নেতাজীর চিন্তাধারার মূল কথা হ’ল–সমন্বয়বাদ৷ তিনি বলেছেন, That synthesis is called by the writer samyavad—the Indian word, which means literally—the Doctrine of Synthesis or equality’’—(Indian Struggle by Netaji).বলাবাহুল্য নেতাজীর সাম্যবাদ ও মার্কসের সাম্যবাদ এক নয়৷ মার্কসের সাম্যবাদ কেবল আর্থিক স্তরে সীমাবদ্ধ৷ কিন্তু নেতাজীর সাম্যবাদ জীবন ও সমাজের সর্বস্তরে পরিব্যাপ্ত৷ মানুষের ভৌতিক (Physical) ও আত্মিক প্রগতির সাম্য, সমাজ জীবনের অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, শিল্পকলা, ধর্মনীতি–সকল দিকের সুসামঞ্জস্য পূর্ণ বিকাশই নেতাজীর কাম্য ছিল৷ তাই একে ব্যাখ্যা করে আরও পরিষ্কার করে বলা হয়েছে– The doctrine of synthesis বা সমন্বয়বাদ৷
আত্মিক ও দৈহিকের সমতা ঃ ভারতের ইতিহাস বিশ্লেষণ প্রসঙ্গে নেতাজী বলেছেন–‘‘আধ্যাত্মিক দিকের ওপরে অতিরিক্ত জোর দেওয়ার জন্যে ভারতের বিজ্ঞানের বিকাশ হতে পারেনি৷ ঐহিক জীবনে, প্রাকৃতিক ক্ষেত্রে ভারতবর্ষ দুর্বল হয়ে রয়েছে৷ ...আমাদের গৌরবোজ্জ্বল যুগগুলিতে আত্মা ও দেহের, চৈতন্য ও জড়ের দাবীর মধ্যে একটা মধ্যপথ বা সমন্বয় বের করা হয়েছিল৷ এর ফলে দুই ক্ষেত্রেই একই সঙ্গে সমান অগ্রগতি হতে পারে৷ আত্মা ও দেহের মধ্যে এমন এক পারস্পরিক সম্বন্ধ রয়েছে৷ যার দরুণ দেহকে তুচ্ছ করলে যে দেহেরই ক্ষতি হয় তা নয়, পরিণামে অধ্যাত্ম জীবনেও মানুষকে দুর্বল করে ফেলে৷ আজকাল ভারত কেবল দৈহিক শক্তিহীনতা নয়, আধ্যাত্মিক ক্লান্তিতেও ভুগছে৷ এটা আমাদের জীবনের একটা দিককে তাচ্ছিল্য করবার পরিণাম৷ যদি আবার আমাদের আত্মমর্যাদা ফিরে পেতে হয় তবে দৈহিক ও আত্মিক দুই ক্ষেত্রেই আমাদের একই সঙ্গে এগুতে হবে৷’’ –নেতাজীর এই উক্তির মধ্যে তাঁর আদর্শের একটা সুস্পষ্ট রূপরেখা খুঁজে পেতে অসুবিধা হয় না৷
গান্ধীজী ও নেতাজীর আদর্শের তুলনা ঃ এখন দেখা যাক্ গান্ধীজীর আদর্শের সঙ্গে নেতাজীর আদর্শের পার্থক্য কোথায়? গান্ধীজী ছিলেন প্রাচীনতার ভক্ত৷ তিনি প্রাচীনতার মোহে এমনই আবদ্ধ ছিলেন যে আধুনিক বিজ্ঞান, যন্ত্রশিল্প, উন্নত জীবনমান–এ সব কিছুকেই তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন৷ এইখানেই নেতাজীর সঙ্গে গান্ধীজীর চিন্তাধারার সর্ব প্রথম সংঘাত৷ কেননা, বিবেকানন্দের মানস শিষ্য নেতাজী চেয়েছিলেন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের চিন্তাধারার সমন্বয়–ধর্মের সঙ্গে বিজ্ঞানের সমন্বয়৷ নেতাজী এক্ষেত্রেও তাঁর সমন্বয়বাদের প্রয়োগ করেছেন৷
