এদেশের গণতন্ত্রের কি শোচনীয় পরিস্থিতি! গণতন্ত্রের নামে বর্ত্তমানে রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় সব কটিই সেই অতীতের জাতীয় রাজনৈতিক দলের দলছুট দলভেঙ্গে সংখ্যায় বহু হয়ে গণতন্ত্রের নামে নির্বাচনে জয়ী হয়ে শাসনভার কব্জা করতে নির্বাচকদের মন জয় করতে এমন সব দেশের সার্বিক৷ উন্নয়নের কল্পে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছে যা দেখে মনে হয় দীর্ঘ ৭৭ বছরের স্বাধীন দেশে যেন কোন উন্নতি হয়নি এবার জনগণকে সেবা দিতে তারা কল্পতরু হয়েই আবির্ভাব হয়েছে! লক্ষ্য একটাই জয়ী হতে প্রত্যেকেই দাবী করছে তাদের দলই হলো সেরা৷ এটা যেন সেই নির্বাচন পরীক্ষা যেন তেন প্রকারে জন সমর্থন পেয়ে গদীতে যাওয়া৷ তাই দিনরাত সেই গুলি শুধু বিরোধীদের সমালোচনা করে চলেছে আর সেই নির্বাচকদের সমর্থন পেতেই বোটের মাধ্যমে জয়ী হতে মরীয়া! নানা ধরণের উন্নয়ণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যদি নির্বাচনে জিতে গদীতে যাওয়া যায় তাহলে জনসেবা করে সারা ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে বিকশিত করবে৷ কিছু কিছু সংবাদপত্রও উঠে পড়ে লেগেছে যারা মনে হয় বিশেষ কোন সরকারের কাছ থেকে বেশ ভালোভাবে সাহায্য পেয়ে উপকৃত! অত্যন্ত দুঃখের কথা হলো যে একটি বহু ভাষাভাষী ও ধর্মমতালম্বীদের দেশের দলীয় সরকারগুলো কি কেন্দ্রে ও রাজ্যগুলিতে আপামোর জনগণের কেবলমাত্র দু’বেলা দুটো খেয়ে যাতে সকলে বাঁচতে পারে তা কি কোন স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা অদ্যাবধি করেছে! গণতন্ত্রের একটাই লক্ষ্য হওয়া আবশ্যিক তা হলো হতো দধিচীর বঞ্চিত জনগণকে এমনভাবে সুপরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে হবে যাতে তাঁরা দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে পরে বাঁচে৷ ৫টি জিনিষ যথা অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থান সবার প্রয়োজন৷ সেটা কি ১৪২ কোটি জনগণের দেশে হয়েছে? এদেশে এমনই বৈষম্য আর্থিক,সামাজিক দিকে যাতে মনে হয় যে শাসকগণ শোষিতদের কথাই ভাবেন না! তাঁরা মুষ্টিমেয় কিছু ভাগ্যবান ব্যষ্টিদের সেবা দিতেই এসেছেন গণতন্ত্রে ছত্রতলে এসে নিছক ঐ বোটটি পেয়ে! তাই হত দরিদ্র পরিবারগুলো চরম দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে, চরম বেকার সমস্যায়, নানাধরণের করের জ্বালায় তাঁরা ওষ্ঠাগত ও রক্তশূন্য হয়ে পড়ছেন! কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়ে হলো বর্তমান হিন্দুত্ববাদী বিজেপি কেন্দ্র সরকারের গত দশবছরে এক পেশে শাসনে সেই ধনী ভাগ্যবানরাই ধনে পুতে লক্ষ্মীলাভ করে চলেছেন৷ তাই এই বছরেই এই দেশে নাকি ২ লক্ষ কোটিপতি হয়েছেন আর কোটি কোটি হতদরিদ্র যাঁদের বোটে জিতে শাসনের গদীতে বসে তাঁদের অবস্থা সেই হত দরিদ্র এমনই ভাবে বঞ্চিতরা চিরকালই বঞ্চিত থেকে যায়৷ তাই একে গণতন্ত্র কি বলা যায়? যেখানে জনগণের সার্বিক কল্যাণের চিন্তা নেই৷
বলতে লজ্জা হয় ও কষ্ট হয় এটা হলো সংকীর্ণ দলতান্ত্রিক স্বৈরাচারিতাদের কুশাসন যা ভারত যুক্তরাষ্ট্রের বুকে চলছে! অতীতের কংগ্রেস সরকার কেন্দ্রে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দলত্যাগ আইন করেন যে আইন বলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বেশ কিছু সংখ্যক দলত্যাগ করে ব্যষ্টি স্বার্থে অন্য দলে যেতে পারবেন৷ এটাতে গণতন্ত্রের চরম বিরোধী আইন বোটারদের সঙ্গে কি বিশ্বাস ঘাতকতা করা নয়? যে প্রতীকে যাঁরা জিতেছেন সেই প্রতীককে ও দলকে অবহেলা করে অন্য দলে ভিড়ে যাওয়া কোন অধিকারে ঐ অবৈধ আইন করা হয়৷ আর অন্য দলগুলো সেটা মানলেন কোন দৃষ্টি ভঙ্গীতে? এতে নির্বাচিতদের কি বিবেক দংশন করলো না? এটা গণতন্ত্রী বিরোধী কাজ কি নয়? সেই আইন আজও বলবৎ! তাই এ কেমন গণতন্ত্র? আর যারা গণতন্ত্র বলে উল্লাস করছে তারাই বা কেমন গণতন্ত্রী? তাই দলীয় সংসদীয় গণতন্ত্রটাই পরিত্যাজ্য কি নয়? এবার বলতে বাধ্য হচ্ছি যাঁরা নাগরিক তাঁদের দায়িত্বটা কি? নির্বাচকগণকে এই পরিস্থিতিতে অবশ্যই নিজনিজ বিবেকের দ্বারা চালিত হয়ে বোট দিতে হবে প্রার্থীদের মধ্যে সত্যই যাঁরা কিছু সত্যাশ্রয়ী ও নীতিবাদী৷ মনে হয় নীতিবাদীরা কোন অবস্থাতে দলত্যাগ করবেন না৷ তাতে হয়তো কিছু হতভাগ্য দেশের মঙ্গল হতে পারে৷
- Log in to post comments