বাংলার গৌরব - রাধা গোবিন্দ কর (আর.জি.কর)

লেখক
প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

না, সম্প্রতি আর.জি.কর হাসপাতালের জঘন্য নারকীয় ঘটনা এ নিবন্ধের আলোচ্য বিষয় নয়৷ আর.জি.কর হাসপাতালের যিনি প্রতিষ্ঠাতা আর.জি.কর অর্থাৎ ডাক্তার রাধা গোবিন্দ কর---তাঁকে নিয়েই এখানে আজ বিস্তর আলোচনা করবো৷

রাধা গোবিন্দের জন্ম ২৩শে আগষ্ট,১৮৫২ সালে হাওড়া জেলার সাঁতরাগাছিতে৷ পিতা দুর্র্গদাস কর৷ চিকিৎসা শাস্ত্র পড়া শেষ করে ১৮৮৩ খ্রীষ্টাব্দে তিনি ইয়ূরোপ যাত্রা করেন৷ ১৮৮৭ খ্রীষ্টাব্দে এডিন ধরায় চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রী লাভ করেন৷

১৮৭৩ খ্রীষ্টাব্দে ২৯শে মার্চ মেয়ো হাসপাতালের সাহায্যার্থে টাউন হলে ধর্মদাস বাবুর দল নীলদর্পন নাটক মঞ্চস্থ করেন৷ নাটকে উড সাহেবের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন গিরিশচন্দ্র ঘোষ আর সৈরিন্ধীর চরিত্রে অভিনয় করেন ডাঃ রাধা গোবিন্দ কর৷ ১৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে এই রাধাগোবিন্দ করই ক্যালকাটা স্কুল অব মেডিসিন নামে চিকিৎসাবিদ্যায় প্রশিক্ষণ দেবার জন্য একটি শিক্ষায়তন প্রতিষ্ঠা করেন৷ ১৭বছর স্কুলটি ভাড়া বাড়িতে থাকার পর ১৯০৩ খ্রীষ্টাব্দে স্কুলটিকে অ্যালবার্ট ভিক্টর হসপিটালে স্থানান্তরিত করা হয়৷ ওই বছর আর.জি. কর ঐ হাসপাতালের অবৈতনিক সম্পাদক হিসাবে সাধারণের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে এক আবেদন করেছিলেন৷ সংক্রামক ব্যাধিগ্রস্ত রোগীদের জন্য ১২টি শয্যার একটি ওয়ার্ড খেলার জন্য তিনি সাহায্যপ্রার্থী হয়েছিলেন৷ ১৯০৩ খ্রীষ্টাব্দেই আর.জি.করের স্কুলের সঙ্গে কলেজ অব ফিজিসিয়ানস্‌ এ্যাণ্ড সারজেনস মিশে গিয়েছিল৷ ১৯১৬ খ্রীষ্টাব্দের ৫ই জুলাই তৎকালীন বাংলার গভর্নর লর্ড কার মাইকেল নতুন হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন৷ তখন হাসপাতালটির নামকরণ করা হয় ‘কার মাইকেল মেডিকেল কলেজ’৷ পরে ১৯৪৮ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসে এই নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ হয় আর.জি.কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল৷ তাঁর রচিত কয়েকটি উল্লেখ্যযোগ্য গ্রন্থ---ধাত্রীসহায়, অ্যানটমি, কর-সংহিতা, সংক্ষিপ্ত ভৈষজ্য তত্ত্ব, রোগীপরিচর্যা, নূতন ভৈষজ্যতত্ত্বে, প্লেগ, স্ত্রী রোগ চিকিৎসা প্রভৃতি৷