রাজনৈতিক নেতাদের সংকীর্ণ মানসিকতা সম্বন্ধে এরাজ্যের জনগণ  সচেতন ও সজাগ থাকুন

লেখক
প্রভাত খাঁ

আজকের প্রতিবেদনটি লিখতে বসে বার বার একটা কথাই আমার মনে উঠে আসছে তা হল আমাদের দেশের ঐক্য নিরাপত্তা  সাংবিধানিক সার্বভৌমিকতা ও আরো অনেক কিছুর  কি কোন মূল্য নেই নামকে ওয়াস্তে গণতান্ত্রিক দেশে জঘন্য নোংরা দলবাজি ব্যতীত এই পশ্চিমবাংলা ভারতে তার অস্তিত্ব কে টিকিয়ে রেখেছে অনেক কষ্ট করে ভয়ংকর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লড়াই করে৷  ভারতকেশরী মহান  নেতা মাননীয়  শ্যামাপ্রসাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্যে পশ্চিম বাংলা আজ ভারতের অন্তর্গত৷ তা না হলে এই বৃহত্তর বাংলার সামান্য ক্ষুদ্রাংশ এই রাজ্যটি সাম্প্রদায়িকতার ঘৃতাহুতিতে কোথায় মিলিয়ে যেত৷ হতভাগ্য সমস্ত হিন্দুদের  বিশেষ করে  বাঙ্গালীদের উদ্বাস্তু হয়ে  জন্মভূমি ছেড়ে  পথের ভিখারী হতে হত ভিনরাজ্যগুলিতে৷  আর তিলোত্তমা কলকাতা হত পূর্বপাকিস্তানের রাজধানী৷  ঈশ্বর সেটা থেকে বাঁচিয়েছেন৷  কিন্তু সমস্যা সংকুল  হতভাগ্য পশ্চিমবাংলার ভাগ্যাকাশে অদ্যাবধি দুর্র্যেগের কালো মেঘ কাটেনি৷

 সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার  কূটনীতির জালে  আটকে পড়ে দেশ নেতারা সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজের ক্রীড়নক হয়ে নিজেদের ভোগ লালসা চরিতার্থ করতে জন্মভূমিকে খন্ড-বিখন্ড করে রক্তাক্ত করে ছাড়ল৷  সেই বিচ্ছিন্নতার আগুনে পশ্চিমবাংলাকে টুকরো টুকরো করতে উঠে পড়ে লাগে কমিউনিষ্ট দল সেই গত প্রায় ১৯৪৮ সাল থেকে দার্জিলিংয়ের বুকে নেপালীদের উষ্কে দিয়ে৷  তারা পৃথক গোর্র্খল্যান্ডের দাবী  জানিয়ে আসে ৷ বামফ্রন্ট বিদায় নেবার পর এই আন্দোলনটাকে কিছুটা প্রশমিত করে নোতুন রাজ্য সরকার৷ কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকার  সেই নেপালীদের নিয়ে  এই  রাজ্যে  এমন নক্কারজনক  অসাংবিধানিক  রাজনীতির পাশাখেলা খেলতে থাকে যা  কর্তব্য নয়৷

যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থায়  বিদেশীরা ভারতে পৃথক রাজ্যের দাবী করতে পারে না৷  এখানে গণতন্ত্রকে ব্যাপকভাবে  পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত সরাসরি নির্র্বচনের মাধ্যমে জনগণের রাজনৈতিক অধিকারকে স্বীকার করা হয়েছে৷ ক্ষুদ্র একটি জেলার তিনটি মহকুমা নিয়ে পৃথক রাজ্য গড়ার ভাবনাটাই একটা বাতুলতা মাত্র-তাও আবার বিদেশী নাগরিকদের দাবী অনুসারে৷ পশ্চিমবাংলার প্রাধান্য বিস্তার করতে  (বিমল গুরুং--যিনি প্রায় তিন মাসের অধিককাল দার্জিলিংয়েতে জঘন্যতম  সহিংস আন্দোলনকে উস্কানী দিতে –বন্ধ্) ডেকে স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত জ্বালিয়ে পুড়িয়ে বাজার হাট বন্ধ করে লক্ষ লক্ষ মানুষের মনে  আতঙ্ক সৃষ্টি করে৷ সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে  অভিযুক্ত হয়েছে৷  একেই বিজেপিরা অবৈধভাবে মদৎ দিচ্ছে পশ্চিমবাংলাকে ধবংস করতে৷ পশ্চিমবাংলার বিজেপি এর রাজ্য সভাপতি  দিলীপ ঘোষ বাহদুরী দেখিয়ে বলেন  (আমি বাপের বেটা বলেই দার্জিলিংয়ে এসেছি)৷

