পশ্চিম বাঙলার নাগরিকগণ নির্বাচনে বাঙলার গৌরবময় রাজ্যের কথাভেবে মতামত  দান করুণ

লেখক
নিরপেক্ষ

আজ দেখা যাচ্ছে আগের মতো ভারতের রাজনৈতিক জগতে দেশসেবক নেই৷ তাঁরা জনসংযোগ করতেন ও জনগণকে সম্মান দিতেন৷ তাঁরা ছিলেন জনসেবক৷ আজ যারা রাজনীতিতে এসেছে তারা অধিকাংশই ধান্দাবাজ আর ধনী৷ এরা রাজনীতিতে এসে ছল-বল-কৌশলে দলে ঢুকে এম.এল.এ ও এমপি হয়ে গুছিয়ে নিয়ে ঠিক  নির্বাচনের প্রাককালে দলছুট হয়ে দলভাঙ্গাভাঙ্গী করে নিজেদের আখের গুছোয়৷ আর এই প্রবণতাটা বেড়েছে এ রাজ্যে কারণ দিল্লির বিজেপি সরকার এই সমস্যা সংকূল পশ্চিম বাংলাকে কব্জা করে বাঙলার কৃষ্টি সংসৃকতি ও বাঙলার রাজনৈতিক সচেতনতাকে চিরকালের মতো ধবংস করতে কুসংস্কারাচ্ছন্ন বিশেষ সাম্প্রদায়িকতাকে আমদানী করে বাঙলা৷ নিজস্ব বাঙালীয়ত্বটাকেই শেষ করে দিতে চায় বাংলার দলছুটদের দলে টেনে৷ এর হাত থেকে রক্ষা পেতে সচেতন বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে, কারণ এরা হলো হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী ও ধনীদের দালাল৷ এরা চায় বাংলাটাকে ধবংস করতে৷ তাই যে সব দলছুটরা এইদলে জড়ো হয়েছে তাদের সম্বন্ধে বাঙালীদের খুবই সজাগ থাকতে হবে৷ অন্যদল বিশেষ করে তৃণমূলের অনেকেই বাঙলার বিজেপি দলে ঢুকে ও কেন্দ্রের হিন্দীওয়ালা বিজেপি নেতাদের জালে আটকে পড়ে রাজ্যের সর্বনাশে পা বাড়িয়েছে৷ যেটা বর্তমানে সমস্যা সংকুল বাঙলার এক অশনি সংকেত৷ তাই ইংরেজরা এদেশের সর্বনাশ করে সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করে আর ধীরে ধীরে সারাভারতবর্ষকে কব্জা করে৷  ঠিক তেমনই ধর্মনিরপেক্ষ ডানাহীন ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে হিন্দী ওয়ালারা হিন্দী সাম্রাজ্য গড়ে তুলবে৷ তাই সাবধান! বাঙলা ও বাঙালীর এক টুকরো রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ৷ পশ্চিমবাঙলার আয়তনে এতোটা কম তার পশ্চাতে অতীতের  নেতারা৷ যারা চিরকালই সর্বনাশ করেই যাচ্ছে এই মহান ভারতবর্ষের৷

বাঙালীরাই স্বাধীনতার সংগ্রামে প্রাণ দিয়েছেন আর দেশভাগের  পর সেই সাম্প্রদায়িকতার জিগিরে বিতাড়িত হয়েছে৷ এসব আমরা দেখে আসছি ও সবই সহ্য করে চলেছি৷ আর ভারতের মধ্যে যে সামান্যতম অংশ পশ্চিমবাঙলা এটাই কিন্তু সব বাঙালী  হিন্দু ও মুসলমানদের অস্তিত্বরক্ষার একমাত্র স্থান৷ এটা আজ এই রাজ্যের ভেদাভেদ ভুলে বাঙালীদের মানবিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করে জঘন্য সাম্প্রদায়িকতাকে ভুুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগুতে হবে সামনের দিকে৷ আজ ২০২১ এর রাজ্যনির্বাচন এক চরম পরীক্ষার  দিন এই মাটির মানুষদের৷  বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বলেছেন তাঁর বিখ্যাত কবিতায়---

