কণিকায় বিজ্ঞান কাহিনী

লেখক
সমরেন্দ্রনাথ  ভৌমিক

বিজ্ঞানের কতনা অজানা আবিষ্কার, কতনা অবাক করে. দেওয়া কাহিনী ঘটে গেছে, ঘটছে ও ভবিষ্যতেও আরও ঘটবে৷ এমনি কিছু বিজ্ঞানের ঘটনা চয়ন করে পাঠকগণের কাছে উপস্থাপিত করলাম৷

u প্রথমেই আইনস্টাইনের কথায় -আসা যাক এ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত বৈজ্ঞানিক এসেছেন তাঁদের তত্ত্বগুলিকে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তত্ত্বের সত্যতার প্রমাণ করেছেন৷ কিন্তু আইনস্টাইনই আ্যাটম বোম Atom Bomb) তৈরীর জন্যে যে পদ্ধতি System) দিয়েছিলেন---তা তিনি, Laboratory-তে না পরীক্ষা করেই ঘোষণা করেছিলেন-My Brain is my Laboratory আমার এই Brain টাই- হ’ল একটি Laboratory৷ সুতরাং এইBrain নামক Laboratory তেইAtom Bomb Test করা হয়ে গেছে৷ কিন্তু প্রশ্ণ হ’ল--- আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক কেন এত অসাধারণের অসাধারণ? এই অধ্যাপক সান্দ্রা ডিটেলসন৷ ১৯৫৫ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন যখন মারা যান তখনই তার Brainটিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন অধ্যাপক সান্দ্রা৷ যাতে করে ভবিষ্যতে তার Brain নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায়! এখনও পর্যন্ত আইনস্টাইনের Brainটিকে কাটা-ছেঁড়া করা হয়নি৷ শুধুমাত্র তাঁর এই Brain টিকে শক্তিশালী Microscope দিয়ে দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ দেখা গেছে---তাঁর মস্তিষ্কের মধ্যে এক বিশেষ অঞ্চল আছে, যা সাধারণ মানুষের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বড়৷ এই বিশেষ. অঞ্চলটির নাম----‘ইনফিরিয়র প্যারাটাইল লোব’৷ এই অঞ্চলটি এতই বড়. যে, পৃথিবীর আর কোন ব্যষ্টির মস্তিষ্কে বর্তমান নেই৷ ওই অঞ্চলটির আরও বৈশিষ্ট্য আছে৷ এই বৈশিষ্ট্যটি হ’ল---প্রতিটি মানুষের ওই অঞ্চলে একটি বিশেষ খাঁজ থাকে, যা আইনস্টাইনের Brain-এ ছিল না৷ এর ফলে এই অঞ্চল হতে বেশী বিদ্যুৎ তরঙ্গ পরিচালনা করতে পারতেন বলে, বিজ্ঞানীদের এ পর্যন্ত ধারণা৷

u এরপর আসা যাকপ্লাস্টিক আবিষ্কারের কাহিনীতে৷ আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে, প্লাস্টিক আবিষ্কারক কে? শুনলে অবাক হতে হয---এই প্লাস্টিক আবিষ্কারক এক হুলো বিড়াল৷ এক মস্ত বড় বিজ্ঞানী formaldehyde নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন৷ এই বিজ্ঞানীর একটি পোষা বিড়াল ছিল৷ বিড়ালটি কিছু খাবার পাওয়ার আশায়! একদিন ওই বিজ্ঞানী গবেষণায় যখন নিমগ্ণ ছিলেন সেই সময় বিজ্ঞানীর জন্যে কিছু ছানা টিফিন করার জন্যে রেখে যায় তার আ্যাসিসটান্ট (Assistant)৷ কিন্তু টিফিনের সময় উত্তীর্ণ হতে চলল৷ অবশেষে হলো বেড়ালের আর ধৈর্য ধরল না৷ ওই ছানার চতুর্পার্শ্বে বেড়ালটি ঘোরাফেরা করতে লাগল৷ এইভাবে ঘোরাফেরা করতে গিয়ে বিড়ালটির ন্যাজটি একটি formaldehyde-এর বোতলে লেগে ছানার ওপরে ফরম্যালডিহাইড পড়ে যায়৷ কিছুক্ষণের মধ্যে ছানা ও ফরম্যালডিহাইড রাসায়নিক বিক্রিয়া করে শক্ত পদার্থে পরিণত হয়ে. যায়৷ পরে ওই শক্ত পদার্থই প্লাস্টিক রূপে, পরিচিত হয়৷ এইভাবেই হুলো বিড়াল প্লাস্টিকআবিষ্কার করে পৃথিবীতে প্লাস্টিক সভ্যতা গড়ে দিয়েছিল৷ কিন্তু দুঃখের বিষয় বিড়ালটিকে কোন পুরস্কার দেওয়ার কথা কেউ ভাবেন নি৷ অবশ্য, বিড়ালটি যদি পুরস্কার পেত তবে আমরা খুশিই হতাম৷

u আরও এক গণিত জগতের মৌলিক আবিদার ঘটালেন ফ্রান্সের এক তৃতীয় শ্রেণীর পড়য়া৷ তৃতীর শ্রেণীর পড়ুয়াটি স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল করার সহজ পদ্ধতি আবিষ্কার করে গণিত শাখাকে সমৃদ্ধ করেছে! এই পড়ুয়ার নাম---‘‘গাউস’’৷ পরবর্তী জীবনে গাউস মানব সমাজকে বহু কিছু আবিষ্কার করে উপহার দিয়ে গিয়েছেন৷.গাউস এক দরিদ্র. পরিবারে জন্মগ্রহণ যেতেন আবার কখনও বা স্কুল যেতেন!

স্কুলে একদিন এক ঘটনা ঘটল৷ ওই দিন গাউসের শিক্ষক মহাশয় গাউসকে একটি বিশাল যোগ করতে বলেন৷ যোগ অঙ্কটি হল1 হতে100 পর্যন্ত এই স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Number) গুলির সমষ্টি নির্ণয়৷ গাউস মুহূর্তের মধ্যে ণ্ণ্ হতে100 পর্যন্ত যোগ করেছিলেন৷

গাউস যেভাবে সহজে যোগ করার নিয়মটি দিয়েছেন, তা হল---

যোগফল Summation) =

এটি পৃথিবীতে মৌলিক আবিষ্কার৷

পরে এটিmodify করে যোগফলটিGeneral আকারে

 

অর্থাৎ আকারে লেখা হয়েছে৷ ..

বর্তমানে এটি একাদশ শ্রেণীতে পড়ানো হয়৷ এই যোগফলের সহজ নিয়ম আবিষ্কারের জন্যে গাউসের নাম গণিতের জগতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে৷