নিহত শৈশব

লেখক
বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়

সেদিন শিশুদিবস, হেমন্তের  সকাল

দেখলাম শহরের ফুটপাতে, একটি হোটেল

কিংবা রেস্তোরা হবে

সেখানে কাজ করছে এক বালক

নাম তার ফটিক৷

পাশের গলিতেই একটি চায়ের দোকানে

অতি সাবধানে কাপ আর প্লেট ধুচ্ছে আর এক বালক

নাম তার বলাই৷

 

ওদিকে কয়লাখনির নিকষ অন্ধকারে

মৃত্যুর কিনারে দাঁড়িয়ে কাজ করছে কাঙালীচরণ৷

রায় বাবুর ঝাঁ চক্চকে প্রাসাদে  সারাদিন

ঘর মোছে আর বাসন মাজে গফুরের আমিনা

পরনে তার সেলাই করা  আধ ময়লা জামা৷

 

চটকলে কাজ করতে করতে হাঁপানি ধরেছে

অমলের বুকে বড় কষ্ট তবু কাজ করতেই হয়৷

অপু আর দুর্গা রাস্তা সারাইয়ের কাজে

গহ্বরে খোয়া আর পিচ ঢেলেই চলে৷

 

ধারে ধারে শহরের বুকে রাত্রি নামে

বিজলি বাতির আলো জ্বলে

একে একে জড়ো হয় ফটিক বলাই আমিনা অপু

এমনই অনেক বিবর্ণ মুখ৷

 

এরা গল্প উপন্যাসের পাতা থেকে নেমেছে বাস্তবের প্রকাশ্য রাস্তায়

এদের শৈশব নেই,

বেঁচে থাকার রসদ নেই

আছে শুধু কালো দীর্ঘশ্বাস আর বেদনার সীমাহীন প্রান্তর৷