প্রবন্ধ

সে দীপশিখা জ্বলিছে অনির্বাণ

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

মানবজাতির ইতিহাস পর্র্যলোচনা করে দেখা যায় যে সর্বদাই মনুষ্যসমাজে  শুভ ও অশুভ উভয় প্রকার শক্তি ক্রিয়াশীল থাকে আর  এই বিপরীতধর্মী শক্তির মধ্যে চলে নিরন্তর সংগ্রাম৷ মানবজাতির এই সুদীর্ঘ পথপরিক্রমায় অধিকাংশ  সময় অশুভশক্তির প্রাবল্য পরিলক্ষিত হলেও শুভশক্তির প্রবাহ নিরবচ্ছিন্নভাবে বয়ে গেছে অন্তঃসলিলারূপে ৷ তা না হলে মনুষ্যনামক প্রাণী অন্যান্য বৃহদাকার অগণিত প্রাণীকুলের মতো পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ণ হয়ে যেত৷ তাই যখনই অশুভ শক্তির চরম আঘাতে মানব সমাজের অস্তিত্ব ধবংসের মুখোমুখি হয়েছে তখনই কোন এক মহান পুরুষের আবির্র্ভব ঘটেছে৷ সেই মহাসম্ভূতির নেতৃত্বে সকল শুভ শক্তির সম্মিলিত প্রয়াসে চন্ডশক্তি তথা পাপ

রাজনৈতিক ধান্দাবাজদের জন্যই দেশের এই করুণ অবস্থা

প্রভাত খাঁ

পরিবর্তনশীল জগতের ধর্মই হচ্ছে থেমে না থেকে এগিয়ে চলা৷ এই যে চলা এটাকেই জগৎ বলে৷ তাই গত ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট যে পরিস্থিতি যে আনন্দ উৎসব দেখেছিলুম সেই আনন্দ উৎসব আজ কিন্তু চোখে পড়ে না৷ কেন এমন হ’ল তার খোঁজ করাটা অতি জরুরী৷ তাই এই প্রতিবেদন৷ সেদিন আমাদের মত আজকের বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা ছিল একেবারে কিশোর ও কিশোরী৷ মনে পড়ে সারা রাত ধরে কাগজের শিকলি তৈরী করে বড়দের সঙ্গে পরদিন সকাল বেলায় সারা পাড়াকে সাজিয়েছিলুম৷ পতাকা উত্তোলন করার পর পতাকা নিয়ে কয়েক মাইল ধূলো মাখা পায়ে হেঁটেছিলুম৷ শেষে মিষ্টান্ন পেয়ে খুশী হয়ে দুপুরে বাড়ী ফিরি বড়দের সঙ্গে৷ ইংরেজ চলে গেছে দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাতে মনে কতটা যে আনন্দ তা প্রকা

বসন্তোৎসব / দোল উৎসবের তাৎপর্য

বসন্তোৎসব সারা ভারতের উৎসব–উত্তর ভারতে ‘হোলি’, বিহার অঞ্চলে ‘ফাগুয়া’ ও বাংলায় ‘দোলযাত্রা’৷ আদিতে এই উৎসব ছিল মূলতঃ আর্যদের৷ প্রাচীন আর্যদের বাসভূমি ছিল মধ্য এশিয়ায়৷ এই অঞ্চলটা ছিল ভীষণ ঠাণ্ডা৷ সারা শীতকাল কেবল বরফ পড়তো, এটা ছিল আর্যদের দুঃসহ কষ্টের কাল৷ নিদারুণ ঠাণ্ডায় মানুষ জবু–থবু হয়ে মরার মত পড়ে থাকতো, কোন কাজকর্ম করতে পারতো না৷ এই শীতকালটা যখন বিদায় নিত, আর্যরা তখন আনন্দে উৎসবে মেতে উঠতো৷ ‘উৎ’ মানে আনন্দে লাফিয়ে ওঠা আর ‘সব’ মানে ‘জন্মগ্রহণ করা’৷ আক্ষরিক অর্থেই বসন্তের আগমনে আর্যরা প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠতো, হৈ–হুল্লোড়, ও কর্মচাঞ্চল্যে মেতে উঠতো৷

