পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনার প্রত্যুত্তর দেবে ঐক্যবদ্ধ বাঙালী

লেখক
প্রাউটিষ্ট ফোরাম

এক নাগাড়ে দীর্ঘ ৭৭ বছর ধরে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রের সরকার দেখে আসছে ভারতের নাগরিকগণ৷ কেমন ধরণের সরকার প্রথমে কংগ্রেস দল আসে দেশকে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভাগ করা ভারতবর্ষের ডানাহীন ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে শাসন করতে দলতন্ত্রের পতাকা হাতে নিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের নাম নিয়ে৷ যেটি সত্যসত্যই গণতন্ত্র নয়৷ কূটনীতিতে পোক্ত বিদেশী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী সরকারের কূটচালে পাওয়া একটি খণ্ড রাষ্ট্রকে মাত্র শাসন করার অধিকার পায় কংগ্রেস! সেই কংগ্রেসের নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীই প্রথম কেন্দ্রের সিবিআইকে হাতিয়ার করে এমন অত্যাচার চালাতে লাগলো তাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ও জনগণ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে৷ জয়প্রকাশ  নারায়ণের  নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয় তাকে দমন করতে গিয়ে অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থা জারীর মাধ্যমে দেশটাকে কারাগারে রূপান্তরিত করে একনায়কতন্ত্র-এর চুড়ান্ত স্বৈরাচারিতার পরিচয় দিল৷ আর সেই কারণে গত ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে হেরে গিয়ে তাঁর পতন হলো এবং জনগণ বুঝিয়ে দিল এখানে স্বেচ্ছাচারিতা চলবে না৷ আর তাঁর জীবনে শেষ পরিণতিটাও অত্যন্ত মর্মান্তিক৷ ভারতের নাগরিকগণ জানিয়ে দিল বোটের মাধ্যমেই যে এখানে সংযত হয়ে ও সংবিধানকে মান্যতা দিয়েই নির্বাচিত সরকারকে চলতে হবে৷ কেন্দ্রে পরবর্ত্তীকালে যাঁরা শাসনে এসেছেন তাঁরা সংযত হয়ে কিছুটা কাজ করেছেন৷ পরে দেখা গেল  দেশে ধীরে ধীরে জাতীয় দল বলতে যা বোঝায় সেটা নেই৷ এবার যাঁরা শাসনে আছেন তাঁরা অধিকাংশই দলছুট দলগুলি৷ কেন্দ্রে বর্তমানে যাঁরা কেন্দ্রের সরকারের এজেন্টদের নিয়ে শাসনের রোলার চালাচ্ছেন তাঁরা ভারতযুক্ত রাষ্ট্রের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি দল যার জন্ম হয়েছে জনতা দল থেকে৷ তাঁরা সংবিধানের মূল আদর্শ ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র সেটা নস্যাৎ করে গত ১০ বছরে  অনেক কিছু  করেছেন যা নাকি প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছে রাজ্যে রাজ্যে তাঁদের ডবল ইঞ্জিন সরকারকে নিয়ে৷ আর কেন্দ্রের সিবিআই ও ইডিকে নিয়ে৷ সংবিধানে বলা আছে কেন্দ্রের তদন্ত বাহিনী করতে আসবে সেটা অন্ততঃ রাজ্য সরকারকে সংবাদ দিয়ে আসতে হয়৷ এটি একটি যুক্তরাষ্ট্রের সৌজন্য ছাড়া কিছু নয়৷ রাজ্যের  একটি মামলাও আছে এ ব্যাপারে৷ যেটি মহামান্য আদালতের বিচারাধীন! রাজ্য সরকার এর শাসন চলে সংবিধানের নির্দেশিত পথে৷ কেন্দ্রের শাসক রাজ্য থেকেই প্রচুর আয় করেন কিন্তু রাজ্যের প্রাপ্য টাকা উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে যে অর্থ দেওয়া আবশ্যিক সেগুলি গত কয়েক বছর নানা অছিলায় আটকে রাখা হয়েছে৷ এই রাজ্য সরকার তো রাজ্যের বোটারদের দ্বারা নির্বাচিত! তা হলে সেটাকে এক তরফা ভাবে বার বার আবেদন ও নিবেদন রাজ্য করার পর আটকে রাখার অর্থের কিছুটা কি দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা উচিত নয় এটা তো সংবিধানকেই অস্বীকার করা!

কেন্দ্রের সরকার মনে করেন যে বিরোধী সরকারগুলো নিছক হেলার ও তাচ্ছিল্যের! কেন্দ্রের উন্নয়ণের চোখ শুধু গো বলয়ের দিকে আর জনসমর্থন না পেয়ে বাঙালীকে ভাতে মারার নিম্নরুচির রাজনীতি করছে৷ পশ্চিম বাঙলার জনগণ মোটেই মাথা নত করবেন না করেননি৷ এই পশ্চিম বাঙলার জনগণ স্বাধীনতা আন্দোলনের সারা ভারতবর্ষের জনগণের অগ্রণী ভূমিকায় থেকে প্রেরণা দান করে গেছেন৷ প্রাণ দান করেছেন সবচেয়ে বেশী তাই সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজ ও ভারতের কেন্দ্রের শাসকগণ ইচ্ছাকৃতভাবে সেই স্বাধীনতার পর থেকেই দেখে আসা হচ্ছে সব বিষয়ে পূর্ণ বাংলাকে বঞ্চিত করা হয়েছে! সবচেয়ে বেশী বঞ্চিত করেছে খোদ  কংগ্রেস সরকার৷ এই চিরবঞ্চিত বাঙলার খণ্ড ও ক্ষুদ্র অংশ বিশেস করে পশ্চিমবাঙলাকে বাঙলার নিজস্ব এলাকা  যেগুলি ইংরেজ অসম, বিহার ও উড়িষ্যায় যুক্ত করে সেই বাঙালী অধ্যুষিত এলাকাগুলি কংগ্রেস দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল স্বাধীনতা লাভের পর সেগুলিকে দেওয়া হবে৷ তার পরিবর্ত্তে যৎ সামান্য যা দেয় সেটি চির অনগ্রসর এলাকা৷  নামে এটি চরম বঞ্চনা ছাড়া কিছুই নয়৷ তাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ বলেছেন---বাঙলার মাটি, বাঙলার জল, বাঙলার বায়ু, বাঙলার ফল, পুণ্য হোক, পুণ্য হোক, পুণ্য হোক হে ভগবান৷ বাঙলার ঘরে যত ভাই-বোন, এক হোক এক হোক এক হোক হে ভগবান৷

আজ আবার রবীন্দ্রনাথের ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে হবে বাঙলার প্রতি বঞ্চনা, অবহেলা দমন পীড়নের প্রতিবাদে৷