পাকিস্তানের জন্মই হয়েছিল অখণ্ড ভারতবর্ষের বুকে৷ সাম্প্রদায়িকতার বিষে দেশের ঐক্য, সংহতিকে চিরকালের মত ধবংস করে পশ্চিমী শক্তির দাদাগিরিকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ইংরেজ ও আমেরিকা তা করে গেছে৷ কিছু ইয়ংম্যানের সহায়তায়৷ আর যারা ভারতবর্ষের পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে গেছেন তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে তারাই৷ তাই তো পাকিস্তানপন্থীরা সেদিন দেশভাগের জন্য দাবী তুলেছিলেন৷ যেমন সংযুক্ত কমিউনিষ্ট দলের নেতারা যেমন জ্যোতিবসুরা৷
আর বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিপ্লবী অকুতোভয় নেতাজী সুভাষচন্দ্রের ‘‘দিল্লী চলো’’ অভিযানকে খাটো করে দেখাতে তাকে লোকচক্ষে অপমানিত করতে সেদিনের কংগ্রেস নেতা ও কমিউনিষ্টরা তো কম কুৎসা রটান নি৷ কিন্তু সত্যের জয় হয় তাই জনগণ আজও সেই কুৎসাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে নেতাজীকেই দেশবরেণ্য নেতা হিসাবে স্বীকৃতি দান করেছেন৷ আর আজ ভারতের সরকার তাকে মান্যতা দিতে বাধ্য হয়েছেন৷ সেই সাম্প্রদায়িকতার প্রতীক পাকিস্তান ভারত বিদ্বেষ অর্থাৎ হিন্দু বিদ্বেষকে মূলধন করে পৃথিবীতে এক ভয়ঙ্কর উগ্রপন্থী রাষ্ট্র হিসেবেই চিহ্ণিত হয়ে আছে৷ আজ পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের শিরোপা পরে পৃথিবীতে অবস্থান করেছে৷ যারা তাদের মদত দিয়ে সৃষ্টি করেছে আজ সেই পশ্চিমী সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো যেমন তাদের নেতা মার্কিন শাসক মিঃ ট্রাম্পই ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানকে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ করতেই হবে৷ পুলুওয়ামা হত্যাকাণ্ডের পর আর পাকিস্তানকে ছাড়া উচিত নয়৷ সন্ত্রাস প্রশ্ণে আর কোনও আপোষ নয়৷ আগে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে, ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে৷ তারপর অন্য কথা৷ বর্তমানে পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আগের প্রধানমন্ত্রীদের চেয়ে মনে হয় বেশী করে আই এস আই ও সেনা দলের মন্ত্রণায় ভারতের সঙ্গে দ্বৈত নীতির খেলায় মেতে মনে করেছেন তিনি রাজনীতির ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট খেলায় মেতেছেন৷ কয়েকমাস আগে পাক ভারত বিদেশ সচিব পর্যায়ে আলোচনার ব্যবস্থা করেন কিন্তু আলোচনার আগের দিন পাকিস্তানীদের দিয়ে কশ্মীরের কয়েকজন পুলিশকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে৷ ভারত তীব্র প্রতিবাদ ও আলোচনা খারিজ করে দেয়৷
আবার যে পাকিস্তান সার্ক আলোচনায় আগে যোগ দেয়নি, পুনরায় পাকিস্তানে সার্কভুক্ত দেশের আলোচনার আয়োজন করে ভারতকে আমন্ত্রণ করে৷ ভারত পাকিস্তানের আমন্ত্রণ খারিজ করে দিয়েছে৷ অত্যন্ত লজ্জার কথা তা হ’ল, গুরুনানকের কর্তারপুরে শিখ ধর্মগুরুর সমাধি ক্ষেত্রে গুরুদুয়ারে ভারতের শিখ ধর্মাবলম্বীরা যান৷ তাদের সঙ্গে ভারতের পাকিস্তানে অবস্থিত হাই কমিশনারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে দেয়নি পাকিস্তান সরকার৷ তাদের খালিস্থানী শ্লোগান ও উত্তেজক উক্তির শ্লোগান শোনান হয়৷ চরম অমিত্রচিত কাজ পাকিস্তানের মাটিতে ঘটানো হয়েছে৷ মনে