অর্থনীতি ক্ষেত্রে গান্ধজী পুঁজিবাদের ওপর আঘাত হানার পক্ষপাতী ছিলেন না৷ গান্ধীজী বলেছেন, ‘‘আমি কারও সম্পত্তি কেড়ে নিতে চাই না, তা চাইলে অহিংসার বিধান থেকে বিচ্যুত হতে হবে৷’’ (স্পীচেস্ অ্যাণ্ড রাইটিংস্ অব্ মহাত্মা গান্ধী পৃঃ– ৩৮৪–৮৫)৷ গান্ধজী বলেন, ‘‘আমি পরামর্শ দিই যে, ধনবানরা কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতে পারে কিন্তু তা সকলের সেবায় উৎসর্গ করার জন্যেই করবে৷’’ (হরিজন ২২–২–৪২)৷ গান্ধীজীর এই তত্ত্ব ‘‘অছিবাদ’’ নামেই খ্যাত৷
সুভাষচন্দ্র অছিবাদের ওপর আস্থা রাখতে পারেননি৷ পুঁজিপতিরা স্বেচ্ছায় সকলের সেবায় তাদের ধন উৎসর্গ করবে–এই অবাস্তব বিশ্বাসের ওপর তিনি দেশের দরিদ্র জনগণের ভাগ্য ছেড়ে দিতে প্রস্তুত নন৷ নেতাজী পুঁজিবাদী কাঠামোর অবসান চেয়েছিলেন৷ ১৯৩৮ সালে হরিপুরা কংগ্রেসের সভাপতির ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সমগ্র কৃষি ও শিল্প ব্যবস্থাকে সামাজিক মালিকানার অধীনে অনবার জন্যে রাষ্ট্রকে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে’’৷ কৃষিক্ষেত্রে তাঁর মত–‘‘জমির উৎপাদন বৃদ্ধি করবার জন্যে কৃষিকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে হবে৷’’ শিল্পের ক্ষেত্রে তিনি যন্ত্র শিল্পকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ –অথচ আধুনিক বিজ্ঞান ও যন্ত্রশিল্পের প্রতি গান্ধীজীর ছিল অহেতুক ঘৃণা–তিনি গ্রামে গ্রামে প্রাচীন পন্থায় কুটীর শিল্প গড়ার ওপর জোর দিতেন৷
কৌশল হিসেবে গান্ধীজীর অহিংসাবাদকে সংগ্রামের বিশেষ স্তরে মেনে নিলেও সকল সময়ের জন্যে একটা অচল অনড় দর্শন হিসেবে একে নেতাজী কখনও মেনে নিতে পারেন নি৷ নেতাজী বরণ করেছিলেন বিবেকানন্দের শক্তিবাদকে৷ এ সমস্ত কারণেই কালক্রমে গান্ধীজীর ও নেতাজীর মধ্যে বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল৷
সুভাষ ও মার্কস ঃ এখন বিচার করা যাক সুভাষচন্দ্রের চিন্তাধারার সঙ্গে মার্কসবাদের সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য কোথায়? নেতাজী অথনৈতিক আদর্শ হিসাবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী–তা পূর্বেই বলেছি৷ তিনি বলেছেন, ‘‘আজকাল সমাজতন্ত্রের নোতুন চিন্তা ভারতে আসছে পাশ্চাত্য থেকে ও তা অনেকেরই চিন্তাধারায় বিপ্লব আনছে, কিন্তু এদেশে সমাজতন্ত্রের চিন্তা এমন কিছু নোতুন নয়৷ আমাদের এরূপ মনে হয় এই কারণে যে আমরা ইতিহাসের যোগসূত্র হারিয়ে ফেলেছি৷’’ প্রাচীন ঋগ্বেদের বিখ্যাত মন্ত্র ‘‘সংগচ্ছধ্বং সংবদধ্বং সংবো মনাংসি জানতাম,/ দেবাভাগং যথা পূর্বে সংজানানা উপাসতে৷...’’ এর মধ্যেও তো পাই পূর্ণ সমাজতন্ত্রেরই চিন্তাধারা৷ মন্ত্রে বলা হয়েছে–‘‘আমরা সবাই একই সাথে চলব, একই ধরণের মনের ভাব প্রকাশ করব, আমাদের মন এক হোক, পুরাকালে দেবতারা যেমন যজ্ঞের হবি সমান ভাবে ভাগ করে খেতেন, আমরাও তেমনি বিশ্বের সমস্ত সম্পদ সমভাবে বণ্টন করে গ্রহণ করব৷...’’