দেবযোনি মাইক্রোবাইটাম

সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

পাঞ্চভৌতিক শরীর গঠিত হয় ক্ষিতি, অপ, তেজ,  মরুৎ ও বোম এইপঞ্চভূতের সমন্বয়ে৷ এখন যেহেতু পঞ্চভৌতিক উপাদানে গঠিত শরীরে ক্ষিতিভূত ও অপভূত বর্তমান আছে অতএব এই শরীরকে  রক্ষা করার জন্যে খাদ্য ও জলের নিশ্চয়ই প্রয়োজন হবে ও স্থূল শরীরে স্নায়ু কোষ Nerve  cell) থাকবে ও নার্ভসেলের সাহায্যে মন mind) কাজ করবে৷ কিন্তু যাদের  ত্রিভৌতিক  শরীর অর্র্থৎ তেজভূত, মরুৎভূত ও বোমভূত নিয়ে যাদের শরীর গঠিত তাদের শরীরে যেহেতু ক্ষিতি ও অপ এই দুটি ভূত নেই, সুতরাং  এই ত্রিভৌতিক শরীরের  জন্যে খাদ্য  ও জলের প্রয়োজন নেই৷ অর্র্থৎ এদের শরীরে  কোন নার্ভ সিস্টেমের প্রয়োজন  হয় না৷ কারণ  নার্ভ  দরকার  হয় কেবলমাত্র পাঞ্চভৌতিক  শরীরের

মহাসম্ভূতি  তারকব্রহ্ম  শিব ও   তাঁর অবদান

(শিব-চতুর্দশীতে সারা দেশ জুড়ে শিবকে কেন্দ্র করে উৎসব হ’ল৷ শিবের জনপ্রিয়তা আর সব দেবদেবীকে ছাপিয়ে যায়৷ প্রকৃতপক্ষে এই শিব কে? কাল্পনিক তেত্রিশ কোটি দেবতার মতো শিব কিন্তু কাল্পনিক দেবতা নন৷ আজ থেকে প্রায় সাত হাজার বৎসর পূর্বে মানব শরীর নিয়ে ধরার ধূলায় আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি৷ শিবের ঐতিহাসিকতা ও মানব সমাজে শিবের অবদান নিয়ে শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী বিখ্যাত গ্রন্থ ‘নমঃ শিবায় শান্তায়’ অবলম্বনত্রেন এই নিবন্ধটি লিখেছেন ---লালন সেনগুপ্ত)

নীরব মোদী -পি.এন.বি কেলেঙ্কারি কি হিমশৈলের চূড়ামাত্র

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

বিগত দুই তিন সপ্তাহ ধরেই  বিশ্ববিখ্যাত হীরের গহণা ব্যবসায়ী নীরব মোদি, তাঁর সংস্থা  ও নীরবের মামা মেহুল চোক্সীর বিরুদ্ধে পি.এন.বি অর্র্থৎ পঞ্জাব ন্যাশন্যাল ব্যাঙ্ককে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার সংবাদে  সারাদেশ তোলপাড়৷  পিএনবির তরফে  সিবিআইয়ের কাছে নীরব মোদি , তাঁর স্ত্রী অমি, ভাই নীরল, মামা মেহুল চোক্সী ও তাঁদের অলঙ্কার সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ১৮০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা) প্রতারণার অভিযোগ জানিয়েছে৷ সংবাদে প্রকাশ,  পিএনবির মুম্বাইয়ের ব্র্যাডি হাউস শাখা থেকে ২০১১ সালে  কোনো নিয়ম কানুন ছাড়াই ব্যাঙ্ক অফিসারদের যোগসাজসে বিরাট অঙ্কের অর্থের গ্যারান্টি বা

