March 2021

কীর্ত্তন ও তত্ত্বসভা

করলা গ্রাম মা সারদাময়ী আশ্রমে গত ১২ই মার্চ ৩ ঘন্টা অখণ্ড ‘বাবা নাম কেবলম্‌’ কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ কীর্ত্তন শেষে একটি তত্ত্বসভার আয়োজন করা হয়৷ এই সভায় আনন্দমার্গ দর্শন ও ধর্মের ওপর আলোচনা করেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত ও অনন্ত মালাকার৷ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিলেন ‘রবি গরাই’৷

গত১৩ই মার্চ কলেশ্বর লোকপাড়ায় ৩ঘন্টা অখণ্ড কীর্ত্তন, কীর্ত্তন পরিক্রমা ও তত্ত্বসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ এখানে বক্তব্য রাখেন আচার্য মিতাক্ষরানন্দ অবধূত, আচার্য দেবোপমানন্দ অবধূত, আচার্য প্রজ্ঞাধীশানন্দ অবধূত, নিতাই মণ্ডল কেশব সিনহা প্রমুখ৷

মার্গীয় বিধিতে নামকরণ

উত্তর ২৪পরগণা বামুনগাছি নিবাসী বিশিষ্ট আনন্দমার্গী শ্রী কমল হালদারের কন্যা প্রমা মিত্রা সরকার (হালদার) ও জামাতা কল্যাণ সরকারের নবজাতক শিশুর নামকরণ ও প্রথম মুখে ভাত অনুষ্ঠান ‘আনন্দমার্গে চর্যাচর্য’ বিধিমতে সম্পন্ন হয় গত ১৬ই মার্চ আনন্দমার্গের তিলজলা কেন্দ্রীয় আশ্রমে৷ এই উপলক্ষ্যে  স্থানীয় মার্গী ভাই বোন সন্ন্যাসী দাদা- দিদি ও শ্রী কমল হালদারের আত্মীয় পরিজন কেন্দ্রীয় আশ্রমে জাগৃতিতে সমবেত হয়েছিলেন৷ অনুষ্ঠানের সূচনায় প্রভাত সঙ্গীত ‘‘বাবা নাম কেবলম্‌’’ মহামন্ত্র কীর্ত্তন ও মিলিত ঈশ্বর প্রণিধানের পর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়৷ অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করেন আনন্দমার্গের অভিজ্ঞ ও প্রবীণ সন্ন্যাসী আচার্য সর্বে

ইমাদপুরে সেমিনার

গত ৫,৬ ও৭ই মার্চ বীরভূম জেলার ইমাদপুরে আনন্দমার্গ স্কুলে  একটি আলোচনা সভাব  আয়োজন করা হয়েছিল৷  ডিট স্তরীয় এই আলোচনা  সভায় বীরভূম জেলার  বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ  সমবেত হয়েছিলেন৷ প্রশিক্ষক ছিলেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত৷ তিনি মার্গের আধ্যাত্মিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন৷ এই উপলক্ষ্যে ৬ই মার্চ একটি প্রকাশ্য সভার অনুষ্ঠিত হয়৷ এই সভায় আনন্দমার্গ দর্শনের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত, আচার্য দেবোপমানন্দ অবধূত, শ্রী বংশীধর দাশ, মানবেন্দ্রনাথ ঘোষাল প্রমুখ৷

গনপুরে অখণ্ড কীর্ত্তন

গত ২৮শে ফেব্রুয়ারী বীরভূম জেলার গনপুরে তিনঘন্টা অখণ্ড ‘বাবা নাম কেবলম্‌’ মহানাম মন্ত্র কীর্ত্তন অনুষ্ঠিত হয়৷ বীরভূম জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মার্গীসহ বহু সাধারণ মানুষ ‘বাবা নাম কেবলম্‌’ সুর মুর্চ্ছনায় আকৃষ্ট হয়ে কীর্ত্তন প্রাঙ্গনে উপস্থিত হন৷ কীর্ত্তন শেষে মিলিত সাধনার পর ‘বাবা নাম কেবলম্‌’ কীর্ত্তন মাহাত্ম্য ও আনন্দমার্গে দর্শন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন আচার্য কর্মেশ্বরানন্দ অবধূত, সোমনাথ দত্ত, চিত্ত দত্ত প্রমুখ৷ সবশেষে প্রায় ২০০০ জনকে মধ্যাহ্ণ ভোজে আপ্যায়িত করা হয়৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটি সার্থক করে তোলেন বিশিষ্টমার্গী ডাঃ হরিকিঙ্কর চৌধুরী ও গনপুর ইয়ূনিটের সকল সদস্যবৃন্দ৷

সরাইকেলায় স্বাস্থ্য শিবির

ঝাড়খণ্ডের গত ১৪ই মার্চ সরাইকেলা রংপুরের আনন্দমার্গ স্থানীয় ইয়ূনিটের পক্ষ থেকে একটি  চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল৷ উক্ত শিবিরে প্রায় শতাধিক মানুষের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় অভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ও প্রয়োজনীয় ঔষধও প্রদান করা হয়৷ এছাড়া গ্রামবাসীদের আলোচনা সভার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা হয়৷ শিবিরটি সফল করতে স্থানীয় ইয়ূনিটের মার্গী ভাইবোনদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন আচার্য চিরাগতানন্দ অবধূত৷

সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন

গত ২৭শে ফেব্রুয়ারী কোচবিহার জেলায়  খাগড়াবাড়ি আনন্দমার্গ স্কুলে একটি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হয়৷ স্থানীয় করুণাময়ী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন৷ এছাড়া এলাকা বাসীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে একটি চিকিৎসা শিবিরেও আয়োজন করা হয়েছিল৷ স্কুল ভবনে স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র আভা সেবা সদনেরও উদ্বোধন হয় ওইদিন৷ চিকিৎসাকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট আইনজীবী সৌগত চক্রবর্ত্তী ও অধ্যাপিকা ডঃ সুনন্দিতা ভৌমিক৷

যোগ ও স্বাস্থ্য

যোগাচার্য্য

স্বাস্থ্য বলতে সাধারণতঃ মানুষের ধারণা শরীরটা সুস্থ থাকা৷ না, শুধু শরীর সুস্থ থাকলেই তাকে স্বাস্থ্য বলা হয় না৷ ধরা যাক, একজন শারীরিক ভাবে সুস্থ কিন্তু প্রচণ্ড ধরণের মানসিক বিষাদে ভুগছে৷ তাকে কী করে সুস্থ বলতে পারি কিছুদিন পর মানসিক বিষাদ থেকে তার পরিপাক ক্রিয়ায় ত্রুটি দেখা দেবে, ও তারপর নানান দৈহিক রোগেরও শিকার হবে৷ তাই বলছি, কেবল শারীরিক সুস্থতাকে স্বাস্থ্য বলে না৷

হাঁপানীর কষ্ট নিরাময়ে

আর্দ্রক বা আদা কফের শত্রু–কফ বিনাশক৷ তাই আয়ুর্বেদে আদার একটি নাম কফারি৷ কফাশ্রিত বায়ুর প্রভাবে শ্বাসক্রিয়ার কষ্ট বা শ্বাসরোগ বা হাঁপানির সৃষ্টি হয়, তার জন্যে আদার রস, গব্য ঘৃত ও দুধ সহযোগে যে ঔষধ প্রস্তুত করা হয় তা খুবই কার্যকরী৷ পাঁচ তোলা গব্যঘৃত কাঁসার বাটিতে ফুটিয়ে নিতে হয়৷ অন্য একটি পাত্রে আড়াই তোলা আদার রস গরম করে ঘিয়ের পাত্রে ঢ়েলে দিয়ে কাঁসার থালা চাপা দিতে হয়৷ তা থেকে দু’তোলা ঘি আধ পোয়া গরম দুধের সঙ্গে রোগ যন্ত্রণার সময় একটানা পনর দিন ব্যবহার করলে রোগ সম্পূর্ণ সেরে যেতে পারে৷

ৰামুনদিদির বিপত্তি

আমার ছোটবেলায় শ্যামবাজারে আমার মামার বাড়িতে এক রাঁধুনী ছিলেন৷ রান্নায় তাঁর হাত ছিল ৰেশ পাকা–যেন একেবারে সৈরিন্ধ্রী৷ আমরা তাঁকে ৰামুনদিদি বলে ডাকতুম৷ নুন–ঝাল–মশলার হিসেব ছিল তাঁর চমৎকার৷ একবার বাড়িতে কিছু লোককে নেমন্তন্ন করা হয়েছিল৷ খাবার পর অতিথিরা মুক্তকণ্ঠে ৰামুন–দিদির  প্রশংসা করতে লাগলেন৷ সবাই বললেন–যা রেঁধেছ ৰামুন–দিদি, অমৃত, অমৃত ত্রিভুবনে এর তুলনা মেলা ভার

নিজের প্রশংসা শুনে আহ্লাদে আটখানা হয়ে ৰামুনদিদি উচ্ছ্বসিত  ভাষায় বলে উঠলেন– আমি বালো পাক করুম না তো করৰো ক্যাডা?

জানতি পার নাই

দ্বিতীয় ধরনের কপটাচরণও আমরা খুব ৰেশী দেখে থাকি৷ এই ধরনের কপটাচরণের একটা গল্প মনে পড়ল৷ একবার এক বেতো রোগী চিকিৎসার জন্যে এক হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে এসেছে৷ ডাক্তার তার মুখ থেকে রোগবিবরণী শোনার পর তাকে জিজ্ঞেস করলেন–‘‘প্যাটের মদ্দি যন্ত্রণা অয়?’’

রোগী বললে–কই না তো ডাক্তারবাবু, আমার পেটের মধ্যে তো কোনো যন্ত্রণা হয় না৷ ডাক্তার দাৰড়ানি দিয়ে বললেন–অয়, অয়, জান্তি দ্ব্ত্রুব্ধন্গ্গ পারো না৷

তারপর ডাক্তার আবার শুধোলেন–দাঁতের মাড়িতে ব্যাদনা অয়?

রোগী–কই না তো ডাক্তারবাবু, আমার দাঁতের মাড়িতে কোনো বেদনা তো হয় না৷