নেতাজী বলেছেন, ভারতের জন্যে যে সমাজতন্ত্র উপযুক্ত, ‘‘সে সমাজতন্ত্র কার্লমার্কসের পুঁথির পাতা থেকে জন্ম নেয়নি, এর উৎপত্তি ভারতবর্ষের আপন চিন্তাধারা ও সংস্কৃতির মধ্যে’’–(রঙ্পুর বত্তৃণতা, ৩০শে মার্চ, ১৯২৬)৷ এখানেও সেই সমন্বয়বাদের আদর্শ–ভারতের আধ্যাত্মিক সম্পদের সঙ্গে সমাজবাদের সমন্বয়ই নেতাজীর কাম্য৷ তা যে কেবল ভারতের সমাজের উন্নতির জন্যেই প্রয়োজন তা নয়–তা সমস্ত বিশ্বের জন্যেও প্রয়োজন৷ তিনি বলেছেন– ‘‘It may be that the form of socialism which India will evolve will have something new and original about it, which will be benefit to the whole world.’’ (T. U. C. speech)
পুঁজিবাদের কাঠামোতে আঘাত হানার জন্যে ও সমাজতন্ত্রের পথে বলিষ্ঠ পদক্ষেপের জন্যে যদিও নেতাজী কার্লমার্কসের প্রশংসা করেছেন কিন্তু এও বলেছেন ঃ ‘‘অনেক কারণ রয়েছে যার জন্যে ভারতে কম্যুনিজম গৃহীত হবে না৷’’
প্রথমতঃ, কম্যুনিজম জাতীয়তাবাদের প্রতি অনুকূল মনোভাব পোষণ করে না৷ ...দ্বিতীয়তঃ, রাশিয়া আজ আত্মরক্ষায় বিব্রত ও বিশ্ববিপ্লব উস্কিয়ে দেবার মত স্বার্থবোধও আজ তার নেই৷ ...তৃতীয়তঃ, কম্যুনিজমের অর্থনৈতিক মতবাদের কিছু কিছু অংশ ভারতবাসীর কাছে খুব পছন্দসই হলেও অন্যান্য মার্কসীয় মতগুলি ভারতবর্ষের তীব্র বিরুদ্ধতার উদ্রেক করবে৷ চতুর্থতঃ, কম্যুনিষ্ট মতবাদে ইতিহাসে জড়বাদী ব্যাখ্যা একটা মুখ্যতত্ত্ব৷ এই ব্যাখ্যা তো ভারতবর্ষ পুরোপুরি কিছুতেই গ্রহণ করবে না৷....
