অসমে বাঙালীকে ভাতে মারার ষড়যন্ত্র

লেখক
পত্রিকা প্রিতিনিধি

মার নয়, দাঙ্গা নয়, ভাতে-কাপড়ে মরার জন্য প্রস্তুত থাকুক বাঙালি, আর তা না হলে অন্যথা পালিয়ে যাক৷আমরা বুঝেও বুঝতে চাইছি না, এর পরিণতি ভয়ংকর৷ এবার স্বেচ্ছায় শরণার্থী হয়ে আবার পালাবার সময় আসছে৷ বাঙালি হিন্দু বলে নিস্তার হবে বলে আমার মনে হয়না৷

আসুর আন্দোলন ছিল রাস্তায় নেমে, উগ্র, বর্বর, জঘন্য৷ তারা আইন নিজেদের মতো করে চালিত করতো৷ আমজনতা ও প্রশাসনের পূর্ব সমর্থন ছিল৷ আক্রমণকারীরা ও এক শ্রেণির অসমিয়া বুদ্ধিজীবী প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন৷

কিন্তু এবার তাদের খেলা অতিসূক্ষ্ম কৌশলে চলছে৷ কোনো বাহ্যিক কার্যকলাপ নেই৷ ঝান্ডাবাজি, মশাল মিছিল, মারামারি-দাঙ্গা ইত্যাদি কিছুই নেই৷ হাতে আছে অস্ত্র --- শর্মা কমিটি রিপোর্ট, যা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত করার ক্ষমতা সরকারের আছে, আর দর-কষাকষির জন্য আছে প্রহরীর আসু৷ এই তিনে মিলে হয়েছে এক৷ এখন তারা নীরবে, নিঃশব্দে একে একে সব কাগজে-কলমে আইনগত রূপ দেবে, যেখানে আদালত, মামলাকিছুই করতে পারবে না৷ পুরো সরকারি যন্ত্রকে ‘গুড বুক’-এ নিয়ে তারা কৌশলে সব কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷

বিগত দিনের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা এবার নিশ্চিত খেলা খেলছে, যার নেতৃত্বে স্বয়ং ‘মামা’৷ তাই বাঙালি কিছুই বুঝতে পারছে না৷ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবে সব শেষ, আর কিছুই করার নেই৷

আবার বাটি-কম্বল নিয়ে শরণার্থী হয়ে অন্য কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না৷ বরাকের বাঙালি কণ্ঠাশা হয়ে থাকবে৷ পৃথকীকরণের আওয়াজ উঠবে, কিন্তু আলাদা হয়েও লাভ কতটা হবে, বলা কঠিন৷ গোটা রাষ্ট্র যখন বিরুদ্ধে, তখন উত্তরণের পথ খুঁজে পাওয়া মুশকিল, আর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাওয়ার প্রশ্ণই ওঠে না৷ তাই ভারতে বাঙালীর শেষ ভরসা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আশ্বাসবাণী---‘‘প্রচণ্ড মার খেয়েও বাঙালী মারের ওপর মাথা তুলে দাঁড়াবে৷’’