নেতাদের ভাষা সংযত হওয়া উচিত

লেখক
প্রভাত খাঁ

ভারতযুক্ত রাষ্ট্রটি বহুভাষাভাষী ও বহু ধর্মমতের আশ্রিত বিভিন্ন মানুষের দেশ৷ এই দেশ শুধু হিন্দু আর মুসলমান দেশ নয়৷ কিন্তু শাসকগুলো বর্ত্তমানে সবটাই বিভিন্ন নামকেওয়াস্ত জাতীয় রাজনৈতিক দলের ভিন্ন ভিন্ন নামে আঞ্চলিক দল হিসাবে সারা ভারতে রাজ্যগুলিতে ও কেন্দ্রে শাসন করে চলেছে৷ যেমন আজকের কংগ্রেস এটা হলো ইন্দিরা কংগ্রেসের দল৷ বিজেপি দলটি জনতা দল ভেঙ্গে আর এস.এস এর নিয়ন্ত্রণে গড়ে উঠেছে৷ কমিউনিষ্ট দল ভেঙ্গে গড়ে উঠেছে সিপিআই (এম), তৃণমূল কংগ্রেস দলটি গড়ে উঠেছে ইন্দিরা কংগ্রেস ভেঙ্গে ৷ ঠিক তেমনই দক্ষিন ভারতে আঞ্চলিক  দল ডি.এম.কে ভেঙ্গে এ আই. এডি এমকে হয়েছে৷ তাছাড়া মূলতঃ অধিকাংশ রাজ্যেই অতীতের কংগ্রেস ভেঙ্গেই আঞ্চলিক দলের জন্ম হয়েছে৷ এরা অধিকাংশ সময় যে দলের সদস্য সংখ্যা নির্বাচনে বেশী হয় তাঁদের দলে মিশে শাসনে যায়৷ ঠিক তেমনই মুসলিম লীগের সমর্থকগণ দেখা যাচ্ছে তাঁরাও নোতুন দল গড়ছে৷ যেমন হঠাৎ দেখা গেল মিমি, এ.আই.এস ?  ভারতের গণতন্ত্রটাই বহুদলীয় হওয়ায় প্রকৃত গরিষ্ঠতা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে কোন দলই পায় না৷ অনেক সময় সাংসদ, বিধায়কের হিসেবেও গরিষ্ঠতা থাকে না৷ তাই খিচুড়ি সরকার কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিতে চলে আসছে নিছক রাজশক্তির সুযোগ নিতে৷

তাতে দেখা যাচ্ছে দলগুলির নীতি ও আদর্শ বলতে প্রায় কিছুই নেই৷ যিনি বা যাঁরা দু’একজন দল ভেঙ্গে দল গড়েন তাঁদের খেয়াল খুশিতে দল ওঠেও বসে৷ তাই বর্ত্তমানে রাজনীতিতে দলভাঙ্গা ভাঙ্গীটা প্রধান হয়েছে৷ করোনার আক্রমণে আক্রান্ত ভারত৷ করোনা নিয়ন্ত্রণে কোন নজর নেই৷ সরকার কিন্তু বোটের ‘খেলা করে’’ গদী লাভে মশগুল৷

তাহলে বলতেই হয় ভারতের গণতান্ত্রিক সরকার মানুষের ভালো করার কথা ভাবার দরকার মনেই  করেন না, তারা গদীর মোহে আচ্ছন্ন৷ তাই এঁদের উচিত শিক্ষা দেওয়াটা নাগরিকদের কর্তব্য৷ এঁরা গদীর লড়াইয়ে যেন উন্মাদ৷ বিজেপি দলের নেতা  বলছেন--- ‘‘হেরে গেলে  তৃণমূল দলটাই উঠে যাবে৷ তিনি যে সে  নেতা নন, তিনি ভারতেরই প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্র মোদী৷ বিজেপি হেরে গেলে কি বিজেপি দল উঠে যাবে না! তার দলতো তৃণমূল এর দলছুটদের নিয়েই এ রাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে৷ সেই দল এ রাজ্যে দুর্বল বলেই সমস্যা সংকূল ভারতের শাসনকে শিকেয় তুলে রেখে তিনি ও কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাননীয় অমিত শাহ এই পশ্চিম বাঙলায় পড়ে আছেন একমাত্র ভারতের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে গদীচ্যুত করতে ‘ছল বল কৌশলে৷ সেটা পশ্চিম বাঙলার নাগরিকগণ যাঁরা সচেতন তারা বুঝতে পারছেন৷ যে দলগুলো শাসনে ছিল সেই দলগুলো রাজ্য শাসন ক্ষমতা হারিয়ে আগের মতো বেঁচে আছে? না, তারা বেঁচে নেই৷ তারা অর্দ্ধমৃত হয়ে নির্বাচনে অস্তিত্ব রক্ষায় কোথাও কোথাও নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে৷ কারণ গদীতে যাঁরা থাকেন কি কেন্দ্র আর রাজ্যে তাঁরা তো স্বৈরাচারী শাসকের  মতই হুংকার ছাড়েন আর সবকটি আসন কবজা করার  লক্ষ্যকে সামনে রেখে নির্বাচনের আসরে ‘খেলযুদ্ধের অভিনয় করে চলেন  নবাগত অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে৷  এটাকে কি  রাজনৈতিক, নির্বাচনে না একধরণের  কুৎসিত কৌশলবলে? রাজনৈতিক দলের দেশ সেবক কতজন  আছেন? এটাই জনগণের প্রশ্ণ৷ নির্বাচনে নেতাদের  মুখ দিয়ে যে ভাষা বেরুচ্ছে এটা কি দেশনেতাদের ভাসা? আর নির্বাচন কমিশন যে নীরব দর্শক তার কারণটাই বা কী? মানুষ এতই বোকা!