‘‘বাঙলার মাটি বাঙলার জল

বাঙলার বায়ু বাঙলার ফল

পুণ্য হোক, পুণ্য হোক , পুণ্যহোক হে ভগবান৷

-------------------------------------

বাঙলার ঘরে যত ভাই বোন

এক হও এক হও এক হও হে ভগবান

অত্যন্ত লজ্জা ও দুঃখের কথা বাঙালী বড়ই আত্মবিস্মৃত জনগোষ্ঠী৷

‘‘কাজী নজরুলও বলে গেছেন--- হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোনজন? কাণ্ডারী বলে ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার৷’’ তাই আজ ভেদাভেদ করে বাঁচা যাবে না৷ ভাইবোনেরা দয়া করে এক হয়ে নির্বাচনে বাঁচার লড়াই করে বাঁচ৷ রাজ্যনির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়েছে৷ এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একজন মহিলা যা বর্ত্তমান আর অন্য কোন রাজ্যে নেই৷ সেই রাজ্যকে কবজা করতে সেইদলের কর্মী ও নেতাদের ছলবল কৌশলে এক নাগাড়ে ভাঙ্গিয়ে এই পশ্চিমবাঙলায় একটি দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে যাদের একমাত্র লক্ষ্যই হলো বাঙালী ও বাঙলার জনগোষ্ঠীকে ধবংস করে পশ্চিম বাঙলার কৃষ্টি সংসৃকতি ও বাঙালীত্বকে ধবংস করে নেতাজী, রবীন্দ্রনাথ ও কাজী নজরুল ইসলামের বাঙলাকে চিরকালের মতো ধবংস করে হিন্দী  সাম্রাজ্যবাদী ধনীগোষ্ঠীর করতলগত করা৷ তাছাড়া আজও যতটুকু বাঙালীত্ব বজায় আছে সেটাকে চিরকালের মতো ধবংস করা৷ এর একটাই কারণ তা হলো এই সমস্যা সংকূল পশ্চিম বাঙলাই একমাত্র রাজ্য যা সর্বগ্রাসী হিন্দী সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসী মানসিকতার বিরুদ্ধে  প্রতিবাদ মুখর হয়ে সংগ্রাম করে চলেছে৷ কারণ এরা বুঝে নিয়েছে যে বাঙালী জনগোষ্ঠী যতোদিন জাগ্রত থাকবে ততোদিন সারাভারত-এর অন্য রাজ্যগুলির স্বকীয়তা কৃষ্টি সংসৃকতি বজায় থাকবে৷ কারণ সেই মহামতি গোখলের  কথায় বলতে হয় ‘‘আজ বাংলা যা ভাবে কাল ভাত সেটা চিন্তা করে’’ অর্থাৎ নিজসত্ত্বাকে রক্ষায় উদ্ভব হয়৷ তাই সারাপশ্চিম বাংলা ২০২১ এর নির্বাচনে পশ্চিম-এর অর্থাৎ বাঙালী জনগোষ্ঠীর হিন্দু,মুসলমান ও অন্যান্যরা যাঁরা দীর্ঘদিন এই রাজ্যে বাস করছে তাঁরা অর্থাৎ বোটার গণ নরনারী নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঙলা বাঙালীকে সমর্থন জানিয়ে রাজ্যকে রক্ষা করুন৷

অন্যরাজ্যে ১দিনে নির্বাচন হচ্ছে কিন্তু রাজ্যে প্রায় ১মাস ধরে নির্বাচন নির্ঘন্ট ঘোষণা করা হয়েছে৷ কেন তা প্রবীন নাগরিকগণ বুঝতে পারছে না৷ এটা রাজ্যের বোট কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবতো নিয়ন্ত্রণ হয়নি৷ তারই মধ্যে বড়ে বড়ো জমায়েত হচ্ছে সেদিকে তো  নির্বাচন কমিশনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই৷ দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘনঘন এ রাজ্যে আসছেন বোট প্রচারে নির্বাচনের নির্ঘন্ট প্রকাশের আগে থেকেই করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই আর লোক জমায়েত করে প্রচার করে চলেছেন! নির্বাচনটা অনেকেই দেখছেন প্রথম থেকে তাঁরা সকলেই এর ঊর্ধে৷ তাঁরা অনেকেই হতবাক এইসব কাণ্ডদেখে৷ যাঁরা রক্ষক তাঁরাই তো নিজেদের আইনকে মান্যতাই ঠিকমতো দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে না৷

তাছাড়া বড়ো বড়ো নির্বাচনী সভায়তো দেখা যাচ্ছে তাঁরা ব্যষ্টি আক্রমন করছেন ভাষাও অত্যন্ত নিম্নমানের৷ কি করবেন বোটের পর সেসব একটাও কথা শোনা যাচ্ছে না৷ আবার তাঁরা সবাই নাকি এই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনকে স্রেফ ‘খেলা বলেই’ পরিহাস করছেন৷

এ কেমন ধরণের গণতান্ত্রিক প্রহসন! ৭৪বছর পর বর্ত্তমান শাসকগণ কি দেশ শাসনের নামে খেলা দেখাতে বোটে নেমেছেন?

তাইতো সারা দেশের এখন এক করুণ দুর্দ্দশা৷ তাই জনগণ সচেতন হোন ও নিজেদের পবিত্র কর্ত্তব্য সঠিকভাবে সম্পাদন করুণ সজাগ হয়ে৷

কারোরই ধান্দাবাজির ধারে ঘেসবেন না৷  মা বোনেরা এই করুণ দুর্দিনে বঙ্গ জননীর পাশে থেকে তাঁর সম্মান ও মর্য্যাদা রক্ষা করুণ৷