মানুষ কবে ‘মান হুঁশ’ হবে

লেখক
জিজ্ঞাসু

এই পৃথিবীতে  লক্ষ লক্ষ বছর হল মানুষের আগমন হয়েছে তবু আজকের পৃথিবীতে মানুষের আচরণ দেখে মনে হয় সাধারণভাবে মানুষ প্রায় আদিমই আছে৷ বিচ্ছিন্নভাবে পরিবেশ বিজ্ঞান বা জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ বিজ্ঞান নিয়ে অতিসীমিত গবেষণা চললেও, সাধারণ মানুষের ভাষায়---প্রচার মাধ্যমে তা আসে না৷ ফলে মানুষ অজ্ঞানতার অন্ধকারেই ঘুমিয়ে থেকে মনে করছে, এইতো বেশ আছি৷ একটা বাচ্চা কুকুর এক টুকরো হাড় চিবোচ্ছে, মাংসের গন্ধ পেয়ে৷ চিবোতে গিয়ে ওর মাড়ি কেটে গিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে, কুকুরটির সে বোধ নেই৷ ও নিজের রক্তের নোনতা স্বাদেই বড় সুখ পাচ্ছে৷ এখন কোনো মানুষ ঐ শুকনো হাড় থেকে কুকুরটিরে বাঁচাতে গেলে সে তীব্রভাবে প্রতিবাদ করবে, সে হয়তো বলতে চায়, সুখ থেকে আমাকে বঞ্চিত করা হলে মানবোনা৷ অজ্ঞ সাধারণ মানুষকেও তেমনই অন্ধকারের তামসিক সুখ থেকে, জেনে শুনে বুঝে বেরিয়ে আসতে হবে জ্ঞানের আলোতে৷ বিজ্ঞানীদের এই কথাটা অনুভবের চেষ্টা করতে হবে৷ যতবেশী সংখ্যক স্থলজ বা জলজ প্রাণী মানুষের আশেপাশে থাকবে, ততই পরিবেশে সদর্থক শক্তির দেওয়া নেওয়া থাকবে , মানুষের স্বাস্থ্য শান্তি সামর্থ্য বহুগুণিত হবে৷ যদি মানুষ এই সত্য-দৃষ্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে, সামূহিকভাবে সভ্যতার বিনাশের জন্য দায়ী থাকবে৷ আধুনিক সমাজে  মানুষের অতি লোভের কারণে অসহায় স্থল বা জলের প্রাণীদের নিরন্তর খাদ্যের নামে বা ধর্মের নামে হত্যা করা হচ্ছে৷ দিনরাত পৃথিবীর সর্বত্র হত্যার সময় ওদের যন্ত্রণা ও আর্তনাদের তরঙ্গ পৃথিবীর আকাশ বাতাস জলবায়ুকে ক্রমশঃ উত্তপ্ত করছে৷ দিন দিন পৃথিবীর উত্তাপ বাড়ছে সেটা অনুভব করেও সাধারণ মানুষ তার লোভ লালসার কাছে অসহায়ভাবে মাথা নত করে, সত্যকে ভুলে থাকতে চাইছে৷ পরিবেশ দূষিত হবার আরো অনেক কারণ আছে, কিন্তু মুখ্য হচ্ছে মানুষের ভূল আহার৷ জল হল মানুষের জীবন৷ নদী বা সমুদ্রের সেই জলকে শুদ্ধ রাখে জলজ প্রাণীরা৷ এখন দিনরাত ঐ সব প্রাণী হত্যার ফলে অসুখ রোগ-শোক-যন্ত্রণা ছাড়াও একটা মহাপ্রাকৃতিক বিপর্যয়কে মানুষ তার অজ্ঞতার কারণে আহ্বান করছে৷ পৃথিবীর  উপরিভাগের উষ্ণতা যত বাড়বে পৃথিবীর উত্তর মেরুতে জমে থাকা বরফ তত দ্রুত গলবে সমুদ্রের জলস্তর ক্রমশ বাড়বে ৷ ফলে পৃথিবীর বহুদেশ, শহর, নগর,জনপদ সভ্যতা, সংসৃকতি, বিজ্ঞানের এতখানি এগিয়ে আসা এক লহমায় সমুদ্র তলে হারিয়ে যাবে৷ আমরা আশা করব মানুষ বিস্তারিত চেতনায় জেগে উঠবেন৷ মানুষের পৃথিবীতে আসার উদ্দেশ্য মহান বিশ্বের সর্বপ্রাণ ও গ্যালাক্সিগুলিকে এক নব্য মানবিক সংযোগে সংযুক্ত করা, এক ঋদ্ধ সিদ্ধ ও সমৃদ্ধ বিশ্ব পরিবার তৈরী করা৷ আত্মসচেতন মানুষ এই কাজ করেই নেবে৷ সাধারণ মানুষ যত বেশী এ কথাটি বুঝে নিয়ে এগিয়ে আসবেন, মানুষ তার লক্ষ্যে পৌছতে ততই গতি পাবেন ৷ পৃথিবীতে মানুষের আসা সার্থক হবে৷ পৃথিবীমাও আনন্দিত হবে৷