...(ভারতের মুক্তি সংগ্রাম)
বিশেষ করে ‘ধর্ম’ সম্পর্কে মার্কসবাদী দৃষ্টিভঙ্গীকে নেতাজী একেবারে বরদাস্ত করতে পারতেন না৷ মার্কসের মতে ধর্ম হ’ল পুঁজিপতি–সৃষ্ট শোষণের হাতিয়ার ব্যষ্টি–সম্পত্তি–প্রথ্ সমাজে উদ্ভব হওয়ার ফলে সম্পত্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে সম্পত্তি মালিকেরা এই ধর্ম প্রথার আবিষ্কার করেছে৷
নেতাজী ধর্মকে মানুষের চরিত্র গঠনের ও সমাজতন্ত্র রচনার মূল ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবেই দেখেছেন৷
প্রাউট ও সুভাষচন্দ্রের চিন্তাধারা ঃ এবার প্রাউটের সঙ্গে সুভাষচন্দ্রের চিন্তাধারার তুলনামূলক আলোচনায় আসা যাক্৷ সর্বপ্রথম সকলের সঙ্গে প্রাউটের পরিচয় করিয়ে দিই৷ প্রাউট বা Prout হ’ল Progressive Utilisation Theory’র সংক্ষিপ্ত রূপ৷ বাংলাতে–প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব (সংক্ষেপে–প্রউত–ও বলা যায়)৷ সর্বমানবের কল্যাণের জন্যে বিশ্বের সকল সম্পদের যথার্থ উপযোগ–নীতিই প্রাউট দর্শনের মুখ্য প্রতিপাদ্য বিষয়–অর্থাৎ সোজা কথায় এটা একটা সামাজিক–অর্থনৈতিক দর্শন৷ প্রাউট বলছে, এ বিশ্বের সকল সম্পদের প্রকৃত মালিক বিশ্বস্রষ্টা–পরমব্রহ্ম৷ যেহেতু মানুষ কোন জিনিস সৃষ্টি করতে পারে না–তাই চরম মালিকানা স্বত্ব কোন ব্যষ্টির থাকতে পারে না৷ ‘‘বিশ্বের স্থাবর–স্থাবর কোন সম্পত্তিই কারুর ব্যষ্টিগত সম্পত্তি নয়৷ সব কিছুই তাদের সকলের পৈত্রিক সম্পত্তি, আর সেই পিতা হচ্ছেন ব্রহ্ম৷ (‘আজকের সমস্যা’–শ্রী পি. আর. সরকার)৷
শ্রী সরকার আরও বলেছেন, ‘‘এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড জীব মাত্রেরই যখন পৈত্রিক সম্পত্তি তখন কারো ঘরে প্রাচুর্য্যের স্রোত বয়ে যাক, আর কেউ অনাহারে তিলে তিলে শুকিয়ে মরুক এ অবস্থাটা ন্যায়–ধর্মসম্মত বলা যেতে পারে কি?’’ ‘‘তাই’’ প্রকৃত ‘‘আধ্যাত্মিক আদর্শ অনুযায়ী ব্যষ্টিগত–মালিকানা ব্যবস্থাকে চরম ও পরম বলা চলে না, আর তাই পুঁজিবাদকেও সমর্থন করা যায় না৷ ...জীবের সামূহিক স্বার্থের কথা ভাবতে গেলে তাই পুঁজিবাদের উচ্ছেদের প্রয়োজন৷’’
প্রাউট প্রগতিশীল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে–যে সমাজতন্ত্রে প্রতিটি মানুষের অন্ন–বস্ত্র–শিক্ষা–চি ও বাসস্থানের গ্যারাণ্টী থাকবে–যেখানে থাকবে না পাহাড় প্রমাণ অর্থনৈতিক বৈষম্য–থাকবে না বিন্দুমাত্র শোষণ৷
