বিচিত্রতা প্রকৃতির প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্য অথচ ওই বৈচিত্র্যের মধ্যেই এক সুনিবিড় ঐক্য বিরাজমান৷ বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির ক্রোড়াশ্রিত মানুষের মন বড়ই বিচিত্র৷ চেহারা, গায়ের রং খাদ্য-পোশাকে-চলন-বলন-আচার-আচারণ সবকিছুতেই বৈচিত্র্য৷ আর এই মানুষের চরৈবেতি-প্রেষণা, তার আধারিত ভৌমিক সংরচনা আর এর সঙ্গে প্রতুলতা, স্বল্পতা, সামাজিক জীব হিসাবে সামাজিক দায়বদ্ধতা, বন্ধন, মনস্তাত্বিক বিকাশের ধারা সব মিলিয়ে চাওয়া-পাওয়া, চাওয়া-নাপাওয়া ইত্যাদি নিয়ে দ্বন্দ্বের শেষ নেই৷ আজকের সমগ্র পৃথিবীটাই নানা সমস্যায় জর্জরিত৷ আবার এই পরিবর্তনশীল জগতে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সমস্যা আসছে নব অভিনবরূপে৷ একটা সমস্যার সমাধান হল তো আর একটা নোতুন সমস্যা এসে গেল৷
সমস্যা অশেষ বিচিত্র হলেও সব সমস্যার অন্তরালে কতকগুলো একই ধরণের পূর্বশর্ত কাজ করে৷ যেমন প্রথমেই মনে রাখা দরকার যে মানুষ ত্রয়ী সত্তা বিশিষ্ট জীব৷ তাই মানুষের সমস্যাও ত্রিবিধ---দৈহিক, মানসিক ও আত্মিক ৷ সবার আগে আসে দৈহিক অস্তিত্ব জনিত বিষয়গুলি৷ দৈহিক অস্তিত্ব নিশ্চিত সুরক্ষিত হলে তবে আসে মানসিক-আত্মিক প্রস৷৷ তবে বিচ্ছিন্ন নয়, যুগপৎ৷ এই প্রসঙ্গে আরো খেয়াল রাখা দরকার মানুষের চাহিদাপূরণ, তৃপ্তি অতৃপ্তির পিছনে কলকাঠি নাড়ে মানুষেরই সত্তাগত বৈশিষ্ট্য বা গুণ৷ দ্বিতীয়ত, সমাধান সূত্রে স্থিতিস্থাপকতা দরকার৷ অর্র্থৎ স্থান-কাল-পাত্র অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য ও প্রাসঙ্গিক হওয়া দরকার৷ তৃতীয়ত, মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার নূ্যনতম প্রয়োজনগুলো না মেটার মৌলিক কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সম্পদের উৎপাদন-বন্টন ভোগ ব্যবস্থার কেন্দ্রীকরণ৷ কেন্দ্রীকরণের লক্ষ্য সবের্র্বচ্চ মুনাফা ও ব্যষ্টি গোষ্ঠীর সীমাহীন সুখের লালসা৷ তাই যেখানে কেন্দ্রীয়করণ সেখানেই সমস্যা শোষণ-বঞ্চনা -দারিদ্র্য-অনাহার-অর্র্ধহার ৷ বিকেন্দ্রীকরণ বা প্রতিটি মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া দৈহিক চাহিদা বা জাগতিক সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব নয় আর তা মানসিক ও আত্মাভিমুখী এষণার পরিপন্থী৷
সামাজিক মানুষের সর্বনিম্ন আধারিত পরিচয় গ্রামকেন্দ্রিক৷ তাই প্রতিটি গ্রামকে স্বয়ম্ভর হতে হবে৷ গ্রামের স্বয়ম্ভরতা প্রতিটি গ্রামবাসীকে স্বয়ম্ভর করবে৷ কিন্তু গ্রামোন্নয়ন পরিকল্পনা গঠন করতে গেলে একটি গ্রাম নিয়ে সম্ভব নাও হতে পারে৷ দরকার পড়বে পাশাপাশি অবস্থিত কিছু গ্রামের সম্পদের সমবায়িক সমাবেশ৷ তাই উন্নয়ন পরিকল্পনার আধারিত সর্বনিম্ম ভৌম পরিচয় ক্ষেত্র হবে উপভুক্তি বা ব্লক অর্র্থৎ বহুমুখী ব্লক উন্নয়ন পরিকল্পনা৷ কেননা ভৌগলিক ও আর্থসামাজিক দিক থেকে কতগুলি বিষয় উন্নয়নের আবশ্যিক উপাদান৷ যথা-
এক : সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূপ্রকৃতি, স্বাভাবিক জলনির্গমন প্রণালী৷
দুই : জলবায়ুগত অবস্থা৷
তিন: জমির ঢাল৷
চার: স্থানীয় মৃত্তিকার প্রকৃতি৷
পাঁচ:সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক প্রয়োজন ও সমস্যা৷
