আনন্দমার্গের সমাজশাস্ত্র (আনন্দ মার্গের চর্যাচর্য) কেউ যদি নিষ্ঠা সহকারে ভালো করে অনুসরণ করে তবে ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি দেওয়া যায় যে সে আর মানুষ থাকবে না, সে দেবতায় পরিণত হবে৷ এই চর্যাচর্য মানুষকে শিক্ষা দেয় মানুষের কি করণীয় ও কি অকরণীয়৷ এককথায় বলতে গেলে আনন্দমার্গ সবসময় মানুষকে নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে আসছে৷ এই কথা শুণে হয়ত কেউ বলতে পারেন শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর আগে কি নীতিবাদ ছিল না? ছিল, নিশ্চয় ছিল৷ তবে বর্তমান সমাজে নৈতিকতা, অধর্ম, কুসংস্কারে ভরে গেছে৷ এক কথায় বলা যায় দশ মস্তক বিশিষ্ট বারণ পৃথিবীকে ধবংস করে দিচ্ছে৷ এমনই এক যুগ সন্ধিক্ষণে রামের শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী আবির্ভাব হয়েছে ‘রাবণ’কে (সকল সমস্যার সমাধান করতে) বধ করার জন্যে৷ পরামারাধ্য গুরুদেব শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী আমাদের কেবল নীতিবাদী হতে বলেননি, তিনি বলেছেন আধ্যাত্মিক নীতিবাদী হতে৷ কারণ সাধারণ নৈতিকতা নড়বড় থাকে, যারা সাধারণ নীতিবাদী তারা এক লক্ষ, না হলে দশ লক্ষ, তা না হলে এক কোটি বা তার থেকে একটু বেশীতে বিক্রি হয়ে যেতে পারে, আরও অনেক কিছু আছে যার দ্বারা নৈতিকতা নাও থাকতে পারে কিন্তু আধ্যাত্মিক নীতিবাদীর প্রধান সম্পদ হচ্ছে পরমপুরুষ সুতরাং তার কাছে (ভক্তের কাছে) পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ এনে দিলেও সে তাতে মোটেও আসক্ত হয় না কারণ ভক্তের মতে পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ মিলিয়ে দিলেও তার সেই পরমপুরুষের সমান করা যাবে না৷ যদি আধ্যাত্মিক নীতিবাদী বা ভক্তের সম্মুখে মৃত্যু আসে তখন সে বলবে এই পাঞ্চভৌতিক শরীর এক দিন ছিল না, এখন আছে ও ভবিষ্যতে থাকবে না তাই এই মৃত্যুকে ভয় কিসের৷ এই নৈতিকতা নিয়ে অনেকের প্রশ্ণ থাকে যে নৈতিকতা দিয়ে কি হবে কারণ---আজ অন্য কারুর ভালো করলে সে বিপরীতে খারাপ করে ও যারা নীতিবাদী তারা জীবনে অর্থসম্পদ গড়তে পারে না কিন্তু আধ্যাত্মিক নীতিবাদীরা অর্থসম্পদের কথা ভাবে না কারণ তার কাছে তার পরম সম্পদ পরমপুরুষ রয়েছেন, তার আর কি চাই আর এই যে বলা হচ্ছে অন্যকে উপকার করলে সে পরিবর্তে বিশ্বাস ঘাতকতা করে এতে ভক্তের বক্তব্য হল আমি খুশি করব আমার প্রাণপ্রিয় পরমপিতাকে, মানুষকে নয়৷ কে কি করল, কার কতটুকু সম্পদ আছে তাতে আমার কি, আমার মহামূল্যবান সম্পদ আমার কাছেই রয়েছে৷ আরেকটি কথা শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী বলেছিলেন যে যে আমার আদর্শ নিষ্ঠা সহকারে পালন করে বা করার চেষ্টা করবে তাকে আমি সবসময় রক্ষা করে চলি ও আমার সেই ভক্তের ক্ষতি করার সাধ্য স্বয়ং যমেরও নেই৷ হ্যাঁ এটা একশো শতাংশ সত্য৷ দেখা যায় সমগ্র বিশ্বের আনন্দমার্গীদের (খুব গরীব হলেও) কি করে যে নূ্যনতম চাহিদার পূর্তি হয় সেটা তারাও জানেন না আসলে এটা তাঁরই (পরমপুরুষের) কৃপা তবে তিনি কেবল আনন্দমার্গীদেরই ভালোবাসেন তা কিন্তু নয়, তিনি সবার৷ কেউ তাঁকে ভালোবাসুক আর না বাসুক তিনি কাউকে ঘৃণা করেন না, ঘৃণা করতেই পারেন না আর যে তাঁকে মনেপ্রাণে ভালোবাসে তার জন্যে তো তিনিই সবসময় আছেন৷
- Log in to post comments