চাল ঃ যা চেলে পাওয়া যায় (চালিয়া) তাকে ৰাংলায় আমরা ‘চাল’ ৰলি৷ চাল যে কেবল ধানেরই হয় তা নয়৷ ধনেকে টুকরো করে কুলোতে চেলে যা পাই তাকে আমরা ‘ধনের চাল’ ৰলি৷
যাতে করে চালা হয় অর্থাৎ চাল তৈরী করা হয় তা-ই ‘চালুনি’৷ আজকাল ৰাঙলার মানুষ গমের আটা খাচ্ছে৷ তাই চালুনি চেলে চালের ৰদলে চোখলা পাচ্ছে৷ তাই ‘চাল’, ‘চালুনি’ দুই-ই তাদের অর্থ হাহাতে বসেছে৷ সংস্কৃত ‘চল্’ ধাতুর উত্তর ণিজন্তে ‘অনট্’ প্রত্যয় করে ‘স্ত্রিয়াম্ ঈপ্’ করে ‘চালনী’ শব্দ নিষ্পন হতে পারে৷ ‘চালুনি’ এই ‘চালনী’ শব্দের বিকৃত রূপ হিসেৰে ধরা যেতে পারে৷ তাই ৰাংলায় চালুনি/চালুনী দু’টি ৰানানই চলতে পারে৷
চর ঃ চর ধাতুর অর্থ খেতে খেতে চলা৷ গোরু খেতে খেতে চলে৷ তাই আমরা বলি ‘‘গোরু চরছে’’৷ কিন্তু ‘মানুষ চলছে’৷ তোমরা যদি কখনো প্রকাশ্যে বা লুকিয়ে চানাচুর-ৰাদাম খেতে খেতে চল সেই অবস্থায় তোমরাও কিন্তু চরছ, লোকে জানুক বা না জানুক৷ সভ্যতার আদিযুগে মানুষের আজকালকার মত সকালের জলখাবার দুপুরের খাবার বিকেলের জলখাবার ও রাত্রির খাবার কোনও নির্দিষ্ট সময় ছিল না৷ ভোজ্য খাবারের কোনও নিশ্চিততাও ছিল না৷ তাই অনেক সময় তারা রাস্তায় খাদ্য সংগ্রহ করতে পারলে চলতে চলতেও খেত৷ তাই আজকের মানুষের তুলনায় সেকালের মানুষ বেশী চরত৷ সম্ভবতঃ সেই জন্যেই বেদে ‘চরৈবেতি’, ‘চরৈবেতি’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে৷ গোরু প্রায় সবসময় খেতে খেতে চলে৷ তাই ‘চর্’ ধাতু+ ‘ড’ প্রত্যয় করে যে ‘চ’ শব্দটি পাই ‘গোরু’ অর্থে সেই ‘চ’ শব্দটি চলে৷
---শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের ‘লঘুনিরুক্ত’ থেকে