ছয়:সংশ্লিষ্ট এলাকার পশুপক্ষী ও উদ্ভিদের কথা৷
সাত: সেখানকার মানুষের শারীরিক প্রয়োজন ও আকাঙ্ক্ষার কথা৷ এই শর্তগুলো গ্রহণ করলে এটাই বাস্তব যে গ্রামের মত ক্ষুদ্র পরিসরে সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে না৷ বেশ কিছু গ্রাম জুড়েই একটা স্বাতন্ত্র্য পাওয়া যায়৷ আবার এটাও বাস্তব যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী উপতক্যা পরিকল্পনা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, উচ্চতর শিক্ষার ব্যবস্থা, বনসর্জন, বড় বড় শিল্প স্থাপনা, ভূমিক্ষয় রোধ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, জলসরবরাহ প্রভৃতি বিষয়গুলোর সমস্যার সমাধান ব্লক স্তরে সম্ভব নয়৷ এজন্য চাই আন্তঃব্লক পরিকল্পনা৷ এমন কী আন্তঃজেলা ও ক্ষেত্র বিশেষে আন্তঃরাজ্য পরিকল্পনারও প্রয়োজন হতে পারে৷ পাশাপাশি অবস্থিত ব্লকগুলি পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এটি গড়ে উঠবে৷ উপযুক্ত উপস্থাপনা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে অঙ্গুলি হেলন করছে৷ যথা ১) ব্লক উন্নয়নের জন্য ব্লকের পরিক্ষেত্র হবে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে পূনর্গঠিত৷ রাজনৈতিকভাবে নয়৷ ২) ব্লক উন্নয়নের কাঠামোটা হবে গৃহ নির্র্মণশৈলীর মতো৷ অর্র্থৎ ধারাটা ভীত থাকে ছাদের দিকে৷ আগে ছাদ পরে ভীত--একটা উদ্ভট, কিন্তু, অবাস্তব ধারণা৷ সেই রকম ব্লক উন্নয়ন পরিকল্পনার গঠনগত দিকটা হবে---স্বয়ম্ভর ব্লক নির্র্মণ, স্বয়ম্ভর ব্লক নিয়ে স্বয়ম্ভর জেলা গঠন, স্বয়ম্ভর জেলা নিয়ে স্বয়ম্ভর রাজ্য৷ রাজ্য থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চল কেন্দ্র বা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা৷ এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম ৷ মহিরূহ এর প্রধান-মূল মাটির সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সন্নিবিষ্ট হলে তবেই তা ঝড় ঝঞ্ঝার সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে পারে৷ তাই উন্নয়ন পরিকল্পনা ওপর থেকে চাপিয়ে দিলে তা মানুষের প্রকৃত কল্যাণ করতে পারে না৷ ৩)ব্লকে ব্লকে বৈচিত্র্য আছে তাই প্রতিটি ব্লকে উন্নয়ন পরিকল্পিত হবে আলাদা আলাদা৷ ৪) যথাযোগ্য উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্লক বা অঞ্চলকে চিনতে হবে হাতের তালুর মতো৷ বাইরের মানুষের পক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্লক বা অঞ্চলের খঁুটিনাটি , ভালমন্দ,সুবিধা-অসুবিধা, নারী-নক্ষত্র জানা সম্ভব নয়৷ সুতরাং প্রকল্প রচনা ও প্রয়োগ স্থানীয় মানুষকেই করতে হবে বহিরাগতদের নাক গলানো চলবে না৷ বাইরের লোককে নাক গলাতে দিলেই শুরু হবে ধান্দাবাজি, শোষণ, বঞ্চনা, আধিপত্যবাদ৷ সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে হবে গ্রামের মানুষকেই৷ ৫) স্থানীয় ভাষা সংসৃকতি সংশ্লিষ্ট এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনার সঞ্চালক শক্তি হয়ে উঠবে৷ কেননা ভাষা-সাংসৃকতিক বন্ধন সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের অটুট ঐক্য বন্ধনে আবদ্ধ করবে৷ ৬) সুদৃঢ় ঐক্য বা সংহত শক্তি থেকেই এলাকার