ধ্যান বা মেডিটেশন শুধুমাত্র যাঁরা আধ্যাত্মিক চর্চা করেন বা অধ্যাত্ম নিয়ে যাঁরা ব্যস্ত থাকেন তাঁদেরই জন্যে–এই ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত৷ দেশে–বিদেশে সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে যে কোন রোগ মুক্তির ক্ষেত্রে ধ্যান বিশেষ ভাবে কাজ করে৷ সাধারণভাবে ধ্যান মানুষের মনকে এক জায়গায় স্থির করে একটি টেনশনমুক্ত মনের জায়গায় নিয়ে আসে৷ ঠিক এই মনের এক জায়গায় স্থিরকরণেরই ফলেই রোগমুক্তির প্রথম ধাপে পা দেওয়া শুরু৷ প্রখ্যাত অনেক গবেষকের ধারণা যে বয়স্ক্দের যে স্মৃতিভ্রংশজনিত সমস্যা তা অনেকটাই মুক্ত করতে পারে ধ্যান বা মেডিটেশন৷ যে মানুষটা কিশোর বা যৌবনে তাঁর নিজস্ব কাজে কর্মে যথেষ্ট চৌখস তথা দক্ষ ছিলেন তাঁর প্রবল স্মৃতিশক্তির জন্যে বার্ধক্যে দেখা যায় সেই মানুষই তার সুক্লের নাম, কর্মক্ষেত্র, বিবাহের তারিখ তথা জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মনে করতে পারছেন না অথবা স্মৃতি হাতড়ে চলেছেন৷ এই ব্যাপারটাই স্মৃতিভ্রংশজনিত একটি রোগ৷ ধ্যান যেহেতু বিভিন্ন চিন্তা থেকে মুক্ত করে মনকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে আসে সেহেতু ওই ব্যষ্টিরা যাঁরা ওই ধরনের রোগে ভুগছেন তাঁরা ধ্যানের মাধ্যমে ছন্নছাড়া চিন্তাভাবনা মুক্ত হয়ে তাঁদের পুরোনো স্মৃতিকে ফিরে পান–এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ মোট কথা ধ্যান মনকে এমন একটি স্তরে নিয়ে আসে যেখানে মনকে প্রশান্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যষ্টি তাঁর নিজের মনকে প্রকৃতই চেতন স্তরে নিয়ে আসে৷ তখনই অতীতের অনেক ঘটনাই মনে পড়তে থাকে৷ তবে ধ্যান অভ্যাস করতে হবে নিয়মিত ও সঠিক পদ্ধতি মেনে৷ প্রয়োজনে এই বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যষ্টির পরামর্শ তথা সহযোগিতা অবশ্যই প্রয়োজন৷ দীর্ঘ অনুশীলনের ফলে মনকে নিজের আয়ত্বে আনলেই স্মৃতি ফিরে পাবার অপার আনন্দ লাভ করা সম্ভব৷
- Log in to post comments