷ তৃণমূল নাকি মহীরূহ তাই কিছু দল ছাড়লে কি হবে৷ এমন কথা নেহাতই নিজেদের অক্ষমতাকে ঢাকার চেষ্টা৷ কেন্দ্রের রাজশক্তি যে তাদের মদৎ দিয়ে ভীত ফাঁকা করে ছাড়ছে সেটা নজরে পড়েনি৷ নির্বাচনে যা ঘটছে এই বাঙলায় এমন কোনদিনই ঘটেনি৷  এতো নিম্নমানের কথাবার্তা অসভ্য আচরণ৷ সারা পৃথিবী লজ্জা পাচ্ছে রাজ্যতো ছার! নির্বাচনে  প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে বোটের ফল বেরুলে৷ কি করে কেন্দ্রের শাসক প্রধানগণ বলেন যে--- ৩০টার মধ্যে আমরা ২৬টা পেয়েছি৷ তাহলে এটা বোঝা কোন অন্যায় নয় যে বোটে কোন কারচুপী অর্থাৎ এদিক ওদিক হচ্ছে৷ ছি ছি এই সব উক্তি নেতাদের৷ তারা আবার অহংকার করে দেশ নেতা বলে৷ আগে তো এমনটা হয়নি৷ প্রবীণ নাগরিকগণ এসব ব্যাপারে অত্যন্ত হতাশা ও মনোবেদনায় কষ্ট পাচ্ছেন সংযম অর্থাৎ বাক সংযমটা, ভদ্রতাটাকে মান্যতা দিতেই হয়৷ তার দারুণ অভাব দেখা যাচ্ছে৷