উন্নতির জন্য আগ্রহ ও জিদ তৈরী হবে৷ উন্নতির আগ্রহ না জন্মালে উন্নয়নের কাজ শুরু হবে কী করে৷ উন্নয়নের জন্য জিদ অবশ্যই থাকতে হবে৷ গভীর আগ্রহ থেকে জিদ জন্ম নেবে৷ ৭) গ্রামের তথা সবার উন্নয়নের জিদ যেখানে -ধনুক ভাঙ-সেখানে কাউকে ঠকানোর তো প্রশ্ণই ওঠে না আর এটাতো সহজ কথা৷ কাউকে ঠকানোর মনোভাব থাকলে সার্বিক উন্নয়ন সূদূঢ়পরাহত৷ তাই কাউকে ঠকাবো না এই মনোভাবই চাই৷ ৮) উন্নয়ন প্রকল্পের রচনাকার ও রূপকারদের -পাখীর চোখ-হবে গ্রামের মানুষকে স্বনির্ভর করা৷
ব্লকস্তর থেকে কেন্দ্রীয়স্তরের এই বহুমুখী উন্নয়ন ভাবনা বিশ্ব জুড়ে মানুষের জীবনের সর্বক্ষেত্রেই সুফল ফলাবে৷ ব্রাজিলীয় ফুটবল ঘরানার গোলমুখী স্ট্রাইকারদের প্রতিহত করতে -জোনাল মার্কিং-কৌশলটি খুবই জনপ্রিয়৷ তারা ম্যানমার্কিং-পছন্দ করে না৷ কেননা আধুনিক ফুটবলে স্ট্রাইকাররা নির্দিষ্ট পজিশনে নামলেও সারা মাঠ জুড়ে খেলে৷ মার্র্করকে তার পিছন পিছন সারা মাঠ জুড়েই মার্কিং করতে হয় ৷ জোনাল মার্কিং-এ নির্দিষ্ট জোনে ঢুকলেই জোনাল মার্র্কর এর আয়ত্তে এসে যায়, সেই রকম বহুমুখী ব্লক ভিত্তি উন্নয়ন পরিকল্পনায় স্থানীয় সমস্ত সমস্যারই সমাধান সম্ভব৷ দ্বিতীয়ত, মানুষের দুঃখ, দারিদ্র্য, অভাব, বঞ্চনা, অবদমন, আধ্যিপত্যবাদ নিয়ে রাজনীতি করাটা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে৷ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ নিজেরাই নিজেদের সম্যস্যার সমাধানে এগিয়ে আসবে৷ তৃতীয়ত: শতকরা ১০০ ভাগ গ্রামের মানুষই কর্মসংস্থানে নিশ্চিত নিরপত্তা পাবে৷ তখন কাজের পিছনে মানুষকে ছুটতে হবে না৷ কাজই মানুষের পিছনে ছুটবে৷ চতুর্থত ঃ ধনী নির্ধনের পর্বত প্রমাণ বিভেদটা চিরকালের মতো ঘুচে যাবে৷ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ একটি প্রবন্ধ বলেছেন -ধনের ধর্মই অসাম্য৷ অন্যের ন্যায্য অধিকার ছলে-বলে-কৌশলে আত্মসাৎ বা কুক্ষিগত না করলে ধনী হওয়া যায় না৷ ব্লক উন্নয়নের বিকেন্দ্রিত ব্যবস্থায় এক জায়গায় অর্থ (ধন) কেন্দ্রীভূত হওয়ার কোন পথ নেই৷ তবে সমষ্টি কল্যাণের স্বার্থেই মানুষের বিশেষ বিশেষ গুণকে প্রোৎসাহিত করার প্রয়োজন অবশ্য অনস্বীকার্য৷ পঞ্চমত : ব্লক স্তরীয় বহমুখী উন্নয়ন পরিকল্পনায় বহিরাগতদের মাতববরি, আধিপত্য বা আগ্রাসনের কোন সুযোগ থাকবে না৷ সংশ্লিষ্ট এলাকার যে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্থানীয় মানুষ, কাজ করবে স্থানীয় মানুষ ৷ স্থানীয় মানুষের প্রয়োজন ও তাদের সার্বিক কল্যাণেই থাকবে অগ্রাধিকার৷ বাইরে থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা যাবে না৷ নিজের এলাকায়, নিজেদের উপাদানে উপকরণে উদরপূর্তির ব্যবস্থা করতে হবে ৷ নূ্যনতম প্রয়োজনের নিত্যব্যবহার্য জিনিস নিজেরাই তৈরী করতে হবে৷ প্রয়োজনে বিকল্প দ্রব্য উদ্ভাবন করতে হবে৷ বর্হিপণ্য অবশ্যই বর্জনীয়৷ এরফলে বহিরাগতদের বাড় বাড়ন্তের দরুণ উদ্ভূত বহু সমস্যাই থাকবে না৷ ষষ্ঠত : আলোচ্য পরিকল্পনার ফলে প্রতিটি অঞ্চলই স্বনির্ভর হয়ে উঠবে৷ ফলে রুজি-রোজগারের ধান্দায় ভিটে মাটি ছেড়ে বাইরে ভিনদেশে পাড়ি দিতে হবে না৷ অন্যের ঘাড়ে গিয়ে পড়তে হবে না৷ দার্জিলিং-এ তো বহিরাগত গোর্খারা গোর্খাল্যাণ্ড আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে৷ রুজি রোজগারের সুযোগ নিয়ে দলে দলে এসে দলে ভারী হয়ে বাঙালীদের তাড়িয়ে এলাকার সব ক্ষমতা দখল করতে জঙ্গী আন্দোলন শুরু করেছে৷ ব্লক স্তরীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা কার্যকর থাকলে নেপালীরা দার্জিলিংয়ে পা ফেলারই জায়গা পেত না আর তাদের দার্জিলিং আসতেও হত না৷ সপ্তমত : ব্লক স্তরীয় সুষ্ঠু উন্নয়নের পরিকল্পনার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট ব্লকের আয়তন প্রয়োজনে পরিবর্তন করা যেতে পারে৷ একেবারে সংশ্লিষ্ট এলাকার মাটিতে বসে,এই এলাকার সব কিছু ভাল করে জেনে এখানকার উন্নয়ন পরিকল্পনার ছক তৈরী হচ্ছে বলে সে পরিকল্পনা অধিকতর বাস্তবোচিত ও ফলপ্রদ হতে বাধ্য (সূত্র:কণিকায় প্রাউট)৷ অষ্টমত : এই উন্নয়ন পরিকল্পনা সূত্রে স্থানীয় সামাজিক ও সংসৃকতির পর্ষদগুলি সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসম্পদ ও বস্তুসম্পদকে কাজে লাগানোর সুযোগ পাবে৷ ফলে স্থানীয় বেকার সমস্যার সহজেই সমাধানের সুযোগ আসবে৷ এরফলে গ্রামের মানুষ ক্রয়ক্ষমতা লাভ করবে ও ক্ষয়ক্ষমতা বাড়বে৷ আর তার ফলেই সন্তুলিত অর্থনীতির একটা মজবুত বুনিয়াদ তৈরী হবে ও মানুষকে বিভ্রান্ত করার, জঙ্গী তৈরীর পথটাও বন্ধ হবে৷ নবমত: ব্লক স্তরীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বিকেন্দ্রিত অর্থব্যবস্থারই পরিশেষ বা ফলিত রূপ৷ এর চরম লক্ষ্য হল সমাজের সার্বিক কল্যাণ৷ এটি হল একটি বৃহত্তর আদর্শ ও তা সামাজিক আর্থিক ইয়ূনিটে প্রতিষ্ঠা করতে হবে৷ এরফলেই সত্যিকারের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ আসবে ও তারই পরিণতিতে সমাজের সব সদস্যের মানসাধ্যাত্মিক বিকাশ বেশী করে সুনিশ্চিত হবে () দশমত : মাতৃভাষা অর্র্থৎ স্থানীয় ভাষার পুষ্টি-বিকাশ ঘটবে, শক্তিশালী হয়ে উঠবে৷ স্থানীয় সকল আদান-প্রদান কাজকর্মে মাতৃভাষার মাধ্যমেই হবে বলে৷
আসলে মানুষের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ নিরাপত্তা বা স্বাধীনতার সঙ্গে মানসিক তথা সাংসৃকতিক বিকাশ একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে জড়িত৷ আর এটাই ব্যষ্টিগত ও সমষ্টিগত জীবনে উন্নতি তথা সর্র্বত্মক কল্যাণকেই সুনিশ্চিত করবে৷ বিশ্বের যেখানেই হোক সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় মানুষেরা আর্থিক নিশ্চয় নিরাপত্তা না থাকলে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে আর দুর্বলতা আর্থিক উন্নয়নে বাধা হয়ে যায়৷ এইরকম মনবলহীন দুর্বল জনগোষ্ঠী সহজেই স্বার্থবাদীদের হাতে আর্থিক, রাজনৈতিক ও মানস-অর্থনৈতিক শোষণের শিকার হয়ে পড়ে৷ এই অবাঞ্ছনীয় পরিস্থিতিকে শক্তহাতে মপকাবিলার যোগ্য সোজা রাস্তা হল স্থানীয় সমস্ত কাজকর্মে ও আদানপ্রদানে স্থানীয় ভাষাকেই ব্যবহার করা৷ অর্র্থৎ প্রশাসন, শিক্ষাব্যবস্থা অর্থনীতি ও সাংসৃকতিক কর্মধারার মাধ্যম হবে স্থানীয় ভাষা৷ সব সরকারী, বেসরকারী চাকরী প্রতিষ্ঠান ও কার্র্যলয়গুলির যোগযোগের একমাত্র মাধ্যম হবে স্থানীয় ভাষা৷ কেননা ভাষা-সংসৃকতিই জাতিকে প্রাণধর্মে উজ্জ্বীবিত করে, মনোবলে উদ্বেলিত করে ও নির্ভীক প্রতিস্পর্ধী করে তোলে৷
- Log in to post comments