যে বাঙালী স্বাধীনতায় বেশী বলিদান করল তারাই আজ বিদেশী!

লেখক
এইচ. এন. মাহাত

ভারতে বাঙালী আজ ভারত সরকারের (বিজেপি) কাছে বিদেশী৷ দেশভাগের বলি ও ভারতের স্বাধীনতায় যে জাতীয়তাবোধে বাঙলা তথা বাঙালীরা রক্ত দিল আজ তাদেরই রাষ্ট্রের নাগরিক হবার অধিকার নেই৷ অথচ ভারতের স্বাধীনতায় যারা ইংরেজের তাঁবেদারি করেছে যেমন অসম, গুজরাট ইত্যাদি তারাই আজ ভারতের স্বদেশী৷ অসমীয়ারা ব্রহ্মদেশ থেকে এসেছে, গুজরাটীদেরও পূর্বপুরুষ ভারতের মাটির মানুষ নয়৷ বাঙালীরা কোনদিনই খণ্ডিত ভারতবর্ষ চায়নি৷ যারা দেশকে খণ্ড করে শাসন ও শোষণ করছে তারা জানত বাঙালীকে ঐক্যবদ্ধ রাখলে ও বৃহৎ বাঙলা একটি রাজ্য থাকলে দিল্লীর গদি বাঙালী নিয়ন্ত্রণ করবে৷ তাই দিল্লীর শাসক ও শোষকরা কখনই চাননি বাঙলা ঐক্যবদ্ধ থাক৷

ভারতবর্ষ ভাগ হয়েছিল দ্বিজাতিতত্ত্বের ওপর৷ তাতে মুসলমানরাও কোনদিন বাঙলা ভাগ চায়নি৷ গান্ধী, নেহেরু, বল্লভভাই পটেলদের কূটবুদ্ধি ও হীন চক্রান্তে

দেশ ভাগ হয়েছে, বাঙলা ভাগ হয়েছে৷ অথচ এরাই আজ দেশের সুমহান নাগরিক! পাকিস্তানের মুসলিমরা চেয়েছিল প---পঞ্জাব, আ---আফগানিস্তান, ক---কশ্মীর, ই---ইন্দাজভ্যালি আর স্তান---বেলুচিস্তান৷ এই পাকিস্তানের কোথাও বাঙলার উল্লেখ নেই৷

নেহেরু, বল্লভরা মুসলমানদের নজরানা বা উপঢৌকন হিসেবে বাঙলাকে ভাগ করে দিয়েছে৷ আর সেই বাঙলা ভাগের বলি হ’ল লক্ষ লক্ষ বাঙালী৷ যাদের হীন ষড়যন্ত্রের শিকার হ’ল বাঙালী তারাই আজ আবার বাঙালীকে বিদেশী চিহ্ণিত করছে৷

বাঙলায় যদি এন আর সি করতেই হয় তবে যারা বাঙলার ভাষা, সংসৃকতির সম্মান নষ্ট করছে, বাঙলার অর্থনীতিকে পঙ্গু করছে সেই অবাঙালীরা প্রত্যেক দিন কোটি কোটি টাকা বাঙলায় আয় করছে আর বাঙলার বাইরে পাচার করছে, এন. আর. সি. করে এদেরই বিদেশী চিহ্ণিত করা উচিত৷ ভারতে একটা বাঙালীও বিদেশী নয়৷

আন্দামান থেকে আমদানিকৃত এক নেতা বলছেন দু’কোটি বাঙালী পশ্চিম বাঙলায় বিদেশী৷ সেই নেতা ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা কিন্তু সাবধান৷ রথের চাকা কাকে কোথায় রাখে তা এক মুহূর্ত্ত আগেও বোঝা যাবে না৷ ইতিহাস কাউকেই ছেড়ে কথা বলে না৷ যে বেইমানরা বাঙালীকে বিদেশী বানাচ্ছে তারাও তৈরী থাকুক৷ অন্য এক ইতিহাস তাদের জন্যেও তৈরী হচ্ছে৷