কার্লমার্কসের মতে আধ্যাত্মিক আদর্শের সঙ্গে সমাজতন্ত্রের সঙ্গতি নেই–পক্ষান্তরে–আধ্যাত্মিকতা পুঁজিবাদের সমর্থক৷ মার্কসের এ সিদ্ধান্ত যে চরম ভ্রান্ত তাই প্রাউট প্রমাণ করেছে–প্রাউট আধ্যাত্মিক মানবতাবাদের আদর্শের ভিত্তিতে তার প্রগতিশীল সমাজতন্ত্রের ইমারত গড়ে তুলেছে৷ নেতাজী সুভাষচন্দ্রের এইটাই ছিল স্বপ্ণ–ভারতে যে সমাজতন্ত্র আসবে তার ভিত্তি হবে–যা ভারতের প্রাণধর্ম–আধ্যাত্মিক জীবনবাদ৷
প্রাউট কৃষি শিল্পে যতদূর সম্ভব বৈজ্ঞানিক প্রথার ব্যবহারের কথা বলছে৷ গ্রামে গ্রামে শিল্প গড়ে উঠুক–হস্ত শিল্পগুলিকে যতদূর সম্ভব যান্ত্রিকীকরণ করা হোক–আধুনিক বিজ্ঞানের আশীর্বাদকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়া হোক–এটাই প্রাউট চায়৷
প্রাউট সংশ্লেষণাত্মক মানবতাবাদে বিশ্বাসী–ধর্মের সঙ্গে (অবশ্যই সে ধর্ম সর্ব কুসংস্কারমুক্ত ও সংকীর্ণতামুক্ত মানবধর্ম) আধুনিক বিজ্ঞানের–প্রাচ্যের ভাবধারার সঙ্গে পাশ্চাত্যের ভাবধারার মিলন চায়৷ ধর্ম, সাহিত্য, শিল্প, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, সমাজনীতি–সর্বক্ষেত্রে বিপ্লব শ্রী পি. আর. সরকারের কাম্য৷ প্রাউটের ও সংশ্লেষণাত্মক মানবতাবাদ ও নেতাজীর সমম্বয়বাদ অভিন্ন৷
শ্রী পি. আর. সরকার বলেন–আজ প্রয়োজন– New Man, New Plan, সমাজের সর্বাত্মক বিপ্লব ঘটাতে গেলে আগে চাই নোতুন মানুষ৷ বিবেকানন্দ বলেছেন–‘‘ত্ত্ত্রু Man making is my mission.’’’ নেতাজী তাঁর ‘তরুণের স্বপ্ণে’ ও বহু বত্তৃণতায় দেশবাসীকে চরিত্রবান ও আত্মিক শক্তিতে বলবান হতে আহ্বান জানিয়েছেন৷ সেই নোতুন মানুষ গড়ার জন্যে প্রাউট–প্রবক্তা দিয়েছেন বিজ্ঞানভিত্তিক যোগ সাধনা–শুধু সাধনা পদ্ধতিই তিনি দেননি–সেই সাধনা পদ্ধতি দেশের গ্রামে গ্রামে তথা সমগ্র বিশ্বের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে দেবার ব্যবস্থাও তিনি করেছেন৷ নোতুন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্ত্তন করে তিনি মানব চরিত্রের আমূল পরিবর্তনে অগ্রণী হয়েছেন৷ প্রাউট প্রবক্তা যে সর্বাত্মক বিপ্লবী চরিত্রের মানুষ গড়তে ব্রতী হয়েছেন–সে মানুষের নাম ‘সদ্বিপ্র’–যাঁরা বিশ্বের সমস্ত প্রকার অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন৷
প্রাউট প্রবক্তা তাঁর ‘মানুষের সমাজ, ২য় খণ্ডের শেষে বলেছেন, ‘এই সদ্বিপ্রদের কাজ করতে হবে সর্বদেশের জন্যে, সকল মানুষের সর্বাত্মক মুক্তির জন্যে৷ লাঞ্ছিত পৃথিবীর ধূলিলুন্ঠিত মানবতা তাঁদের আগমনের প্রতীক্ষায় অধীর আগ্রহে পূর্ব আকাশের দিকে চেয়ে আছে৷ তাঁদের সামনে থেকে অমানিশার অন্ধতমিস্রা কেটে যাক, নতুন সূর্যোদয়ে নতুন দিনের মানুষ নতুন পৃথিবীতে জেগে উঠুক৷
নিঃসন্দেহে নেতাজীর স্বপ্ণ আজ প্রাউটের মধ্যে মূর্ত্ত হয়ে উঠেছে৷
- Log in to post comments