তাঁকে  দার্জিলিঙের অধিবাসীরা  কালো পতাকা দেখিয়ে স্থান ত্যাগের  শ্লোগান দেন৷   বর্ত্তমানে কিছুটা শান্তি এসেছে পাহাড়ে৷ এই শান্তি খতম করে দিতে বিমল গুরুং দার্জিলিং-এর  যথোাপযুক্ত নেতা বলে মন্তব্য করেন৷ নেপালীদের গোর্র্খল্যান্ড দাবীটা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক৷ একে প্রশ্রয় দিচ্ছে বিজেপি প্রকারান্তরে৷

যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার ঘোর বিরোধী কাজ করছে দিলীপ ঘোষ হিন্দী বলয়ের গোঁড়া বিজেপি নেতাদের মদতে৷ এই ধরণের সংবিধান বিরোধী কুকর্মকে পশ্চিম বাংলা জনগণ সহ্য করবে না এটা যেন ঐসব নেতাদের  স্মরণে থাকে৷ পশ্চিম বাংলার কোন একটি দলেরও রাজ্য সভাপতি হয়ে পশ্চিম বাংলার  সর্বনাশ করতে যারা ইন্ধন জোগায়  তাদের সম্বন্ধে পশ্চিমবাংলার জনগণকে  অবশ্যই সচেতন হয়ে এগুতেই হবে৷

 অত্যন্ত দুঃখের কথা হলো এরাজ্যে ধান্দাবাজ দলছুটদের  সংখ্যাটাই বেশি৷  তাই প্রাক্তন তূণমূল নেতা মুকুল রায় কি  বিজেপি দলে যোগ  দিতে দিলীপ ঘোষকে বেষ্টফ্রেন্ড বলে উল্লেখ করেছেন-আজ পশ্চিম বাংলা এইসব মতাদর্শহীণ  দলছুটদের জন্য অত্যন্ত সংকটের মধ্যে অবস্থান করছে না  কি-স্মরণে রাখা দরকার বিজেপি একটি দলছুট পার্টি৷ কারণ জনতা ভেঙ্গেই এর ঘটন৷ ভারত কেশরী শ্যামাপ্রসাদ শেষ পর্যন্ত  এই দলের মূল দল থেকে  সরে যান৷

এরা গোবলয়ের সংকীর্ণ নীতিতেই বেশী আস্থাবান৷  তাই এই দল গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশে জন সমর্থন হারাতে বসেছে, এটাই রাজনৈতিক সমীক্ষা বর্তমানে৷  দ্রুত যে সব ঘটনা ঘটছে তাতে কূটনীতিতে পোক্ত মুকুল নিজেকে হিন্দু বলে ঘোষণা করেছে৷ এছাড়া তাঁর হাতে তো জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস নামক নোতুন দল আছেই৷ পশ্চিমবাংলার তৃণমূল কংগ্রেস মনে হয় অত্যধিক আত্মবিশ্বাসী হয়ে মুকুলকে দল থেকে অনেক আগেই বিদায় দিয়েছে তাতে দলের ক্ষতির সম্ভাবনাটাই বেশি বলেই জনগণের ধারণা৷ ভারতে রাজনৈতিকদলগুলির মধ্যে প্রকৃত আদর্শের দারুন অভাব হেতু এই ধরণের সমস্যা ঘটছে৷ ব্যষ্টিকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দলের ভা৷ন হওয়াটাই স্বাভাবিক৷  এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয় রাষ্ট্রের কারণ রাজনৈতিক দুবৃর্ত্তায়ণটাই প্রকট হয়৷

ভারতের মতো বহুভাষাভাষীর দেশে যে বহুদলীয় সংসদীয় গণতন্ত্র বজায় আছে তাকে সার্থক করে তুলতে প্রথম থেকে যে টুকু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল অতি উৎসাহী রাজনৈতিক দলগুলো সেটা করেনি৷  কিন্তু বিশ্বের অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু সেটা বুঝেছিলেন৷ তাঁকেই ধান্দাবাজরা ষড়যন্ত্র করে কুৎসা রটিয়ে খাটো করার চেষ্টা করেছে৷

এই পরিস্থিতিতে  দেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকগণকে  আরো বেশি  সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে আর  এই ধান্দাবাজ রাজনীতিকরা যাতে কোন সুবিধা না পায়  সেই ব্যবস্থা করতে হবে৷