প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতার পর থেকেই অসমে বাঙালীদের হয়রানি করা হচ্ছে নানা অজুহাতে৷ বর্তমান সরকারও এর ব্যতিক্রম নয়৷ বিদেশী সনাক্তকরণের নামে বাঙালীদের নাস্তানাবুদ করছে বর্তমান সরকারও৷ গত ২২শে ডিসেম্বর ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনের অসম রাজ্যসচিব শ্রীসাধন পুরকায়স্থ এক সাংবাদিক সম্মেলনে অসমে বাঙালীদের বিদেশী সনাক্তকরণের নামে হেনস্থা করা ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রতিবাদে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন দেশভাগের সময় তদানীন্তন জাতীয় নেতা মহাত্মা গান্ধী, সর্দার বল্লভভাই পটেল, জওহরলাল নেহেরু প্রমুখ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দেশভাগের বলি ছিন্নমূল উদ্বাস্তু বাঙালীদের নাগরিকত্ব ও পুনর্বাসন দেওয়া হবে৷ স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৭৭ বছরে অসমে অনেক মুখ্যমন্ত্রী এলেন, গেলেন কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতি কোন সরকারই রক্ষা করেনি৷ আজও বিদেশী সনাক্তকরণের নামে ছিন্নমূল বাঙালীদের নানা ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, কিন্তু নেতাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত করা হচ্ছে না৷ অথচ ওইসব জাতীয় নেতাদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যে বড় বড় মূর্ত্তি বসানো হয়েছে৷ শ্রীপুরকায়স্থ বলেন--- জাতীয় নেতাদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হলে তাদের মূর্ত্তি বসিয়ে নয়, স্বাধীনতার প্রাক্কালে ওইসব নেতাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করাই হবে প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত অসমের কোন সরকারই সে পথে গেল না৷ অথচ অসমের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ভূমিপুত্র বাঙালীরাই৷ আর্থিক দিক থেকে দুর্বল ক্ষুদ্র অসমের আর্থিক বুনিয়াদ মজবুত করতে সাবেক বা অখণ্ড বাংলার রংপুর গোয়ালপাড়া জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল অসমের সঙ্গে যুক্ত করা হয়৷ কিন্তু ঐসব অঞ্চলের ভূমিপুত্র বাঙালীদের অধিকার খর্ব করার কথা ছিল না৷ আজ দেশ ভাগের পর জাতীয় নেতাদের প্রতিশ্রুতি ভুলে অসমে বসবাসকারী বাঙালীদের নানা ভাবে হেনস্থা করা ওই সব নেতাদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করারই সামিল৷ শ্রীপুরকায়স্থ বিরক্ত সহকারে বলেন যখন নেতাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হল না তখন লোক দেখানো শ্রদ্ধা দেখিয়ে ওইসব মূর্ত্তি বসিয়ে রেখে লাভ কি? অবিলম্বে ওইসব মূর্ত্তি সরিয়ে ফেলা হোক৷
- Log in to post comments