আনন্দমার্গের সর্বাত্মক রেণেশাঁ কর্মসূচী

শ্রীরবীন্দ্রনাথ সেন

বহু লক্ষ বছরের শ্রমসাধনা ও কর্মপ্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে মানুষের আজকের এই সভ্যতা৷ মানব সভ্যতার এই ইতিহাস কেবল যে ধারাবাহিক ভাবে উন্নতির পথে এগিয়েছে তা নয়, সভ্যতা এগিয়েছে নানান উত্থান–পতনের মধ্য দিয়ে৷ এগিয়ে চলতে গিয়ে নূতনকে বরণ করেছে–বিদায় দিয়েছে বহু পুরাতনকে৷ এগিয়ে চলতে চলতে সে হয়ে যায় ক্লান্ত, শ্রান্ত তখন তার গতি শ্লথ, অগ্রগতি রুদ্ধ৷ আবার সে যেন জেগে ওঠে, নূতন উদ্যমে এগিয়ে চলে, নূতন ভঙ্গীতে নূতন পথে৷ এই যে পরিবর্তন একে বলা যায়, পুনর্জাগরণ বা ‘রেণেশাঁ’৷ এই পুনর্জাগরণ আনতে হবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে৷ আনন্দমার্গের প্রবক্তা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী এই সর্বাত্মক রেণেশাঁর কথা বলে গেছেন তাঁর বিভিন্ন প

ভারতে বহুদলীয় গণতন্ত্রের শনির দশা

প্রভাত খাঁ

ভারতের স্বাধীনতার  ৭১ বছর পরে  ও সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছর  পরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাকসফ্যামে’র এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ২০১৭ সালের ভারতের মোট সম্পদের ৭৩ শতাংশ কুক্ষিগত আছে ১ শতাংশ ধনকুবেরের হাতে৷ এঁদের সম্পদ বেড়েছে কয়েক লক্ষ কোটি  টাকা যা ২০১৭-১৮ সালের অর্থবর্ষের  মোট বাজেটের  প্রায় সমান৷ এতেই প্রমাণিত হয় কেন্দ্রের বিজেপি  সরকার দেশের  ধনকুবেরদেরই পৃষ্ঠপোষক৷ তারা জনসাধারণের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে ও বেকার সমস্যা দুরীকরণে তিলমাত্র চিন্তা করে না৷

প্রাউটের ক্রয়ক্ষমতা ভিত্তিক অর্থনীতি

আচার্য সর্বাত্মানন্দ অবধূত

বিশ্বের পরিস্থিতি যে চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে যে পেরিফেরিয়াল চেঞ্জ বা ছোটখাট পরিবর্তনে আর চলবে না, মানুষ চাইছে সর্বব্যাপক এক বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন৷ মানুষ চাইছে নোতুন আদর্শ, নোতুন জীবনবোধ বা মূল্যবোধ, নোতুন তত্ত্ব, মানুষের দুঃখ–দুদর্শার সত্যিকারের অবসান ঘটাতে পারবে এমন নোতুন অর্থনীতি৷ কী সেই নবতর অর্থনীতি? এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাউটের অর্থনীতির কথা সামনে আসছে৷

নব আদর্শে---নব উদ্দীপনায় সবাই উজ্জীবিত হোক

জ্যোতিবিকাশ সিন্হা

মনুষ্য জাতির ইতিহাসে দেখা গেছে যখনই কোন মহাপুরুষ, মনীষী, সমাজ সংস্কারক, নূতনের বার্তাবহ মানুষের কল্যাণে, নিপীড়িত মানবতার সংকট মোচনে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছেন, জ্ঞানের আলোকবর্ত্তিকা ঊধের্ব তুলে ধরেছেন তখনই অন্ধকারের পিশাচেরা, ভাবজড়তার ধবজাধারীরা নিজেদের সর্বনাশের আতঙ্কে যূথবদ্ধভাবে তার বিরোধিতা করেছে, চক্রান্ত করেছে---এমনকি ছলে-বলে-কৌশলে তাদের হত্যার ষড়যন্ত্রও করেছে৷ প্রাচীন যুগের সেই সদাশিবের সময় থেকেই একই ধারাপ্রবাহ বয়ে চলেছে৷ পাহাড়ে-পর্বতে ছড়িয়ে-ছিঁটিয়ে থাকা মানুষজনকে এক সূত্রে গেঁথে, বিবাহ ব্যবস্থার প্রচলন করে’ মানব সমাজকে একটা বিধিবদ্ধ রূপ দিয়েছিলেন সদাশিব৷ এছাড়াও বৈদ্যক শাস্ত্রের সৃষ্