আজ আমরা সকলেই একটি বড়ো সমস্যায় পড়েছি৷ বিশেষ করে হতভাগ্য বিশাল ভারতযুক্ত রাষ্ট্রের নিম্নবিত্তের গৃহস্থ হিসাবে৷ প্রধান বিষয়টি হলো চরম দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও অধিকাংশ পরিবারে শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা অধিকাংশ এই পরিবারে শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা লেখা পড়া শিখে বেকার হয়ে বসে আছে৷ যদিও কেন্দ্র সরকারের অনেক সংস্থায় লক্ষ লক্ষ পদশূন্য হয়ে পড়ে আছে৷ যেখানে কোন অদৃশ্য কারণে সেই শূন্যপদে লোক নেওয়া হচ্ছে না৷ কেন্দ্রের সরকার যখনই শাসনে এসেছেন তখন স্তোকবাক্য দিয়ে গেছেন সরকার বছরে ২কোটি বেকার সমস্যা দূর করবে না সেটা এক ধরণের নিছক নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মিথ্যা স্তোক বাক্য ছাড়া কিছুই নয়৷ এটা একটা দলতান্ত্রিক সরকারের রাজনৈতিক মিথ্যাচারিতা! তাই এই চরম সংকটে বর্তমান অর্থনৈতিক দুরাবস্থায় মহান দার্শনিক তথা আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী সেই প্রাউট যেটি সামাজিক তথা অর্থনৈতিক দর্শন এর প্রবক্তা প্রভাতরঞ্জন ৩৬০০ডিগ্রি পূর্ণ দর্শন সেটির সম্বন্ধে কিছু আলোচনা করার বাসনা করেই বলি সাধারণতঃ অর্থনীতির দর্শন বলতে আমরা যা অদ্যাবধি বুঝেছি সেটি মূলতঃ বস্তুতান্ত্রিক জগতে স্থূল বস্তু যেগুলির মানুষের শরীর রক্ষা করার অতীব প্রয়োজন সেই বিষয়ের সম্বন্ধে আলোচনা৷ বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উৎপাদন, বন্টন বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা, ব্যবসায় বাণিজ্য সম্বন্ধে ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসাবে আলোচনা৷ তাছাড়া অর্থনীতিতে স্বাভাবিকভাবেই এসে যায় শাসক ও শাসিতদের বক্তব্য ও অধিকার বিষয়ে যেটি বিশেষ স্থান করে নেয় রাজনীতি সংক্রান্ত বিষয়গুলি৷ মানুষের তিনটি দিক আছে এক শরীর স্থূল অবস্থায়, মানসিক স্তরে মন আছে যেহেতু মানুষ মননশীল উন্নতপ্রাণী আর আত্মা আছে আধ্যাত্মিক সূক্ষ্মস্তরে৷ মানুষ যেহেতু সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম জীব তাই তাকেই এই সারা পৃথিবীতে জীবজন্তু গাছপালা সকলের ভালোমন্দের দিক দেখতে হয়৷ ধীরে ধীরে এই বিশ্বচরাচরের রহস্যটাই মননশীল মানুষই উপলব্ধি করে ও তার দিকে নজর দিতে হয় যাতে এই সুন্দর বসুন্ধরার সবাই নিরাপদে বেঁচে থাকতে পারে৷ আর সকলেই যে সকলের কাজে বড়ই প্রয়োজন সেই মহান অনুভূত উপলব্ধিকে জগৎ কল্যাণের কাজে লাগিয়ে সার্থক সভ্য মানব সমাজ গড়ে সৃষ্টির সেই মহান স্রষ্টা যিনি পরমাত্মা যিনি সেই একাধারে মহান স্রষ্টার সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হয়৷ এটাই কল্যাণময়ের নির্দেশ৷
এই মহান নির্দেশ পালন করতে হ লে তো মানুষের তৈরী যে সমাজগুলি সেইগুলিকে সার্থক করে তুলতে হবে৷ সমাজ তখনই বাঁচবে ও সার্থক হবে যখন সমাজের সকল পরিবারগুলিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে৷ মিথ্যা কুসংস্কারের অন্ধস্তবক না হয়ে সকলে আর্থিক, সামাজিক ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বনির্ভরশীল হয়ে বাঁচতে পারে সে দিকে, সরকার ও জনগণকে নজর দিতে হবে নৈতিকতা, সেবা ও মানবিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করে এক সঙ্গে চলতে হবে৷ একই পৃথিবী, একই চন্দ্র,সূর্য একই বায়ু ও জল আমাদের সকলকেই সেবা দিয়ে চলেছে৷ তাহলে এতো সকল দিকে শোষন কেন? কেন সমবায়ের আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজ এগুবে না? কারণ টা হলো শাসকগণ জাতপাতকেই মূলধন করে সমাজে ধনতান্ত্রিক ও জড়বাদী মানসিকতা প্রাধান্য করেই চলছে৷ নামে গণতন্ত্র যেটা হলো দলতন্ত্রের দলাদলি৷ সমাজতন্ত্রেই সমাজ বাঁচে সেটার কোন লক্ষণই নেই৷ তাই পৃথিবীর সকল মানুষ, জীবজন্তু গাছপালা যাতে সেই মহান স্রষ্টার সন্তান হিসাবে বাঁচাতে পারে সেটাই প্রাউট চায় প্রতিটি মানুষের যাতে জীবনে তিনক্ষেত্রেই শারীরিক মানসিক ও আত্মীক দিকে সার্বিক বিকাশ ঘটে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ সবাই যেন সব কিছুর উর্দ্বে উঠে এক মানবসমাজ গড়ে তুলতে পারে৷ কেউ যেন বঞ্চিত না হয়৷ মানুষকে শারীরিক উন্নতির জন্য যেমন সুসম খাদ্য খেতে হবে ঠিক তেমনই মানসিক উৎকর্ষের জন্য মানসিক খাদ্য সেই শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে৷ আত্মিক বিকাশের জন্যে আধ্যাত্মিক অনুশীলনের সুযোগ করে দিতে হবে৷
জাগতিক সম্পদের ও সর্বাধিক উপযোগ গ্রহণ করে প্রতিটি মানুষের সুষ্ঠু বেঁচে থাকার সুব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রাউটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব৷ তাই সার্বিক শোষণমুক্ত সুসন্নিবদ্ধ মানব সমাজ গড়ার আন্দোলনে নামতেই হবে--- এটাই হোক ২০২৪ এর নববর্ষের অঙ্গীকার৷
- Log in to post comments