হয় ইমরানের বন্ধু ক্রিকেটার সিধুঁর এসব নক্কারজনক আচরণ মন্ত্রী হিসেবে ভাল লাগেনি৷ পাকিস্তানের আচরণ বিশেষ করে সরকারের মদতে জঙ্গীদের উদ্ধত আচরণ ও কার্যাবলী সভ্যতাকে ছাড়িয়ে যায়৷ তার উদাহরণ হ’ল ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষ্যাতে যান তাঁর বাড়ীতে, তার কয়েকদিন পরে জৈশ মহম্মদের জঙ্গীরা পাঠানকোটে এসে এয়ারফোর্স ক্যাম্পে আক্রমণ করে৷ এটা কোন্ ধরণের পাকিস্তানি আচরণ৷ মোদ্দা কথা ভারত চিরকালই পাকিস্তানী ঔদ্ধত্বের জবাব সংযত ভাবেই দিয়ে আসছে বিশাল দেশের শাসক হিসাবে৷ কিন্তু জঙ্গী পাকিস্তানের হিংসাশ্রয়ী আচরণের শেষ নেই৷
এদিকে কশ্মীরে যা ঘটছে সেটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কাম্য নয়৷ বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচন পিডিপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের দল বয়কট করে৷ ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর নেতা ওমর আবদুল্লার অনেক উক্তি মোটেই ভারতীয় রাজনৈতিক নেতার মত নয়৷ তিনি এমন উক্তি করেন যেটা একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদের পক্ষে বেমানান৷ তার স্মরণে রাখা উচিত কশ্মীরের নিরাপত্তা রক্ষা করা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য৷ এই নিয়ে কটুক্তি বেমানান৷
ইমরান খান বলেছেন সেই পুরাতন দাবী কশ্মীর সমস্যাই হ’ল প্রধান সমস্যা৷ কিন্তু যে পাকিস্তান যে জোর করে কশ্মীরের এক-তৃতীয়াংশ দখল করে রেখেছে আজাদ কশ্মীর নাম দিয়ে আটকে রেখেছে সেটা কী আইনসম্মত? সেটা তো অখণ্ড কশ্মীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ ন্যায় ও সত্যের খাতিরে ইমরান একজন ক্রীড়াবিদ৷ তাই বলি সেটা ভারতকে প্রত্যর্পন করে পাকিস্তান ন্যায়, সত্যের পূজারী হোক৷ তারপর অন্য কথা৷ জঙ্গী হামলা বন্ধ করে একজন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনৈতিক নেতার পরিচয় দেওয়া হোক৷ সেটা না করে ভারতের কুৎসা করে, ক্ষতি করে, ভারতকে দোষ দিয়ে ভাঙ্গা রাজনীতির ঢাক যেন আর পেটানো না হয়৷
১২৫ কোটি ভারতীয় আর পাকিস্তানী অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করবে না৷ তাছাড়া কশ্মীরে বসে যারা দুই ভারতীয় ছদ্মবেশে পাকিস্তানের জয়গান করে চলে বংশানুক্রমে তাদেরও মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে৷ নচেৎ পাপের প্রায়শ্চিত্তই করতে হবে আল্লারই বিধানে৷ অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলতেই হয় অখণ্ড ভারতবর্ষকে রক্তাক্ত করে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে যারা দেশভাগ করে সুখভোগ করেছে আর করছেন তাদের কিন্তু ঈশ্বরের দরবারে ও জনগণের কাছে হিসেব দিতে হবে৷ তখন ভারতের হিসাবও লেখা হবে নতুন করে৷ দেশভাগই ভারতীয়দের সকল দুঃখ ও কষ্টের কারণ৷ এতে দেশের ঐক্য ও সংহতি, সততা, মানবিকতাটা ধবংস হয়েছে, আর জন্ম হয়েছে ভয়ঙ্কর নোংরা দলবাজী৷ দু’দেশেই ভারত ও পাকিস্তানে আর তার সঙ্গে বাঙলাদেশে৷ পুলুওয়ামার নৃশংস ঘটনা পাকিস্তানের জঙ্গী চরিত্রকে আবার ফুটিয়ে তুলেছে৷ এইবার ভারতকে কড়া জবাব দিতেই হবে৷ ভারত সরকার ও সেনাবাহিনী জঙ্গী হামলা বন্ধ করতে এমন কঠোর ব্যবস্থা নিক যেন পুলুওয়ামাই জঙ্গীদের শেষ হামলা হয়৷
- Log in to post comments